Image description

কলামিস্ট ও সাংবাদিক আনিস আলমগীর বলেছেন, ড. ইউনূস এখন পর্যন্ত যত সব ভ্রমণে যাচ্ছেন, সব রাষ্ট্রের টাকাতেই যাচ্ছেন। ভ্রমণবিলাসে আছেন তিনি। ব্রিটিশ চ্যারিটি পুরস্কার আনতে এত বড় লটবহর নিয়ে তাঁর যাওয়ার কেন প্রয়োজন দেখা দিয়েছিল, আমরা জানি না। এগুলো নিয়ে কথা বলাটা এখন খুবই রিস্কি।

কারণ তার অবিবেচক কিছু টোকাই সমর্থক সবাইকে বলব না, কিছু টোকাই- আবার এত অন্ধ আচরণ করছে, যে কাউকে স্বৈরাচারের দোসর ট্যাগ লাগিয়ে দিচ্ছে। এটা হাসিনার আমল থেকেও বড় ভয়াবহ হয়ে গেছে।

বুধবার রাতে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে এসব কথা বলেন তিনি।

আনিস আলমগীর বলেন, ড. ইউনূস ২০২৬ সালের এপ্রিলে জাতীয় সংসদে নির্বাচনের কথা বলেছে।

আমরা এর মধ্যে সবাই জেনে গেছি এই কথাটা। কিন্তু আমাদের আশঙ্কা যাচ্ছে না। নির্বাচনের সময় নিয়ে যে অনিশ্চয়তা, সেটা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে। এটা ডিসেম্বরে হবে, না এপ্রিলে- তা স্পষ্ট নয় এখনো।

এ অনিশ্চয়তার মধ্যে আগামী শুক্রবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে দেখা করবেন। আপনারা জানেন যে তারেক রহমান লন্ডনে আছেন দীর্ঘদিন থেকে। তো সরকার এবং বিএনপির তরফ থেকে এটা জানানো হয়েছে যে ব্রিটিশ রাজার একটি চ্যারিটি পুরস্কার নিতে ড. ইউনূস লন্ডন সফর করছেন। ৯ জুন তিনি দেশ ছেড়ে গিয়েছেন এবং সেখানে ১৩ তারিখ পর্যন্ত চার দিন থাকবেন। ঢাকা থেকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে প্রচার করা হয়েছিল।

কিন্তু এখন আমরা শুনতে পাচ্ছি যে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তাকে সাক্ষাৎ দিচ্ছেন না এবং ড. ইউনূসের প্রেস টিম বলছে যে তিনি (ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী) কানাডায় আছেন। অথচ তাকে দেখা যাচ্ছে যে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বক্তব্য দিচ্ছেন। এত বড় একজন সেলিব্রিটি ড. ইউনূস । তার জন্য এ ধরনের প্রচার করে মিটিং না হওয়াটা লজ্জাজনক বটে। এখন তিনি যেহেতু সরকারপ্রধান আছেন তাহলে সেটা আমাদের জন্যও লজ্জার বিষয়। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত এই সাক্ষাৎ হয় কি না। এর মধ্যে আপনারা জানেন, ড. ইউনূস এই গত ১০ মাসে এই সফরটাসহ ১১-১২টি বিদেশ সফরে গেছেন। সবগুলো সরকারি পয়সায়। এর মধ্যে একমাত্র চীন সম্পর্ক ছিল দ্বিপক্ষীয়।

তিনি বলেন, নির্বাচনে যে সময়সূচি দিয়েছিলেন তা তারেক রহমানের পছন্দ হয়নি। তিনি চেয়েছিলেন যে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হোক। শুধু তাই নয়, ইউনূস সভ্যতার মাত্রা ছাড়া বক্তব্য দিয়েছেন- এমন অভিযোগও করা হয়েছিল বিএনপির তরফ থেকে যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছিল তাতে। এর মধ্যে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার আমরা জানি যে শুরু থেকেই বলে আসছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনটা হয়ে যাক। কারণ সেনাবাহিনী বাইরে দীর্ঘদিন থাকা ভালো নয় এবং সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চান তিনি ডিসেম্বরে নির্বাচন করে। কিন্তু ইউনূস এক ঢিলে দুই পাখি মেরেছেন। তিনি সেনাবাহিনী প্রধান কিংবা তারেক রহমান- কারো কথাই শোনেননি। তারেক রহমান বলেছিলেন যে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই হতে হবে। ড. ইউনূস বলেছেন, জুনের মধ্যেই ইলেকশন হবে। ৩০-এর মধ্যে ইলেকশন হবে। উনি এখন এদিকে তারেক রহমান কিংবা সেনাপ্রধান কারো বক্তব্যে না গিয়ে ইলেকশনকে ঠেলে দিয়েছেন এপ্রিল পর্যন্ত।

