
মানুষের জীবনে সুখ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিশেষ করে সংসারে সুখ অর্জন করা প্রত্যেক মানুষের একান্ত কাম্য। সংসারে সুখ মানে কেবল আর্থিক স্বচ্ছতা নয় বরং মানসিক শান্তি, পারিবারিক সুসম্পর্ক, শারীরিক সুস্থতা এবং সামাজিক স্থিতিশীলতা এর সাথে জড়িত।
সংসার জীবনে সুখ-শান্তি বজায় রাখা, সংসারটা গতিশীল ভাবে চালিয়ে যাওয়া এটা এক ধরনের সামাজিক, মানসিক এবং নিজের সঙ্গে নিজের প্রতিনিয়ত আত্মচর্চা বিশেষভাবে প্রয়োজন। সংসারে সুখী হতে হলে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখা আবশ্যকীয়, পারস্পরিক বন্ধন গড়ে তোলা জরুরি।
দাম্পত্য জীবনে সুখী হওয়ার প্রথম শর্ত হচ্ছে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা স্থায়ীভাবে বসবাস করা। ছোট-খাটো ভুল ত্রুটি সমন্বয়ের মাধ্যমে সমাধান করা পরস্পরের অনুভ‚তিকে গুরুত্বসহকারে দেখে মজবুত সম্পর্ক তৈরির ক্ষেত্রে একে অপরের সহযোগিতা করা। দাম্পত্য জীবন শুরু হয় দুজন অচেনা পরিবার থেকে আসা মানুষের সমন্বয়ে। তারা ধীরে ধীরে নিজেদের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়নে, সংসারে সুখ এবং শান্তিতে বসবাস করার জন্য আত্মপ্রত্যয় নিয়ে সামাজিক দায়বদ্ধতার মধ্যে নিজেদেরকে উপস্থাপন করে।
ফলে এই সম্পর্কটা এতটাই দৃঢ় এবং বিশ্বস্ততা হওয়া দরকার, যা আগামীতে এর ফল ভালো হবে না মন্দ হবে তা নির্ভর করে। তাই ইচ্ছা করলো সংসার জীবন শুরু করলাম বিষয়টা এমন নয়। এটা কোনো ছেলে খেলা নয়। পুতুল খেলাও নয়। এটা এমন নয় আজ খেললাম কাল খেলব না বিষয়টা এত হালকাভাবে দেখবার কোনো সুযোগ নেই। ফলে আমরা পারিবারিক জীবনটা কতটা সহিষ্ণুতা এবং মানবিকভাবে পরিচ্ছন্ন জীবনযাপন করতে পারি সেই বিষয়টা পরিবারের প্রত্যেকটা সদস্যের সুস্পষ্ট ধারণ থাকা প্রয়োজন। একটা পরিবারে যখন স্বামী-স্ত্রীর সমন্বয়ে সন্তান জন্ম গ্রহণ করে সেই সন্তানদের শিক্ষা, নৈতিকতার শিক্ষা দেয়া, তাদের যত্নশীল করে তোলা, আবেগ, অনুভূতি দিয়ে তাদেরকে বড় করে তোলা পিতা-মাতার নৈতিক দায়িত্ব।
এই দায়িত্বের ক্ষেত্রে শুধু দিন যায় রাত আসে, খাওয়া পড়া হয়, সময়মতো টাকা-পয়সা দেয়া, তাদের ব্যয়ভার বহন করা, এটাই কিন্তু মুখ্য উদ্দেশ্য নয়। যদি তাই হতো তাহলে অন্য প্রাণীর সঙ্গে মানুষের পার্থক্য হতো না। মানুষ সৃষ্টির সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ জীব, মানুষকে অনেক নিয়ম-কানুন, আইনশৃঙ্খলা, মেনে জীবন পরিচালনা করতে হয়। এ বিষয়গুলো পরিবার থেকেই শিক্ষা গ্রহণ করতে হয়। তাই পিতা-মাতার উচিত তারা যখন সন্তান জন্ম দেবে তার আগে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য জীবনের পরিষ্কার এবং পরিচ্ছন্ন জীবন বোধ নিজেদের মধ্যে স্থাপন করতে হবে। তবেই সুস্থ স্বাভাবিক সন্তান জন্ম দিয়ে তাদের সঠিকভাবে পরিচালনা করে বড় করাটা নৈতিক দায়িত্ব। এমন দেখা গেছে অনেক পরিবারে অর্থের প্রাচুর্য আছে, শিক্ষা দীক্ষার কোনো অভাব নেই তারপরও তাদের মধ্যে নীতি-নৈতিকতার অভাব থাকে যা কিনা সমাজে একটা বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলে।
