Image description

ধর্মীয় ও সামাজিকভাবে অপছন্দনীয় হওয়ার পরও আমাদের সমাজে বিভিন্ন মৌসুমি মোড়কে প্রচলিত রয়েছে যৌতুক প্রথা। সমাজের সব স্তরেই এর প্রচলন রয়েছে। আমাদের সমাজে বিয়ের দিনের যৌতুককে খাটো চোখে দেখা হলেও বিয়ের পর থেকে শুরু হওয়া বিরামহীন মৌসুমি যৌতুককে গর্বের বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই কোনো পরিবার এই মৌসুমি যৌতুক দিতে ব্যর্থ হলে, তাদের বিভিন্নভাবে অপমান করা হয়। কেউ তার শ্বশুরবাড়ি থেকে চোখে পড়ার মতো যৌতুক উসুল করতে না পারলে হীনম্মন্যতায় ভোগে। 

অথচ অর্থনৈতিক লেনদেনের মৌলিক বিধান সম্পর্কে ধারণা দিতে গিয়ে মহান আল্লাহ বলেন, তোমরা পরস্পর একে অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভোগ কোরো না এবং এই উদ্দেশ্যে বিচারকের কাছে সে সম্পর্কে মামলা কোরো না যে মানুষের সম্পদ থেকে কোনো অংশ জেনেশুনে গ্রাস করার গুনাহে লিপ্ত হবে। (সুরা: বাকারা, আয়াত: ১৮৮)

আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, কোনো মুসলমানের সম্পদ তার আন্তরিক সম্মতি ছাড়া হস্তগত করলে তা হালাল হবে না।
(বায়হাকি, হাদিস: ১৬৭৫৬)

কোরআনের উল্লিখিত আয়াত এবং হাদিস দ্বারা বোঝা যায়, কারো সম্মতি ছাড়া জোর করে তার সম্পদ হাতিয়ে নেওয়া জায়েজ নেই।
যারা জোর করে তাদের শ্বশুরবাড়ি থেকে যৌতুক আদায় করে, মৌখিকভাবে দাবি না করলেও যৌতুক আদায়ের জন্য কৃত্রিম পরিস্থিতি সৃষ্টি করে, তারা কি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবে যে তার শ্বশুরালয়ের মানুষ কোনো রকম চাপ অনুভব না করে মন থেকে তার বাড়িতে ইফতারির বহর পাঠিয়েছে? অবশ্যই না। পাশাপাশি যেসব প্রতিবেশী কার বাড়িতে কী যৌতুক এলো, এগুলো নিয়ে মাতামাতি করে, তাদেরও উচিত এ কাজ থেকে বিরত থাকা।

সামর্থ্যবান কনের বাবাদের উচিত ঢাকঢোল পিটিয়ে যৌতুক না দেওয়া। এতে অন্যরা চাপে পড়ে যায়। মেয়েকে সন্তুষ্টচিত্তে কিছু দিতে চাইলে এমনভাবে দেওয়া উচিত, যাতে অন্যরা এই প্রতিযোগিতায় লিপ্ত না হয়।

মহান আল্লাহ সবাইকে সুবুদ্ধি দান করুন। আমিন।


মানবকণ্ঠ/এফআই