Image description

আর্থিক সংকট থেকে মুক্ত থাকতে ব্যয় সাশ্রয়ে সরকার আট দফা নীতি ঘোষণা করেছে। কিন্তু এসব দফার একটিও মানা হচ্ছে না। সরকারের কোনো দপ্তরেই আট দফা বাস্তবায়নের চিত্র দেখা যায় না। 

গত বৃহস্পতিবার শেষ হলো ডিসি সম্মেলন। এবারের সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী দিনে প্রধানমন্ত্রী প্রশাসনের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে সবচেয়ে বেশি জোর দিয়ে যে মেসেজ দেন সেটি হচ্ছে- সরকারি অর্থ সাশ্রয় করা। 
তিনি বলেন, আর্থিক সংকট সব দেশেই আছে। তবে সে কারণে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনার প্রকল্প বাতিল করা হয়নি। এই সময়ে ইভিএমের চেয়ে সরকার খাদ্য-চিকিৎসার মতো বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিচ্ছে। এ জন্য অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যে একটি মেসেজ পরিষ্কার, সেটি হলো- সংকটের সময় সরকারি অর্থ সাশ্রয় করতে হবে। অথচ বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। সরকারের সাশ্রয়নীতি শুধু কাগজ-কলমেই রয়েছে, বাস্তবে তার লেশমাত্র নেই। বিষয়টি অনেকটা ‘ওপরে ফিটফাট, ভেতরে সদরঘাট’-এর মতো অবস্থা।

মহামারি করোনার পর থেকেই সরকার সাশ্রয়নীতি গ্রহণ করে। গত বছরের ২০ জুলাই সরকারের ব্যয় সাশ্রয়ে সরকারি সব দফতরে বিদ্যুতের ২৫ শতাংশ ব্যবহার কমানো, জ্বালানি খাতের বাজেট বরাদ্দের ২০ শতাংশ কম ব্যবহার করা, সরকারি কর্মকর্তাদের গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার না করাসহ মোট আট দফা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর জন্য পরিপত্রও জারি করা হয়। মূলত সরকারের ব্যয় সংকোচন নীতি হিসেবে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তখন। সেদিন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সরকারের ব্যয় সাশ্রয়ে কার্যকর কর্মপন্থা নিরূপণে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস। সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু এসব সিদ্ধান্তের কোনোটিই এখন আর মেনে চলা হচ্ছে না। ফলে সরকারের সাশ্রয়নীতি কার্যকর নেই বললেই চলে।

এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর গত বৃহস্পতিবার সময়ের আলোকে বলেন, সরকারের সাশ্রয় নীতি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই মানছেন না- এটা খুবই দুঃখজনক। আসলে প্রশাসনের ওপর সরকারের কন্ট্রোল থাকার দরকার আছে। এখানে অনেক ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো- যারা সরকারি চাকরি করেন, হোক সেটি একেবারে উচ্চ পদ, বা নিচের পদ- তারা ব্যক্তিগত সুযোগ-সুবিধা নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো রকম ছাড় দেন না। এ কারণে দেশে প্রশাসন চালানোর ব্যয় বেড়ে গেছে অস্বাভাবিক। যা অনেক ক্ষেত্রে ভারতের চেয়েও বেশি। কিছু কিছু বিষয় থাকে- যেখানে সরকারকে ব্যয় করতেই হবে, এর কোনো বিকল্প নেই। যেমন সরকারের ঋণের সুদ দিতেই হবে। কিন্তু এমন কিছু সরকারি খাত আছে যেখানে সাশ্রয়ের সুযোগ রয়েছে। অথচ সেখানে সাশ্রয় করা হচ্ছে না।

