
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে একাট্টা হয়েছে ধর্মভিত্তিক এবং ডানপন্থি দলগুলো। কমিশন বাতিল না করলে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে দলগুলো। একই সঙ্গে দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হওয়ারও ডাক দিয়ে কমিশন বাতিলসহ চার দফা দাবি জানিয়েছে।
আজ বুধবার রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের ‘নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের ইসলামফোবিয়া: করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেছেন দলগুলোর শীর্ষ নেতারা। নবগঠিত এনসিপি নেতাও নারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বাতিলের দাবি জানান।
এতে বক্তৃতা করেন জামায়াতে ইসলামীর ডা. শফিকুর রহমান, ইসলামী আন্দোলনের আমির তথা চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা মনজুরুল ইসলাম আফেন্দী, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মঞ্জু, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন রাজী, এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা আশরাফউদ্দিন মাহদী প্রমুখ।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সভাপতি মাওলানা নুরুল হুদা ফয়েজি। সেমিনার থেকে দাবি করা হয়, কমিশনের প্রতিবেদন ও কমিশন বাতিল করতে হবে। ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত ও দেশীয় চিন্তায় বিশ্বাসী নারীদের কমিশনের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কোরান-সুন্নাহ, সংবিধান এবং সামাজিক বাস্তবতার আলোকে নতুন প্রতিবেদন প্রণয়ন করতে হবে।
নারী কমিশনের প্রতিবেদনে উত্তরাধিকার এবং সম্পদে নারীর সমান অধিকারের সুপারিশ করা হয়েছে। একে ইসলাম বিরোধী বলে আখ্যা দিয়েছে ধর্মভিত্তিক দল-সংগঠনগুলো। তাদের ভাষ্য. অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত নারী কমিশন অন্তর্ভুক্তিমূলক ছিল না। এতে ইসলাম চর্চা করা নারীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। পাশ্চাত্যের ধারণায় বিশ্বাসীদের নিয়ে গঠিত কমিশন, বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের ধর্মীয় বিশ্বাসকে আমলে নেওয়া হয়নি।
ইসলামী দলগুলো একসঙ্গে কাজ করবে বার্তা দিয়ে জামায়াত আমির বলেন, ‘আমাদের ভাগ ভাগ, টুকরো টুকরো করে, আমাদের মাথায় আর কেউ কাঁঠাল ভেঙে খেতে পারবে না’। অন্যান্য দলের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা আন্দোলনে যেতে চাই না। যদি বাধ্য করা হয়, তবে অবশ্যই আন্দোলনে নামব। জামায়াতের পূর্ণ সমর্থন থাকবে।’
কমিশনের সুপারিশগুলোকে স্ববিরোধী আখ্যা দিয়ে জামায়াত আমির বলেছেন, ‘নারী-পুরুষের সমান অধিকার চায়। আবার নারীর জন্য কোটা রাখারও সুপারিশ করেছে। নারীরা সম্মানের প্রতীক। নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন ঘরে ঘরে সমস্যা সৃষ্টি করতে চায়।’
শফিকুর রহমান বলেন, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন কোরান-সুন্নাহ বিরোধী হওয়ায় জামায়াত প্রত্যাখ্যান করেছে। কমিশনে যারা আছেন তাদেরকেও প্রত্যাখ্যান করতে হবে। যদি কমিশন করতে হয় এ দেশের বিশাল সংখ্যক নারীদের প্রতিনিধি রেখেই করতে হবে।
চরমোনাই পীর সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেছেন, ‘আপনারা জনগণের ভোটে দেশ পরিচালনা করছেন না। তারপরও সবসময় আপনাদের সহযোগিতায় ছিলাম, এখনও আছি। আমাদের রাস্তায় নামিয়ে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে ফ্যাসিস্টদের সুযোগ করে দেবেন না। পরিষ্কার বার্তা, সেদিকে পা বাড়ালে ৫ মিনিটও সময় পাবেন না।’
Comments