Image description

দেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক শিল্প তীব্র গ্যাস সংকটে ধুঁকছে। গ্যাসের পর্যাপ্ত চাপ ও সরবরাহ না থাকায় কারখানাগুলো তাদের পূর্ণ সক্ষমতায় উৎপাদন করতে পারছে না। ফলে একদিকে পণ্যের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে রপ্তানি আয়ের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

পেট্রোবাংলার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা ৪,২০০ মিলিয়ন ঘনফুটের বেশি। কিন্তু গত শুক্রবার পর্যন্ত সরবরাহ করা হয়েছে মাত্র ২,৮৩০ মিলিয়ন ঘনফুট, যার মধ্যে দেশীয় উৎস থেকে এসেছে ১,৭৮৮ মিলিয়ন এবং আমদানি করা এলএনজি থেকে এসেছে ১,০৪২ মিলিয়ন ঘনফুট। ফলে চাহিদার তুলনায় ১,৩০০ মিলিয়ন ঘনফুটেরও বেশি গ্যাস ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। এই ঘাটতির কারণে শিল্প-কারখানার পাশাপাশি বিদ্যুৎকেন্দ্র ও অন্যান্য খাতেও সংকট তৈরি হয়েছে।

এই সংকট নিরসনে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান সম্প্রতি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি জানান, গ্যাসের কম চাপের কারণে অনেক কারখানা পুরোপুরি উৎপাদন করতে পারছে না, যা দেশের রপ্তানি প্রবৃদ্ধির জন্য একটি বড় হুমকি।

সাভারের বেশ কিছু কারখানার মালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গ্যাসের চাপ কমে যাওয়ায় উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বয়লার ও জেনারেটর চালাতে যেখানে পর্যাপ্ত চাপ প্রয়োজন, সেখানে গ্যাসের চাপ অর্ধেকের নিচে নেমে গেছে। এতে কারখানাগুলো বিকল্প পদ্ধতিতে উৎপাদন চালিয়ে যাচ্ছে, যা খরচ কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। এই সংকট দেশের অর্থনীতির জন্য নতুন বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বাধা দিচ্ছে।

যদিও তিতাস গ্যাসের সাভার জোনাল অফিসের ম্যানেজার আব্দুল্লাহ হাসান আল-মামুন জানান, গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানোর চেষ্টা চলছে এবং অভিযোগের সংখ্যাও কমেছে। তবে শিল্পোদ্যোক্তারা বলছেন, যতদিন পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত না হচ্ছে, ততদিন এই সংকট চলতেই থাকবে।