এ সাংবাদিক বলেন, এপ্রিলে নির্বাচন হবে, এপ্রিলের প্রথমার্ধে তো- এ বিষয়ে সাংবাদিকরা মির্জা ফখরুলের কাছে জানতে চেয়েছিল। তো তিনি বলেন যে ড. ইউনূস এবং তারেক রহমানের যে বৈঠক হতে যাচ্ছে এতে একটা নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে। তার কথা এবং সুরে মনে হয়েছে যে সরকার যদি সত্যি নির্বাচন দিতে চায় এবং মানে এপ্রিলে দিতে চায় এবং তা যদি এপ্রিলেও হয় তাতে- মানে বিএনপির খুব একটা আপত্তি নেই। অন্তত তারা অংশ নেবে না- এই কথা বলছে না। তো এমন মনোভাব নাই আর কি। বরং তিনি সরকারের আন্তরিকতার ঘাটতি দেখেননি।

অনেক প্রশংসা করেছেন তার কথাবার্তায় ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের এই কার্যক্রমগুলোর। ফখরুল ইসলাম মনে করেন, এই সময়টা গণতন্ত্র উত্তরণের ট্রানজিশন পিরিয়ড। তাই সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে। প্রতিটি বক্তব্য এমনভাবে দিতে হবে যেন সামনে যে চ্যালেঞ্জ, সেটি সফলভাবে মোকাবেলা করা যায়। বিএনপি হঠাৎ সুর নরম করল কেন? এটা অনেকের প্রশ্ন- তাই না? আমার ব্যক্তিগত ধারণা, ঈদ-পরবর্তী সময়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা বৈঠক করেছিলেন। সেখানে তার বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই বার্তাটা এসেছে যে ড. ইউনূসকে ডিস্টার্ব কোরো না তোমরা। তাকে নির্বাচন করে বিদায় নিতে দাও। বিএনপি কেন ডিসেম্বরে নির্বাচন চায়? এটা তারা ব্যাখ্যা করেছে। খুব ভালোভাবেই করেছে। রমজান এবং গ্রীষ্মকালীন সময় যে দাবদাহ হবে- এই দাবদাহে এই মানুষ ভোট কিভাবে দেবে? সেটা একটা বড় প্রশ্ন।

তিনি বলেন, তারপর নির্বাচনে ক্যাম্পেইন কিভাবে করবে রমজানের মধ্যে। এসব কারণে তারা (বিএনপি) মনে করে যে এটা ডিসেম্বরে হওয়া উচিত। এখন এটাকে এপ্রিলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং এপ্রিলে কেন নিয়ে যাচ্ছে সরকার তারও কোনো ভালো ব্যাখ্যা দেয়নি। এপ্রিলে আরো একটা ভয় হচ্ছে কালবৈশাখী। একটা দুর্যোগের আশঙ্কা থাকে। বিএনপির একটা মূল ভয় হচ্ছে, কালবৈশাখীর ফলে যদি এপ্রিলেও নির্বাচন না হয়, তাহলে তা আরো পিছিয়ে যেতে পারে। যদিও তারা প্রকাশ্যে এটা বলছে না।