আমরা দেখছি শুধু অর্থ থাকলেই হবে না, প্রাচুর্য থাকলেই হবে না তার সঠিক ব্যবহার এবং যথোপযুক্ত সেই সম্পদের সদ্ব্যবহার ও মূল্যায়ন সমাজে নিজেদের অবস্থান সবকিছু বিবেচনা করে জীবনবোধ চালানোটাই পারিবারিক শিক্ষা। আমরা অনেক সময় দেখতে পাই একটা পরিবারে অর্থের তেমন প্রাচুর্য নেই, স্বল্প আয় এর মধ্যে তারা সুস্থ স্বাভাবিকভাবে, মানসিক প্রশান্তি নিয়ে সন্তানদের মধ্যে খোলামেলা আলোচনার মাধ্যমে সুন্দর সুখী জীবনযাপন করছে। সবচেয়ে বড় কথা আত্মতৃপ্তি নিয়ে জীবনযাপন করাটাই হচ্ছে সুখী জীবনের মূল দীক্ষা।
পৃথিবীতে মানুষ স্বল্প সময়ের জন্য আসে তাই মানুষের চাওয়া পাওয়া, আকাঙ্খা সর্বোচ্চ থাকে, এটাই সত্য। তবে নিজের অবস্থান বুঝে, সামাজিক দায়বদ্ধতাকে বাদ না দিয়ে সমাজের আট দশটা মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে যদি পারস্পরিক সততা, সহযোগিতা এবং পরোপকারিতা একজন মানুষকে সমাজের মধ্যে সুপ্রতিষ্ঠিত করে তোলে আর ওই মানুষটার পারিবারিক প্রভাব অন্য সবার মধ্যে প্রভাবিত হয়। যা সমাজের ভালো ফলাফল ডেকে নিয়ে আসে।
পরিবার বলতে শুধু স্বামী-স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে এটা বোঝায় না। পরিবারে থাকে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, প্রতিবেশী যারা কিনা আপদে-বিপদে পাশে এসে দাঁড়ায় এবং নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বসবাস করার জন্য এই মানুষগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক রাখা প্রত্যেকটা পরিবারের মানবিক গুণাবলি। এই গুণাবলি থাকলে পারিবারিক কলহ এড়িয়ে চলা এবং পরস্পরের মধ্যে সম্মান বজায় থাকে। আমরা এখন প্রযুক্তি নির্ভর যান্ত্রিক যুগে বাস করছি। এই যুগে বাস করে পারিবারিক সম্পর্ক সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় পরিচালনা করা বড়ই দুষ্কর।
তারপরেও আমাদের প্রত্যেকটা পরিবারের নৈতিক দায়িত্ব পরিবার, কাজ, ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা। শুধু অর্থের পেছনে ছুটে সংসারের যে সুখ আসবে এমন কোনো কথা নেই। পরিবারকেও সময় দিতে হবে, গল্প করতে হবে, সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে বন্ধনকে দৃঢ় করার জন্য একে অপরের সমস্যা মনোযোগ সহকারে শুনতে হবে এবং সমাধানের পথ খুঁজতে হবে, কারো মধ্যে যেন অহমিকা বা দম্ভ কাজ না করে। যে কারণে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা একে অপরের সঙ্গে খোলামেলা হতে যেন সংকোচবোধ না করে।
