
ফিলাডেলফিয়ার লিংকন ফিন্যান্সিয়াল ফিল্ড স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের নকআউট পর্বের এক উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে স্বদেশী ক্লাব বোতাফোগোকে ১-০ গোলে হারিয়ে পালমেইরাস প্রথম ব্রাজিলিয়ান ক্লাব হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনালে তাদের স্থান নিশ্চিত করেছে।
এবারের ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে ব্রাজিলের চারটি ক্লাব অংশ নিয়েছিল, যার সবগুলোই নকআউট পর্বে জায়গা করে নেয়। তবে নকআউট ফিক্সচারের কারণে পালমেইরাস ও বোতাফোগোর মুখোমুখি হওয়ার ফলে একটি ব্রাজিলিয়ান ক্লাবকে নিশ্চিতভাবেই বিদায় নিতে হতো।
১২০ মিনিটের এই ম্যারাথন লড়াইয়ে একমাত্র গোলটি আসে ১০০তম মিনিটে, পালমেইরাসের বদলি তারকা পলিনিও-এর পা থেকে। ডান দিক থেকে বল নিয়ে দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে নিচু ও কৌণিক এক শটে বোতাফোগো গোলকিপার জনকে পরাস্ত করে বল জালে জড়ান তিনি।
ম্যাচের বাকি সময়ে বোতাফোগো সমতায় ফিরতে মরিয়া চেষ্টা চালালেও সফল হয়নি। ১১৬ মিনিটে পালমেইরাসের গুস্তাভো গোমেজ দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে পালমেইরাস ১০ জনের দলে পরিণত হয়। তবে সেই চাপ সামলে শেষ পর্যন্ত জয় নিশ্চিত করে পালমেইরাস। প্রায় দুই বছর পর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বোতাফোগোর বিপক্ষে এটি তাদের প্রথম জয়।
ম্যাচ শেষে পালমেইরাস কোচ আবেল ফেরেইরা বলেন, আমরা অসাধারণ একটি ম্যাচ খেলেছি। পুরো ৯০ মিনিট এবং অতিরিক্ত সময়েও আমরা ভালো খেলেছি। একজন কম নিয়েও দল একসঙ্গে কষ্ট করেছে এবং জয়টা আমাদের প্রাপ্য ছিল।
ব্রাজিলের ঘরোয়া ক্লাব প্রতিযোগিতা এবং লাতিন আমেরিকার মহাদেশীয় ক্লাব টুর্নামেন্টে এই দুই দলের লড়াই বেশ জমে ওঠে। ২০২৩ সালে পালমেইরাস ৩-০ গোলে পিছিয়ে থেকেও ৪-৩ গোলে বোতাফোগোকে হারিয়েছিল, যা তাদের ব্রাজিলিয়ান লিগ শিরোপার দৌড় থেকে ছিটকে দেয়। এরপর ২০২৪ কোপা লিবার্তাদোরেস জয়ের পথে বোতাফোগো পালমেইরাসকে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় করে দেয় এবং তারপর থেকে টানা পাঁচ ম্যাচে পালমেইরাসের বিরুদ্ধে অপরাজিত ছিল তারা।
ম্যাচের প্রথমার্ধ ছিল বেশ ধীর গতির। পালমেইরাস বলের দখলে আধিপত্য দেখালেও বোতাফোগোর রক্ষণভাগ ভাঙতে পারেনি। বাঁ দিক দিয়ে পালমেইরাসের একমাত্র আশার আলো ছিলেন কিশোর উইঙ্গার এস্তেভাও, যিনি টুর্নামেন্ট শেষে ৬০ মিলিয়ন ইউরোতে চেলসিতে যোগ দেবেন। প্রথমার্ধে একমাত্র অন-টার্গেট শটটি আসে রিচার্ড রিওসের কাছ থেকে, যা বোতাফোগোর গোলরক্ষক জন দারুণভাবে রক্ষা করেন।
অন্যদিকে, গ্রুপ পর্বে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজিকে হারালেও বোতাফোগো এই ম্যাচে পুরোপুরি ছন্দহীন ছিল। দ্বিতীয়ার্ধে পালমেইরাস আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠে। ৫০ মিনিটে পালমেইরাসের এস্তেভাও একটি গোল করলেও অফসাইডের জন্য তা বাতিল হয়। পরে তাকে বদলি করে মাঠে আনা হয় পলিনিওকে, যিনি শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ফল নির্ধারণ করেন।
আগামী শনিবার (৫ জুলাই) বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টায় ফিলাডেলফিয়াতেই কোয়ার্টার ফাইনালে চেলসির মুখোমুখি হবে পালমেইরাস।
Comments