তিনি বলেন, সরকারি ব্যয় সাশ্রয়ের সবচেয়ে বড় খাত হলো- দেশীয় অর্থে কোনো প্রকল্পে এখন আর বেশি ব্যয় না করা। বিদেশি অর্থায়নের প্রকল্পগুলোতে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। কিন্তু আমাদের দেশে করা হচ্ছে ঠিক তার উল্টো। বিদেশি প্রকল্প বাদ দিয়ে দেশি প্রকল্পে জোর দিচ্ছে সরকার। তাহলে অর্থ সাশ্রয় হবে কীভাবে। অন্যদিকে সরকারি কর্মকর্তারা ব্যক্তিগত গাড়ি কেনার জন্য স্বল্প সুদে ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা ঋণ পেতে  পারেন। সেই ঋণের টাকায় গাড়ি কিনে নিজে ও পরিবারের লোকেরা ব্যবহার করেন। আবার সরকারের উচ্চ কর্মকর্তা হওয়ায় তার নামে সরকারি গাড়িও বরাদ্দ দেওয়া হয়। 

এ বিষয়েও আপত্তি তুলে ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের জন্যই কেন এত সুযোগ-সুবিধা থাকতে হবে। যার জন্য স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে, তাকেই কেন আবার সরকারি গাড়ি দেওয়া হবে। এত দিন যা হওয়ার হয়েছে- এখন সরকারকে এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সরকার যদি প্রকৃত অর্থেই অর্থ সাশ্রয় করতে চায়, তাহলে এ ধরনের কঠিন কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হবে। 

তিনি আরও বলেন, আমরা বিভিন্ন সময় দেখছি, প্রধানমন্ত্রী অর্থ সাশ্রয়ের জন্য সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশনা দিয়েছেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য প্রধানমন্ত্রীর এসব নির্দেশনা পালন করছেন না সরকারি কর্মকর্তারা। আসলে প্রধানমন্ত্রী দেশের ও দেশের মানুষের কল্যাণের কথা ভেবে এসব নির্দেশনা দিচ্ছেন, কিন্তু তারা মানছেন না। সরকারি কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীর এসব নির্দেশনা মানলে তো কোনো সমস্যাই থাকার কথা না।

তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অধিশাখা) মো. আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবীর সরকারের সাশ্রয় নীতির বিষয়ে সময়ের আলোকে বলেন, অনেক ক্ষেত্রেই সরকারি সাশ্রয় নীতি মেনে চলা হচ্ছে, তবে পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা এখনও সম্ভব হয়নি। বিষয়টি আমরা প্রতিনিয়ত একেবারে প্রশাসনের কেন্দ্র থেকে মাঠ পর্যায়ে নির্দেশনা দিচ্ছি, সেভাবে অর্থ সাশ্রয় করেই বরাদ্দ দিচ্ছি। প্রায় ২০ শতাংশ অর্থ সাশ্রয় করে তবেই আমরা বরাদ্দ দিচ্ছি।

সাশ্রয়নীতির একটি বলা হয়েছিল, সরকারি কর্মকর্তারা সরকারি গাড়ি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কাজে ব্যবহার করতে পারবেন না, কিন্তু সেটিও তো মানা হচ্ছে না। 

এ বিষয়ে তিনি বলেন, এটি দীর্ঘদিনের অভ্যাস, হুট করে কি আর পরিবর্তন করা যায়। এসব অভ্যাস পরিবর্তন হতে আরও সময় লাগবে। আস্তে আস্তে অবস্থার পরিবর্তন হবে। যেকোনো পরিবর্তনই পুরোপুরি বাস্তবায়ন হতে কিছুটা সময় লাগে। 

চতুর্মুখি সংকটকে মোকাবিলা করার জন্য সরকার সাশ্রয়নীতি গ্রহণ করেছে। এ লক্ষ্যে সরকার ব্যয় সাশ্রয়ে কার্যকর কর্মপন্থা ঠিক করে। গত ২০ জুলাই সরকারের ব্যয় সাশ্রয়ে কার্যকর কর্মপন্থা নিরূপণে বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস এ বিষয়ে একটি গাইডলাইন প্রকাশ করেন। সরকারের ব্যয় সাশ্রয়ে সরকারি সব দফতরে বিদ্যুতের ২৫ শতাংশ ব্যবহার কমানো এবং জ্বালানি খাতের বাজেট বরাদ্দের ২০ শতাংশ কম ব্যবহারের জন্য পরিপত্র জারি করাসহ মোট আট দফা সরকারি সিদ্ধান্তের কথা সেদিন জানান তিনি। মূলত সরকারের ব্যয় সংকোচন নীতি হিসেবে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে আরও ছিল- অনিবার্য না হলে শারীরিক উপস্থিতিতে সভা পরিহার করতে হবে। অধিকাংশ সভা অনলাইনে করতে হবে। অত্যাবশ্যক না হলে বিদেশ ভ্রমণ যথাসম্ভব পরিহার করতে হবে। খাদ্যদ্রব্যসহ নিত্যপণ্যের মূল্য সহনীয় রাখতে বাজার মনিটরিং, মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে মজুদদারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ অন্যান্য পদক্ষেপ জোরদার করতে হবে।

এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী পরিবহনে ব্যক্তিগত যানবাহনের ব্যবহার যৌক্তিকীকরণের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে। আর অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ বাড়াতে অর্থ বছরের শুরু থেকেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে এবং লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ছাড়া প্রতিটি মন্ত্রণালয় নিজস্ব ক্রয় পরিকল্পনা পুনঃপর্যালোচনা করে রাজস্ব ব্যয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করবে।

এখন নজর দেওয়া যাক সরকারের এসব সাশ্রয়নীতি কতটা মেনে চলা হচ্ছে। বাস্তবতা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউস যে আট দফা সাশ্রয়নীতি ঘোষণা করেছিলেন তার একটিও ঠিক মতো মেনে চলা হচ্ছে না। সরকারের এসব সাশ্রয়নীতি এখন শুধু কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ রয়েছে।

এখন নজর দেওয়া যাক সরকারের সাশ্রয়নীতির ৮ দফার বাস্তবায়নের দিকে। সাশ্রয়নীতির প্রথমটি হলো- বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে আনতে সব মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় কর্মপন্থা নিরূপণ করবে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিদ্যুৎ ও জ¦ালানি মন্ত্রণালয় ছাড়া আর কোনো মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় কর্মপন্থা এখনও ঠিক করেনি।

সাশ্রয়নীতির দ্বিতীয় বিষয়টি ছিল- সরকারি সব দফতরে বিদ্যুতের ২৫ শতাংশ ব্যবহার হ্রাস করতে হবে। সরকারের এ নীতি বাস্তবায়নে সরকারি অফিস সময় কমিয়ে এনে সকাল ৯টা থেকে ৪টা পর্যন্ত করা হয়েছে। এতে হয়তো কিছুটা বিদ্যুৎ সাশ্রয় হচ্ছে। তবে বাস্তবতা হচ্ছে সচিবালয়সহ সরকারের অনেক দফতরই বিকাল ৪টার পরও সন্ধ্যা ৫টা থেকে ৬টা পর্যন্তও খোলা থাকছে। ফলে এ সাশ্রয়নীতির প্রকৃত সুফল মিলছে না। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বেশ কয়েকবার বলেছেন সরকারি অফিসে এসির ব্যবহার কমাতে, প্রয়োজনে বন্ধ রাখতে। কিন্তু সচিবালয়ের সচিবের দফতর থেকে শুরু করে কোনো দফতরেই এসি বন্ধ রাখা হয় না। সচিবালয়সহ সরকারি বিভিন্ন দফতরে গত কয়েক দিন ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। এমনও চোখে পড়েছে অনেক দফতরের অনেক কক্ষে একজন লোকও নেই, কিন্তু ফ্যান চলছে চার-পাঁচটি। ফলে ২৫ শতাংশ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের নীতিও ঠিক মতো মেনে চলা হচ্ছে না।

সাশ্রয়নীতির তৃতীয় দফায় বলা ছিল- জ্বালানি খাতের বাজেট বরাদ্দের ২০ শতাংশ কম ব্যবহারের লক্ষ্যে অর্থ বিভাগ প্রয়োজনীয় পরিপত্র জারি করবে। অর্থ বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সে পরিপত্র জারি করা হলেও তা মানা হচ্ছে না ঠিকমতো।

