
সর্বকালের সেরা ফুটবলার হতে কি কি লাগে, এর কোনো মাপকাঠি আছে কি না জানা নেই! তবে মেসির সাফল্যের গল্প পড়তে শুরু করলে অবাক হয়ে জানতে চাইবেন এতোকিছু কি করা সম্ভব কোন খেলোয়াড়ের পক্ষে নাকি মেসি ভিনগ্রহের কোন খেলোয়াড়?
মেসি ১১০৭ ম্যাচ খেলে করেছেন ৮৬৬ গোল এবং ৩৮৪ অ্যাসিস্ট অর্থাৎ সবমিলিয়ে তার গোল-অ্যাসিস্ট সংখ্যা সর্বমোট ১২৫০, তার ধারেকাছেও নেই আর কেউ। ক্যারিয়ারে করেছেন ৫৯টি হ্যাটট্রিক, আছে ৬৮টি ফ্রি-কিক গোল। আচ্ছা এতো গেলো ব্যাক্তিগত পারফরম্যান্স।
লোকে বলে সর্বকালের সেরা হতে নাকি ট্রফি লাগে! এখানেও পিছিয়ে নেই মেসি, রেকর্ড ৪৬ টি শিরোপা জিতেছেন ফুটবল ক্যারিয়ারে। এর মধ্যে আছে ১টি ফিফা বিশ্বকাপ, ২টি কোপা আমেরিকা, ১টি ফাইনালিসিমা, ১টি অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ, ১টি অলিম্পিক গোল্ড মেডেল, ৪টি চ্যাম্পিয়নস লিগ ট্রফি, ৩টি ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ, ৩টি ইউরোপীয়ান সুপার কাপ, ১০টি লালিগা, ৭টি কোপা দেল রে, ৮টি সুপারকোপা দি ইসপানা, ২টি লিগ ওয়ান ট্রফি, ১টি ফ্রেঞ্চ সুপার কাপ, ১টি এমএলএস সাপোর্টারস শিল্ড, ১টি লিগস কাপ।
মেসির ব্যাক্তিগত রেকর্ডে একটু নজর দিলে দেখবেন ৮টি ব্যালন ডি'অর, ৪টি ফিফা দি বেস্ট, ৩টি উয়েফা দি বেস্ট, ৬টি ইউরোপীয়ান গোল্ডেন বুট, ২টি লোরিয়াস অ্যাওয়ার্ড, ৫টি ওয়ার্লড'স বেস্ট প্লেমেকার, ১৪ বার আর্জেন্টিনা প্লেয়ার অফ দি ইয়ার, ৯ বার লালিগা প্লেয়ার অফ দি সিজন, ৩টি চ্যাম্পিয়নস লিগ প্লেয়ার অফ দি সিজন, ২টি ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ গোল্ডেন বল, ১টি অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ গোল্ডেন বল, ৮ বার লালিগা টপ স্কোরার, ৬ বার চ্যাম্পিয়নস লিগ টপ স্কোরার, রেকর্ড ২ বার ফিফা বিশ্বকাপ গোল্ডেন বল, ১ বার কোপা আমেরিকা গোল্ডেন বল, ২০২২ বিশ্বকাপ ফাইনাল ম্যান অফ দি ম্যাচ, ২০২২ ফাইনালিসিমা ম্যান অফ দি ম্যাচ, ২০১১ ইউসিএল ফাইনাল ম্যান অফ দি ম্যাচ, ২০০৯ ক্লাব বিশ্বকাপ ফাইনাল ম্যান অফ দি ম্যাচ, ২০১১ ক্লাব বিশ্বকাপ ফাইনাল ম্যান অফ দি ম্যাচ পুরষ্কার।
রেকর্ড আর মেসি যেন মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ। মেসির নামের পাশে আছে সর্বোচ্চ ট্রফি জয়ী প্লেয়ার,সর্বোচ্চ ব্যালন ডি'অর জয়ী প্লেয়ার, সর্বোচ্চ গোল্ডেন বুট জয়ী প্লেয়ার, ইতিহাসে সর্বোচ্চ ম্যান অফ দি ম্যাচ, ইতিহাসে সর্বোচ্চ অ্যাসিস্ট, ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোল+অ্যাসিস্ট, ইউরোপে সর্বোচ্চ গোল, সর্বোচ্চ ইন্টারন্যাশনাল গোল+অ্যাসিস্ট, সর্বোচ্চ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসিস্ট, আর্জেন্টিনার অল-টাইম টপ স্কোরার, বার্সেলোনার অল-টাইম টপ স্কোরার, ইন্টার মিয়ামির অল-টাইম টপ স্কোরার, ১টি ক্লাবের হয়ে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড, এক বছরে সর্বোচ্চ গোল, এক বছরে সর্বোচ্চ হ্যাটট্রিক, এক সিজনে সর্বোচ্চ অ্যাসিস্ট, এক সিজনে সর্বোচ্চ গোল+অ্যাসিস্ট, সবচেয়ে বেশি বিশ্বকাপ ম্যাচ খেলা খেলোয়াড়, সর্বোচ্চ বিশ্বকাপ ম্যান অফ দি ম্যাচ, একমাত্র প্লেয়ার যিনি বিশ্বকাপে ২টি গোল্ডেন বল জিতেছেন, বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোল/অ্যাসিস্ট, ক্যাপ্টেন হিসেবে সর্বোচ্চ বিশ্বকাপ ম্যাচ খেলা খেলোয়াড়, সবচেয়ে কম বয়সী প্লেয়ার যে বিশ্বকাপে গোল+অ্যাসিস্ট করেছে, সবচেয়ে বয়স্ক প্লেয়ার যে বিশ্বকাপে গোল+অ্যাসিস্ট করেছে।
মেসি যেখানে খেলেছেন সেখানের রেকর্ডবুকেও নিজের নামটি লিখেছেন ভালোভাবেই। লালিগার ইতিহাসের টপ স্কোরার কিংবা লালিগার ইতিহাসের টপ অ্যাসিস্ট প্রভাইডার সব মেসির নামেই লেখা। লালিগার ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি হ্যাট-ট্রিক কিংবা নন-স্প্যানিশ হিসেবে সর্বোচ্চ লালিগা টাইটেল এইটাও এই কিংবদন্তির নামেই। এক সিজনে সর্বোচ্চ লালিগা গোল, এক সিজনে সর্বোচ্চ লালিগা অ্যাসিস্ট কিংবা এক সিজনে সর্বোচ্চ লালিগা হ্যাটট্রিকটাও আর্জেন্টাইন এই জাদুকরের নামেই।
আরেকটি ছোট তথ্য দেই! লালিগায় যতোটি ক্লাবের বিপক্ষে খেলেছেন মেসি, প্রতিটি ক্লাবের বিপক্ষেই গোল করেছেন।
এতো রেকর্ড কিংবা শিরোপা যার নামে তাকে তো বলাই যায়, সর্বকালের সেরা ফুটবলার! সেই মেসি আজ পূর্ন করেছে ৩৮ বছর। শুভ জন্মদিন লিওনেল আন্দ্রেস মেসি।
Comments