Image description

যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর জামিন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২৯ এপ্রিল) বিকালে সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সূত্রে জানা যায়, টুকুর বিরুদ্ধে ৩১৩টি মামলা ছিল। এর মধ্যে তিন মামলায় সাড়ে সাত বছরের সাজা দেয়া হয়েছে। 

সোমবার (২৯ এপ্রিল) নিম্ন আদালতে আত্মসর্মপণ করলে টুকুর জামিন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়। 

এদিকে টুকুকে কারাগারে পাঠানের নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিবৃতিতে তিনি বলেন, বিরোধী নেতাকর্মীদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর মাধ্যমে গোটা দেশটাকে বন্দিশালা বানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ৭ জানুয়রি ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী এখন আরও বেশি মাত্রায় বেপরোয়া, কর্তৃত্ববাদী ও জুলুমবাজ হয়ে উঠেছে। অবৈধ রাষ্ট্রক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসহ গণতন্ত্রমনা বিরোধী দল এবং ভিন্ন মত ও পথের মানুষদের ওপর দমন-পীড়নের খড়গ নামিয়ে এনেছে দখলদার সরকার। 

তিনি আরও বলেন, মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় অন্যায়ভাবে সাজাপ্রাপ্ত যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর জামিন নামঞ্জুর ও কারাগারে প্রেরণ, মিথ্যা মামলায় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য এস এম ওবায়দুল হক নাসির, কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গুরুতর অসুস্থ সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ, জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জামিল আহমেদ, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর বিপ্লব, সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, জেলা যুবদল সভাপতি রায়হান কবির, সাধারণ সম্পাদক নাদিম আহমেদ ও পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফরহাদ হোসেন বুলেট এবং আজ (গতকাল) রাজশাহী জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেক ছাত্রনেতা সাদ্দাম হোসেনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর ঘটনা চলমান আওয়ামী দমন-পীড়নের ধারাবাহিকতা।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিরোধী নেতাকর্মীদের কারাগারে পাঠানোর মাধ্যমে গোটা দেশটাকে বন্দিশালা বানানো হয়েছে। বর্তমানে দেশ থেকে আইনের শাসন ও সুশাসন উধাও হয়ে গেছে বলেই গণতান্ত্রিক সংগ্রামে অংশগ্রহণরত নেতাকর্মীরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, সারা দেশে প্রতিনিয়ত সরকারের মদদে বিরোধী নেতাকর্মীদেরকে মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশি সাজা প্রদানসহ জামিন নামঞ্জুরের মাধ্যমে কারান্তরীণ করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি এবং অবিলম্বে যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য এস এম ওবায়দুল হক নাসিরসহ উল্লিখিত নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির জোর আহ্বান জানাচ্ছি।

নয়াপল্টনে প্রতিবাদে বিক্ষোভ: এদিকে যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদে সোমবার বিকালে নয়াপল্টনে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেছেন যুবদলের নেতাকর্মীরা। বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে যুবদল সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্নার নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল এবং সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক রুহুল কবির রিজভী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় রুহুল কবির রিজভী বলেন, এই অবৈধ সরকার তপ্ত প্রবাহের ন্যায় এক বিষাক্ত চেম্বারে দেশের জনগণকে নিপিড়ন-নির্যাতন করে যাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুন্নাকে এক বছর কারান্তরীণ রাখা হয়েছে। এখন সভাপতি টুকুকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। অবৈধ ক্ষমতা নির্বিঘ্ন করতে দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত পুলিশ ও আজ্ঞাবহ আদালতকে নিয়ন্ত্রণ করে জনগণের ভোটের অধিকার এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া থেকে যুবদল নেতৃবৃন্দকে বিরত রাখা যাবে না। বরং এতে নেতাকর্মীদের ক্ষোভ ও প্রতিবাদের আকাঙ্ক্ষা আরও তীব্র হবে।

মানবকণ্ঠ/এফআই