পরিবারকে সুখী করার জন্য, নিজে সুখী হওয়ার জন্য প্রতিনিয়তই অনুশীলন করা প্রয়োজন। মানসিক, শারীরিক, সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করতে হবে। শুধু একক চিন্তাভাবনা করে অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কখনই পরিবারের মধ্যে তার প্রভাব বিস্তার করা ঠিক না। এতে করে পরিবারের আর সদস্যরা এই বিষয়গুলো আন্তরিক সহকারে গ্রহণ করছে কিনা এ বিষয়টাও খেয়াল রাখতে হবে। ইচ্ছামতো পরিবারের কর্তা যদি বাবা হয়ে থাকে সে তার চাওয়া পাওয়াকে মুখ্য করে পরিবারের অন্য সদস্যদের চিন্তা না করে চাপিয়ে দেয়া হয় তাহলে ভুল বোঝাবুঝি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এতে পরিবারের মধ্যে লুকোচুরি খেলা শুরু হয়, সেটার প্রভাব পরিবার শুধু না সমাজে এমনকি রাষ্ট্রে যে আঘাত করে। কেননা সমাজ এবং রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে যারা কিনা অগ্রগামী বা কর্ণধার তারা প্রত্যেকেই কোনো না কোনো পরিবারের সদস্য।
আরেকটি মূল্যবান বিষয় আমরা যারা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাস করছি অনুন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশ, এই সকল দেশের মধ্যে ধর্ম নিয়ে অনেক কুসংস্কার, অপসংস্কৃতি বিরাজ করে। সারা বিশ্ব এখন প্রযুক্তি নির্ভর, হাতের মুঠোয় রয়েছে পৃথিবী ফলে আমাদের মত উন্নয়নশীল এবং উন্নত দেশে প্রতিনিয়তই আমরা মানসিকভাবে অনেকটাই বিপর্যস্ত থাকি। সঠিকভাবে পারিবারিক জীবন চালানোর ক্ষেত্রে আমরা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগি। এই অসামঞ্জস্য সিদ্ধান্ত যা কিনা পরিবারে অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে প্রভাব ফেলে। এই প্রভাবের ফলে পারিবারিকভাবে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়।
নতুন প্রজন্ম যারা কিনা প্রতিনিয়তই নিজের দেশকে উন্নত দেশের সঙ্গে তুলনা করছে তারা একভাবে জীবন বোধ নিয়ে চিন্তা করছে আর আমরা যারা বয়োজ্যেষ্ঠ তারা অন্য ভাবে জীবন বোধের চিন্তা করছি। ফলে এই দুই প্রজন্মের মধ্যে দ্বদ্ব সৃষ্টি হওয়ার কারণে পরিবারে অনেক অশান্তি সৃষ্টি হয়। এই অশান্তিকে দূর করার জন্য আমাদের দরকার সমন্বয়। কেননা আগামী প্রজন্ম তারা নিজেদেরকে উন্নত দেশের সঙ্গে প্রতিনিয়ত তুলনা করছে ফলে তাদের চিন্তা-চেতনার সঙ্গে পরিবারের অন্য সব সদস্যের মতপার্থক্য থাকতেই পারে সেই ক্ষেত্রে পরিবারের প্রত্যেকটা সদস্যের উচিত একে অপরের সঙ্গে সমন্বয় করে একটি সাধারণ সিদ্ধান্ত নিয়ে পরিবার পরিচালনা করা। এতে করে পরিবারে কম অশান্তি হবে বলে আমার বিশ্বাস।