চতুর্থ দফায় বলা ছিল- অনিবার্য না হলে শারীরিক উপস্থিতিতে সভা পরিহার করতে হবে এবং অধিকাংশ সভা অনলাইনে আয়োজন করতে হবে। সরকারের এ সাশ্রয়নীতি এখন একেবারেই মেনে চলা হচ্ছে না। করোনাকালীন যেভাবে প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয় বা দফতর সব সভা অনলাইনে করেছে- এখন সেভাবে করা হচ্ছে না। প্রায় সব মন্ত্রণালয় ও দফতরে এখন সশরীরেই সভাগুলো হচ্ছে। অনলাইনে করা গেলে, একদিকে যেমন বিদ্যুতের সাশ্রয় করা যেত, অন্যদিকে অর্থেরও সাশ্রয় হতো। কারণ অনলাইন সভার চেয়ে সশরীরে সভায় বিদ্যুৎ ও অর্থ-উভয়ই বেশি খরচ হয়। সুতরাং এই সাশ্রয়নীতিটিও মেনে চলা হচ্ছে না।

সাশ্রয়নীতির পঞ্চম দফায় বলা হয়েছিল- অত্যাবশ্যক না হলে বিদেশ ভ্রমণ যথাসম্ভব পরিহার করতে হবে। বাস্তবতা হচ্ছে সরকারের এই সাশ্রয়নীতিকে এখন আর আমলেই নেওয়া হচ্ছে না। কারণ প্রশিক্ষণের নামে, অভিজ্ঞতা অর্জনের নামে বা কেনাকাটা করার নামে এখন প্রতি মাসেই সরকারের কোনো না কোনো দফতরের কর্মকর্তারা বিদেশ সফরে যাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, একনেকে যেসব প্রকল্প উপস্থাপন করা হচ্ছে তার অধিকাংশতেই থাকছে বিদেশ সফরের সুযোগ।

সরকারের সাশ্রয়নীতির ষষ্ঠ দফায় বলা ছিল, খাদ্যদ্রব্যসহ নিত্যপণ্যের মূল্য সহনীয় রাখতে বাজার মনিটরিং, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মজুদদারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ অন্যান্য পদক্ষেপ জোরদার করতে হবে। সরকারের এ নীতিরও সঠিক কোনো প্রয়োগ নেই। শুধু জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর ঢাকাসহ জেলা পর্যায়ে কিছু অভিযান পরিচালনা করছে। কিন্তু জনবল সংকটসহ নানা সীমাবদ্ধতায় সংস্থাটির এই টুকটাক বাজার অভিযান ভোক্তার কোনো কাজে আসছে না। বৈশ্বিক সংকটের কথা বলে ব্যবসায়ীরা দফায় দফায় অস্বাভাবিক হারে পণ্যমূল্য বাড়িয়ে চললেও তার কোনো প্রতিকার মিলছে না। চাল, ডাল, তেল, চিনি, মাছ-মাংস, ডিম, দুধ- সবকিছু দাম বাড়তে বাড়তে দেশের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। কার্যকর কোনো উদ্যোগ না থাকায় উচ্চ পণ্যমূল্যের চাপে নিষ্পেষিত হতে হচ্ছে দেশের মানুষকে। এমনটিই মত বাজার বিশ্লেষকদের।

সাশ্রয়নীতির সপ্তম দফায় বলা হয়েছিল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী পরিবহনে ব্যক্তিগত যানবাহনের ব্যবহার যৌক্তিকীকরণের লক্ষ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবে। বাস্তবতা হচ্ছে- আজ অবধি সরকারের এ নির্দেশনার বিন্দুমাত্র বাস্তবায়ন হয়নি। ব্যক্তিগত যানবাহনেই অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যায়। এতে এক দিকে যেমন যানজট কমছে না, অন্যদিকে জ¦ালানি ও অর্থের সাশ্রয়ও হচ্ছে না।

সরকারের সাশ্রয়নীতির অষ্টম দফায় বলা হয়েছিল, অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ বৃদ্ধিকল্পে অর্থ-বছরের শুরু থেকেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে এবং লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এনবিআরকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। কিন্তু রাজস্ব বোর্ড সেভাবে আয় বাড়াতে পারছে না।

অর্থাৎ সরকারের আয় বৃদ্ধির এই পন্থাও ঠিক মতো মানা যাচ্ছে না। এভাবে সরকারের সাশ্রয়নীতির একটি দফারও সঠিক বাস্তবায়ন নেই। যার কারণে সরকার উদ্যোগ নিলেও সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর দায়িত্বহীনতার কারণে এর সুফল মিলছে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।