Image description

চরমোনাই পীর ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি ছাড়া দেশে নির্বাচন হতে পারে না। তার মতে, জনগণের রায় এই পদ্ধতির পক্ষেই। শনিবার (২৮ জুন) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত জাতীয় মহাসমাবেশে তিনি এই মন্তব্য করেন।

চরমোনাই পীর তার বক্তব্যে ১৯৭২ সালের সংবিধানকে জনগণের বিশ্বাস ও আশা-আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী আখ্যা দিয়ে বলেন, "এই সংবিধান মেনেই স্বৈরাচার তৈরি হয়েছে।" তিনি রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। জুলাই অভ্যুত্থানকে কেবল শাসক পরিবর্তনের আন্দোলন নয়, বরং "একটি রাষ্ট্র পুনর্গঠনের আন্দোলন" হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ২৪ জুলাইয়ের ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িতদের বিচার না করে কোনো নির্বাচন হতে পারে না। তার দাবি, গণহত্যা, গুম ও লুটপাটের জন্য "ফ্যাসিস্ট চক্রের কাউকে ছাড় দেওয়া যাবে না।"

সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার দাবি করে বলেন, যে দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সংসদে তাদের তত আসন থাকতে হবে। তার মতে, এটি "জনগণের, জেনজি প্রজন্মের এবং সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের যৌক্তিক দাবি।" প্রয়োজনে গণভোটের মাধ্যমে জনগণের রায় নেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

চরমোনাই পীর ইসলামপন্থীদের ঐক্যের ওপর জোর দিয়ে বলেন, "এবার ইসলামপন্থীদের ঐক্যের সময় এসেছে।" তিনি বিশ্বাস করেন, সম্মিলিতভাবে ভোট দিলে ইসলামপন্থীরাই বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। তিনি জুলাই অভ্যুত্থানের ফসল হিসেবে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি নিঃস্বার্থ সমর্থন জানান, তবে শর্ত দেন যে সরকার যেন সংস্কার ও নিরপেক্ষতার পথ থেকে বিচ্যুত না হয়।

তিনি কৃষক, শ্রমিক, ব্যবসায়ী, প্রবাসী ও তরুণদের উদ্দেশে বলেন, ইসলামী আন্দোলন রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করবে। নারীদের সম্মান ও নিরাপত্তাকে তারা অন্যতম রাজনৈতিক অঙ্গীকার হিসেবে উল্লেখ করেন।

ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে চরমোনাই পীর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান ব্যক্ত করেন এবং বাইতুল মুকাদ্দাসের মুক্তির জন্য মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানদের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান। উলামায়ে কেরামের মর্যাদা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "আপনারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, কিন্তু অবহেলিত।" তিনি প্রতিশ্রুতি দেন যে ইসলামী আন্দোলন দায়িত্ব পেলে তাদের মর্যাদা রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিষ্ঠা করবে।

এই মহাসমাবেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন, যাদের মধ্যে হিন্দু মহাজোট, জামায়াতে ইসলামী, গণঅধিকার পরিষদসহ অন্যান্য দলের প্রতিনিধিরা উল্লেখযোগ্য।