একটা মূল্যবান বিষয় আমরা কমবেশি সব পরিবারই এড়িয়ে যাই। সেটা হচ্ছে যখন আমার আপনার শিশু ছোট থাকে তখন তাদেরকে এত বেশি আদর, যত্ন, ভালোবাসা, আল্লাদ দিয়ে বড় করে যে দিয়ে বড় করি পরবর্তীতে সন্তান বড় হয় তাদের খরচ বাড়ে, তাদের ভাবনা-চিন্তা পার্থক্য ঘটে। এমন কি তাদের বয়স সন্ধিক্ষণকালে যে পরিবর্তনটা হয় সেই বিষয়টা আমরা পরিবারের সদস্যরা যত্ন সহকারে, মনোযোগ সহকারে খেয়াল করি না এবং তাদেরকে উপদেশ নির্দেশ দেই না। বিষয়টি এমন যৌন শিক্ষা সন্তানদের দেয়া একটা পাপের কাজ কিন্তু পরিবারে যদি সন্তানদের উপযুক্ত বয়সে যৌন শিক্ষাটা সঠিকভাবে যদি না দেই তারা কিন্তু বন্ধু-বান্ধব অন্য বিভিন্ন মাধ্যমে ভুল শিক্ষা টাই গ্রহণ করবে বা করে। কেননা নিষিদ্ধ যে কোনো জিনিসের প্রতি মানুষের আকর্ষণ বরাবরই বেশি। যে কারণে আমরা দেখতে পাচ্ছি অনেক পরিবারে যৌনশিক্ষা না থাকার কারণে যারা কিনা সঠিক বয়সে পরিণত হয়ে বিয়ে শাদি করছে তারা পারিবারিকভাবে দাম্পত্য জীবন সুখের করতে পারছে না।
এ বিষয়গুলো তারা সহজে সবার কাছে খোলামেলা বলতে পারে না। এখান থেকেই দাম্পত্য কলহ শুরু। যেমন মেয়ে সন্তানরা তাদের বয়ঃসন্ধিককালে কি পরিবর্তন হয়, মাসিক হয় সেই বিষয়গুলো মা তাকে সঠিকভাবে নির্দেশ দিতে পারে না, কারণ অনেক মায়ের বিয়ে হয়ে যায় অল্প বয়সে। ফলে সেও সঠিকভাবে বিষয়গুলো জানে তা কিন্তু না। ছেলে সন্তানদের সাথে মায়ের দূরত্ব বাড়ে, কিছু শেখাতে পারে না বাবারাও কেন জানি ছেলে বাচ্চার সঙ্গে খোলামেলা হতে পারে না। ফলে ছেলে বাচ্চাটাও পারিভাবিকভাবে যৌনশিক্ষা না পাওয়ার কারণে সেও কিন্তু সঠিকভাবে সংসার জীবন কীভাবে সুখের এবং শান্তিতে করা দরকার সেটাও সে বুঝতে পারে না।
এতে করে অনেক পরিবারে দেখা গেছে স্বামী-স্ত্রী উভয়েই পরকীয়ায় জড়িয়ে গেছে। আপনি অনুসন্ধান করুন, খুঁজতে যান দেখবেন মূল বিষয়টা হলো যৌন শিক্ষা। এই শিক্ষাগুলোকে যদি সঠিকভাবে উপস্থাপন এবং পরিচালনা করা যায় তাহলে দেশে ধর্ষণ, অপরাধ কর্ম অনেকটাই কমে যাবে। কেননা সৃষ্টির সব জীবের মধ্যে সৃষ্টিকর্তা যৌনতা দিয়েছেন। এটাকে শৈল্পিক এবং সৃজনশীল দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা উচিত। এটাকে অবহেলা করা বা লুকোচুরি করা, অন্যায় পথে ব্যবহার করার কোনই অবকাশ নেই। যদি আপনার সন্তানদের এ বিষয়ে পূর্ব জ্ঞান থেকে থাকে এর ভালো দিক এবং মন্দ দিক তাহলে দেখবেন তার মূল্যবান সময়গুলো অপচয় না করে ভালো সৃজনশীল, সৃষ্টিশীল কাজে ব্যবহার করছে। যার ফলাফল সমাজ, রাষ্ট্রে এবং দেশে সর্বত্র ভালো বয়ে আনবে।
তাই পারিবারিক ভাবে যদি আপনি আপনার সন্তানদের স্বশিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারেন তাহলে তারা কোনোক্রমেই যতই প্রযুক্তি, ডিজিটাল যুগ আসুক না কেন তারা সময়ের অপব্যবহার করবে না। নিজেদেরকেও অপসংস্কৃতিতে জড়াবে না। বর্তমানে কিন্তু আমরা সবাই দেখছি প্রযুক্তি সংসার জীবনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে। এটি যেমন সুযোগ সৃষ্টি করেছে তেমনি চ্যালেঞ্জের জীবন তৈরি করেছে। আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই সোশ্যাল মিডিয়াকে নানান অপকর্মে ব্যবহার করে থাকি। কেন করি পারিবারিকভাবে আমাদের সুশিক্ষা নাই, পারিবারিক সুস্থ শিক্ষাটা বড় প্রয়োজন।
