Image description

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষে দু’জন নিহত হয়েছেন। গত শনিবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন আব্দুল কুদ্দুস (৭০) ও মো. মেহেদী (৩৫)।

আব্দুল কুদ্দুস মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সিটি করপোরেশনের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আবুল কাওসার আশার অনুসারী। আর মেহেদী মহানগর বিএনপির বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর হান্নান সরকারের সমর্থক ছিলেন।

নিহতের স্বজন, পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, উপজেলার রেললাইন অটোস্ট্যান্ডে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কয়েক দিন ধরে আশার অনুসারীদের সঙ্গে হান্নান সরকারের লোকজনের দ্বন্দ্ব চলছে। শুক্রবার দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত আটজন আহত হন। এরই জেরে শনিবার রাতে বন্দরের হাজারীবাগের শাহী মসজিদ এলাকায় আশার সমর্থক জাফর-রনি গ্রুপের ওপর হামলা হয় হান্নান সরকারের অনুসারী মেহেদী-বাবুর নেতৃত্বে। এ দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এক পর্যায়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হন আব্দুল কুদ্দুস। তাকে থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আব্দুল কুদ্দুসের বাড়ি বন্দরের হাফেজিবাগ এলাকায়।

এ ঘটনার জেরে আশার লোকজন হান্নান সরকারের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গেলে তাদেরও মারধর করা হয়। পরে সেনা সদস্যরা এসে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ নেয়।

এদিকে, রাত সাড়ে ১১টার দিকে বন্দরের সিরাজুদ্দৌলা ক্লাব মাঠে আব্দুল কুদ্দুস হত্যায় অভিযুক্ত মেহেদী ও তার লোকজনকে পেয়ে ধাওয়া দেয় রনি-জাফর গ্রুপের লোকজন। এ সময় দু’পক্ষের মধ্যে আবারও সংঘর্ষ হয়। এ সময় ছুরিকাঘাতে আহত হন মেহেদী। স্থানীয়রা তাকে শহরের খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

আব্দুল কুদ্দুস নিহতের পর হান্নান সরকার বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। একটি পক্ষ ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাকে জড়িয়ে বদনাম করার চেষ্টা করছে। তারা আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে।’

এ ব্যাপারে আবুল কাওসার আশা বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাবু, মেহেদী, রনি, জাফর সবাই এক সময় একসঙ্গে চলাফেরা করতেন। সবাই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তবে সম্প্রতি অটোস্ট্যান্ড নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। এটিকে একটি পক্ষ আশা ও হান্নানের বিরোধ বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে।’

বন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম জানান, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। লাশগুলো ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। সেখানে পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।