তবে ডক্টর ইউনূসের পক্ষ থেকে নির্বাচন দেওয়া নিয়ে যে একটা গড়িমসি আছে, তিনি যদি মনে করেন যে এটা- মানে জাতিকে উদ্ধার করে ফেলতেছে নির্বাচনের তারিখ দিয়ে। এই যে মনোভাব, সেটা কিন্তু বিএনপি বোঝে। ডক্টর ইউনূস গদির মজা পেয়ে গেছেন, সেটাও তারা বুঝতে পারছেন। তাই নির্বাচন নিয়ে যে চরম অনিশ্চয়তা আছে, সেই অনিশ্চয়তার মধ্যে তারা যা দেয়, তাতেই মনে হচ্ছে আমার মনে হয় রাজি হবে। তো আমার ধারণা, ড. ইউনূসের সঙ্গে যে বৈঠক হতে যাচ্ছে, সেটা একটা লেনদেনের বৈঠক হবে। এই এপ্রিল তারিখটা হয়তো না-ও থাকতে পারে। সেটা ফেব্রুয়ারির শুরুতে হতে পারে। ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধ হতে পারে, কারণ ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয়ার্ধ থেকে আবার রমজান শুরু হচ্ছে।

রমজানের আগে হয়তো দুই পক্ষ একটা সমঝোতায় আসবে যে এটা রমজানের আগে আমরা করে ফেলি। আর যদি বিএনপি সেটা না মানে, তাহলে বড় ধরনের একটা ডিল তাদের মধ্যে হয়েছে- আমরা ধরে নিতে পারি এবং কারণ এই যে ড. ইউনূসের যেমন চাওয়া আছে, বিএনপিরও চাওয়া আছে। বিএনপি জানে যে কয়দিন পরে তারা ক্ষমতায় যাবে। ড. ইউনূসের চাওয়া হচ্ছে এখন এই মুহূর্তে একটা সেফ এক্সিট পাওয়া। বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে, তাহলে ড. ইউনূসকে রাষ্ট্রপতি এবং তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী করা হবে- এমন একটা সমঝোতা হতে পারে, এটাও বলা হচ্ছে কারো কারো তরফ থেকে।

তবে এ কলামিস্ট ব্যক্তিগতভাবে মনে করেন, এই সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। তিনি বলেন, ড. ইউনূস সরকারের কাছ থেকে তার সময়কালের কর্মকাণ্ডের জন্য একটা ইনডেমনিটি চাইবেন এবং ইনডেমনিটি তার খুবই দরকার। এর মধ্যে তিনি জুলাই আন্দোলনে যারা পুলিশ হত্যা করেছিল তাদের ইনডেমনিটি দিয়ে দিয়েছেন আইন করে এবং পুলিশ বাহিনীকে বলা যায় যে একরকম পঙ্গু করে দিয়েছেন, মনোবল তাদের নষ্ট করে দিয়েছেন। এখন পুলিশের কাজ করছে সারা দেশের সেনাবাহিনী। যার শেষ পরিণতি কী হবে, এই বাহিনী কতটা দুর্বল হয়ে পড়বে- আমরা কেউ এখনো কিন্তু জানি না।

তিনি বলেন, গত ১০ মাসে তিনি যেসব বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ড. ইউনূস যেসব ব্যক্তিগত সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছেন, ব্যাবসায়িক সুবিধা নিয়েছেন, কর মুক্তি নিয়েছেন প্রায় ৬৬৬ কোটি টাকা এবং মামলাগুলো প্রত্যাহার করেছেন তার নিজের বিরুদ্ধে যেগুলো ছিল এবং স্বজনপ্রীতির নিয়োগ যেগুলো দিয়েছেন- এসব বিষয় নিয়ে তাকে কিন্তু আগামীতে একটা সরকার যদি আসে যেকোনো সময়, একেবারে ওনার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এটা কিন্তু তাকে পিছু ছাড়বে না এবং একটা চ্যালেঞ্জের মধ্যে তিনি পড়বেন, তার যে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো তার নিরাপত্তা খেয়ে দেবে তিনি যে সংস্কৃতি চালু করে দিয়ে গেছেন- প্রতিপক্ষের বাড়িতে হামলা করা, ধ্বংস করা, প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা, সে সংস্কৃতি তো আর বন্ধ হবে না। তো ওনার প্রতিষ্ঠানগুলো কিভাবে টিকে থাকবে- এগুলো নিয়ে তার সঙ্গে বিএনপির একটা সমঝোতা হতে পারে। বৈঠকে অবশ্যই উনি ওনার সহযোগীদের ব্যাপারেও কিছু চাইবেন এবং যদিও এই সহযোগীদের অনেকেই বিদেশে সম্পত্তি গড়ে তুলেছেন এবং তাদের অনেকেরই বিদেশি পাসপোর্ট, তারা দেশ ছেড়ে যাওয়াটা কোনো বিষয় না।