বর্তমানে মিডিয়ার জগতে আরো বেশি প্রয়োজন সব বিষয়েই খোলামেলা এবং বস্তুনিষ্ঠ সঠিক তথ্যটা জানা। প্রয়োজনে বাবা-মা হওয়ার আগে নিজেদেরকে তৈরি করতে হবে, আমি কতটুকু সন্তান পালনে নিজেকে দক্ষ করে তুলতে পারেছি। অনেক পরিবারে দেখা গেছে বা এখনো দেখছি ছেলে মেয়ের ইচ্ছা-অনিচ্ছাকে দাম না দিয়ে নিজেদের ইচ্ছাটাকে চাপিয়ে দেয় সন্তানদের উপর। সোশ্যাল মিডিয়াতে সন্তানরা যত না সরব, তার চেয়ে বাবা-মাই যেন সন্তানের প্রচারণায় মহাব্যস্ত। এজন্য একটা প্রতিযোগিতা এটা কিন্তু সুস্থ ধারার সংস্কৃতি চর্চা নয়। এসব ক্ষেত্রে অনেক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
আমরা হয়তো সেই বিষয়টা মাথায় নেই ন। তাই সোশ্যাল মিডিয়া অনেক ক্ষেত্রে আপনার পারিবারিক জীবনে অশান্তি বয়ে নিয়ে আসে। এই অশান্তি থেকে দূরে থাকতে হলে পারিবারিকভাবে সুসংগঠিত হতে হবে। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে খোলামেলা এবং সুস্থ ধরার চর্চা করতে হবে। কে কি করছে, না করছে সেদিকে না তাকিয়ে, নিজেকে একজন মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে তৈরি করার ক্ষেত্রে পরিবারের মধ্যে সৃজনশীলতার চর্চা করতে হবে, এতে সন্তানদের মধ্যে সুস্থ ধরা এবং আত্মনির্ভরশীলতা বেড়ে যাবে। কথায় আছে - ‘চেনা বামুনের পুইত্তা লাগে না’।
সেজন্য পিতা মাতাকে একটু বাড়তি সময় সন্তানদের সঙ্গে দিতে হবে, বন্ধু হতে হবে, দেখবেন আপনার পরিবারটা অনেক সুখে সমৃদ্ধিতে ভরে উঠেছে। এমনকি একটা সময় আপনার পরিবারটাই আইকন হয়ে সবার কাছে ধরা দেবে। তাই আসুন আমরা আমাদের সংসার জীবনটা সুখে-শান্তিতে ভরে তুলি। কোনরকম অশুভ শক্তি পারিবারিক জীবনকে অশান্তিতে পরিণত না করে। সেই দিকে মনোযোগ দেই।
পরিশেষে বলতে চাই সংসারে সুখী এবং পরিবারের শান্তি বজায় রাখার জন্য আধুনিক প্রযুক্তি সদ্ব্যবহার, যৌনতা সংক্রান্ত শিক্ষার গুরুত্ব, আর্থিক স্থিতিশীলতা, পারিবারিক বোঝাপড়া এবং সময় ব্যবস্থাপনার দিকে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে।
আমাদের বাংলাদেশে কিছু সীমাবদ্ধতা থাকলেও প্রযুক্তির উন্নয়ন সংসার জীবনকে আরো সহজ ও সুখময় করতে সাহায্য করবে। এখানে পশ্চিমা দেশগুলোতে ব্যক্তি স্বাধীনতা ও আত্মনির্ভরশীলতা বেশি। সেখানে বাংলাদেশে পরিবার কেন্দ্রিকতা বেশি। তবে পারিবারিক বন্ধন মজবুত হলে,ব্যক্তিগত স্বাধীনতার কিছুটা অভাব দেখা দিলেও অন্যান্য দেশের সংসার জীবনের সঙ্গে আমাদের দেশের সংসার জীবনের পুরাপুরি তুলনা না করে যেটা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ, গ্রহণযোগ্য সেটাই পরিবারের আর সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয় করে পারিবারিক জীবনটাকে সুখময় করে তোলা দরকার।
লেখক: শিক্ষক ও কলামিস্ট
Comments