Image description

বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য পণ্যের অন্যতম প্রধান রপ্তানি বাজার, বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক ১৫ শতাংশ কমিয়ে ২০ শতাংশ নির্ধারণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের ওপর ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছিলেন, যা বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের ঘোষণায় কমিয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের অন্তত ২৫টি দেশের ওপর নতুন শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইনের ওপর ১৯ শতাংশ, মিয়ানমারের ওপর ৪০ শতাংশ, শ্রীলঙ্কা ও ভিয়েতনামের ওপর ২০ শতাংশ, আফগানিস্তান, বলিভিয়া, ক্যামেরুন, চাদ, কোস্টারিকা, কঙ্গো, ইকুয়েডর ও গিনির ওপর ১৫ শতাংশ, আলজেরিয়া ও বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার ওপর ৩০ শতাংশ, ব্রাজিল ও ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের ওপর ১০ শতাংশ এবং ব্রুনাইয়ের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে।

গত ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল, যা দেশটির গড় ১৫ শতাংশ শুল্কের তুলনায় অনেক বেশি। এই উচ্চ শুল্কের ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি, বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল। বাংলাদেশ প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৮৪০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করে, যার মধ্যে ৭৩৪ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক।

৯০ দিনের শুল্ক বিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে ট্রাম্প বাংলাদেশের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করেন। তবে, দ্বিপাক্ষিক শুল্ক চুক্তির জন্য বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি কার্যালয়ের (ইউএসটিআর) সঙ্গে একাধিক বৈঠকের পর শুল্ক কমিয়ে ২০ শতাংশে নামানো হয়। এই আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

শুল্ক কমানোর প্রক্রিয়ায় সুবিধা পেতে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৫টি বোয়িং উড়োজাহাজ কেনার অর্ডার দিয়েছে। বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান জানান, এই অর্ডার বাংলাদেশ বিমানের বহর বাড়ানোর পরিকল্পনার অংশ। এছাড়া, সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন করেছে।

বাংলাদেশের শুল্ক কমানোর এই পদক্ষেপ দেশের রপ্তানি খাত, বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য স্বস্তি বয়ে আনতে পারে। তবে, চূড়ান্ত শুল্ক চুক্তির খসড়া নিয়ে আলোচনা এখনো চলমান রয়েছে।