এ সাংবাদিক আরো বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে যখন ইউনূস বিএনপিকে নির্বাচনের মাঠে প্রধান শক্তি বানিয়েছেন, তখন বিএনপির হাতে ক্ষমতা থাকবে সেটাই বাস্তবতা। বিএনপি-জামায়াত চাইবে না যে আওয়ামী লীগ আবার ফিরে আসুক। এই বাস্তবতায় ইউনূসের আশীর্বাদপুষ্ট এনসিপি যারা তাকে ক্ষমতায় বসিয়েছিল, তার নিয়োগকর্তা বলে তিনি বলে বেড়ান, তাদের জন্য তিনি কিছু আসন কিন্তু চাইতে পারেন। বিএনপি হয়তো তা-ও মেনে নেবে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য।

তিনি বলেন, লন্ডনে ড. ইউনূস যে হোটেলে অবস্থান করছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা গেছে, সেখানে আওয়ামী লীগের বড়সড় বিক্ষোভ হয়েছে এবং সেখানে তার হোটেলের সামনে আওয়ামী লীগ রীতিমতো অবস্থান নিচ্ছে এবং ঢাকার বইমেলায় শেখ হাসিনার ছবি দিয়ে যে ডাস্টবিন তৈরি করা হয়েছিল, এর পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে এবার ইউনূস এবং তার প্রেসসচিব শফিকের ছবি দিয়ে ডাস্টবিন বানানো হয়েছে এবং তা নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শিত হচ্ছে যে হোটেলের সামনে দাঁড়িয়ে শফিককে গালাগালি করতেও আমি দেখলাম একটা ভিডিওতে এবং শফিক তখন হেঁটে যাচ্ছিল।

তাকে ধরধর করে গালাগালি করছিল। ইউনূসের কুশপুতুল বানিয়ে গলায় স্যান্ডেল ঝুলিয়ে দিয়েছে। তাকে রাজাকার আখ্যা দিয়ে দেশ ছাড়তে বলেছে। এগুলো খুবই দুঃখজনক ঘটনা যে আমরা বাংলাদেশের রাজনীতিকে, মানে এই সংস্কৃতি থেকে আমরা মুক্ত হতে পারিনি। আমরা আমাদের এই বিদ্বেষ থেকে মুক্ত হতে পারিনি। আমরা আমাদের যে ব্যক্তিগত অভ্যন্তরীণ যে বিদ্বেষ এবং হানাহানি- এগুলো আমরা বিদেশে নিয়ে যেতে চাই। বিদেশের মাটিতেও আমরা প্রদর্শন করি। তো জাতি হিসেবে আমাদের জন্য তখন এটা খুবই বেদনার আর কি।

এ কলামিস্ট আরো বলেন, শেখ হাসিনার ভাগ্নি ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক ডক্টর ইউনূসের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ইউনূসের পক্ষ থেকে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। আমি বুঝি না যে টিউলিপের সঙ্গে যদি ড. ইউনূসের বসতে অসুবিধা হয়, এখানে কোনো যৌক্তিকতা থাকলেও থাকতে পারে। কিন্তু ইউনূসের সঙ্গে যে দুদকের কিছু কর্মকর্তা আছেন, সরকারের আরো প্রতিনিধি আছেন, তাদের টিউলিপের সঙ্গে বৈঠক করতে সমস্যা কোথায়? টিউলিপ তো দণ্ডিত ব্যক্তি না যে তার সঙ্গে দেখা করতে পারবে না। আসামির সঙ্গে দেখা করা- এমন কোনো ঘটনা হয়নি। কারণ সে তো শুধু এখানে আসামি তা না। সে তো একজন ব্রিটিশ এমপি। তাই না?

