Image description

হিজরি নববর্ষের প্রথম মাস মহররমের দশম দিন, অর্থাৎ পবিত্র আশুরা মুসলিম উম্মাহর জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি দিন। এই দিনে রোজা রাখার বিশেষ গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে, যা স্বয়ং আল্লাহর রাসুল (সা.) নিজে রেখেছেন এবং সাহাবিদেরও রাখতে বলেছেন। যারা এদিন রোজা রাখেন, মহান আল্লাহ তাআলা তাদের পূর্ববর্তী এক বছরের গুনাহ ক্ষমা করে দেন। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে বাংলাদেশে গত ২৭ জুন থেকে মহররম মাস গণনা শুরু হয়েছে, সে অনুযায়ী আগামী ৬ জুলাই (রোববার) পবিত্র আশুরা পালিত হবে। আশুরার রোজা রাখার পাশাপাশি নিয়মিত নামাজ আদায়, বেশি বেশি তওবা-ইস্তিগফার এবং সৎ কাজ করার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা সম্ভব।

আশুরার রোজা মুসলিমদের জন্য অনেক গুরুত্ব ও ফজিলতপূর্ণ। আল্লাহর রাসুল (সা.) সব সময় আশুরার রোজা রাখতেন এবং কখনও তা বাদ দেননি। উম্মুল মুমিনীন হাফসা (রা.) বলেন, নবীজি (সা.) চারটি আমল কখনো পরিত্যাগ করেননি: আশুরার রোজা, জিলহজের প্রথম দশকের রোজা, প্রতি মাসে তিন দিন রোজা, ও ফজরের পূর্বের দুই রাকাত নামাজ। (সুনানে নাসাঈ: ২৪১৬)

হজরত আবু কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, মহান আল্লাহর কাছে আমি আশা পোষণ করি, তিনি আশুরার রোজার মাধ্যমে আগের এক বছরের পাপ ক্ষমা করে দেবেন (তিরমিজি: ৭৫২)।  আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) রমজান ও আশুরার রোজাকে অন্য কোনো রোজার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতেন। (সহিহ বুখারি: ২০০৬)

পবিত্র আশুরার দিনে দুটি রোজা রাখা সুন্নত। এ ক্ষেত্রে পবিত্র আশুরার দিন একটি রোজা এবং এর আগে অথবা পরের দিন একটিসহ মোট ২টি রোজা রাখতে হবে। ইহুদিদের সঙ্গে মিল যেন না হয়, সেজন্য বিশ্বনবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমন নির্দেশ দিয়েছেন। (মুসনাদে আহমদ: ২১৫৪)

এ বছর (১৪৪৭ হিজরি) ১০ মহররম বা পবিত্র আশুরার দিনটি হলো ৬ জুলাই, রোববার। সুতরাং, যারা আশুরা উপলক্ষে দুটি রোজা রাখবেন, তাদের জন্য রোজা রাখার সম্ভাব্য দুটি দিন হলো:

৯ মহররম (শনিবার, ৫ জুলাই) ও ১০ মহররম (রবিবার, ৬ জুলাই) অথবা ১০ মহররম (রবিবার, ৬ জুলাই) ও ১১ মহররম (সোমবার, ৭ জুলাই)। 

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিজরত করে মদিনায় এসে ইহুদিদের আশুরার দিন রোজা পালন করতে দেখেন। এর কারণ জানতে চাইলে তারা জানায়, এই সেই দিন, যেদিন আল্লাহ মুসা (আ.) ও বনি ইসরাইলকে ফেরাউনের ওপর বিজয়ী করেছেন। তার সম্মানার্থে তারা রোজা পালন করে থাকে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, "আমরা তোমাদের চেয়েও মুসা (আ.)-এর অধিক নিকটবর্তী।" এরপর তিনি এই দিনে রোজা পালন করার নির্দেশ দেন। (মুসলিম ২৫২৩)