টিউলিপ ইতিমধ্যে কিন্তু ব্রিটিশ মিডিয়ায় প্রচার করছেন যে তিনি নির্দোষ, তার বক্তব্য নেওয়া হচ্ছে না এবং সরকারের কোনো নোটিশ তিনি পাননি। শুধু তার বিরুদ্ধে এবং তার খালার বিরুদ্ধে বদনাম করে বেড়াচ্ছে। এগুলো উনি তার পক্ষ থেকে বলতে পারেন। তার সত্যতা নিয়ে তো অবশ্যই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তিনি যত সাধু প্রচার করছেন, তত সাধু তো বাংলাদেশের মানুষ তাকে মনে করে না। কিন্তু যা-ই হোক, আমি মনে করি, ডক্টর ইউনূসের কাছে যদি প্রমাণ থাকে, সরকারের কাছে যদি প্রমাণ থাকে- তার দুর্নীতির ফিরিস্তি শুনিয়ে তার ব্যাখ্যা তো ক্লিয়ার করতে পারেন, তাই না? সরকারের কাছে যদি তথ্য থাকে, তাহলে স্বচ্ছতা দেখানোর ভয় কীসের? তারা কি ধরে নিয়েছে যে বাংলাদেশের আদালতে টিউলিপের বিচার হবে? টিউলিপ এখানে হাজিরা দেবে এবং এই যে আদালতে যে মব সংস্কৃতি চালু করেছে, সেখানে টিউলিপ ডিম খাবে!

আনিস আলমগীর আরো বলেন, আমরা আসলে কাজের কাজ কি সেটা দেখতে চাই। আমরা কাজের কাজ কিছু দেখতেছি না। আমরা কাজের কাজ দেখতেছি শুধু মব সংস্কৃতি এবং জঙ্গিপনা বাড়িয়ে তোলা, যেখানে-সেখানে মানুষকে হামলা করা- এগুলোই চলতেছে। যার যা ইচ্ছা সেভাবেই চলতেছে। আইন-শৃঙ্খলার পরিণতি আমরা দেখতে পাচ্ছি। তো সবশেষে আমি বলব, যদি সরকার এবং বিএনপি নির্বাচন নিয়ে একটা সমঝোতায় আসে, কিন্তু আওয়ামী লীগ যদি নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে, তাহলে তাদের ভূমিকা কী হবে? সেটা কিন্তু এখন সবচেয়ে বড় একটা প্রশ্ন যে আওয়ামী লীগ তো নিষিদ্ধ।

সবশেষে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে যাওয়াটা কতটা নিরাপদ হবে? সে প্রশ্ন কিন্তু এখনো রয়ে যাচ্ছে। ড. ইউনূস ব্রিটিশ মিডিয়ার সঙ্গে সেখানে বক্তৃতাবাজিতে আজকেও দেখলাম যে বলছেন, ১৭ বছরে এ রকম কোনো নির্বাচন হয়নি, সে রকম নির্বাচন তিনি উপহার দেবেন। একটা বড় অংশকে ভোট থেকে বাইরে রেখে তিনি কিভাবে আশা করেন যে একটা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন গত ১৭ বছরে তিনি যেটা দেখে নাই সে রকম একটা নির্বাচন দেবেন! তাহলে এটা ১৮ আর ২৪-এর থেকে কী পার্থক্য থাকবে? ২০১৪ থেকে কী পার্থক্য থাকবে?

আমাদের কিন্তু মাথায় এখনো কিছু ধরে না। নিরাপত্তা এবং আগুনের আতঙ্কে মোড়ানো সেই দিনগুলো আবার আমাদের মধ্যে ফেরত আসছে কি না আমরা সেই চিন্তায় আছি। আওয়ামী লীগ কি সেই ধরনের ধ্বংসাত্মক কাজে যাবে ইলেকশনের সময় না কি শান্তিপূর্ণভাবে যে নির্বাচন দিয়ে নির্বাচন-পরবর্তী একটা স্ট্র্যাটেজি তারা ঠিক করবে, তাদের দলের জন্য সেগুলো কিন্তু এখনো দেখার বিষয় আছে সেই পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করি, দেখি কী হয়।