
সরকারের দেড় দশকের শাসনামলে পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত ৭৮ জন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দেওয়ার সুপারিশ করেছে একটি পর্যালোচনা কমিটি। বুধবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে কমিটির আহ্বায়ক ও সাবেক অর্থসচিব জাকির আহমেদ খান এই সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেন।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এই সুপারিশ প্রশাসন ক্যাডার ছাড়া অন্যান্য ক্যাডারের তৃতীয় গ্রেড বা তার উপরের পদের কর্মকর্তাদের জন্য প্রযোজ্য।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মনে করে, ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৪ আগস্টের মধ্যে প্রশাসনের আড়াই হাজারের বেশি কর্মকর্তা বঞ্চনার শিকার হয়েছেন। তাদের চাকরিতে ফিরিয়ে আনা বা প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর পাঁচ সদস্যের এই কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরাও রয়েছেন।
কমিটি দুটি ধাপে তাদের কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। প্রথম ধাপে, উপসচিব ও তার ওপরের পদের বঞ্চিত কর্মকর্তাদের আবেদন পর্যালোচনা করে গত বছরের ১০ ডিসেম্বর একটি প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। দ্বিতীয় ধাপে, প্রশাসন ক্যাডার ছাড়া অন্যান্য ক্যাডারের তৃতীয় গ্রেড বা তার উপরের পদের জন্য আবেদন আহ্বান করা হয়েছিল।
সর্বমোট ৩১৮টি আবেদন জমা পড়েছিল, যার মধ্যে ১০৮টি আবেদন বিভিন্ন কারণে বিবেচনার যোগ্য বলে বিবেচিত হয়নি। বাকি ২১০টি আবেদন নিয়ে কমিটি ১৪টি সভা করে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে। প্রতিটি ক্যাডারের আবেদন বিবেচনার সময় সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার প্রতিনিধিকে সভায় অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং তাদের সুপারিশ গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়।
কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, গ্রেড-১ পদে ১২ জন, গ্রেড-২ পদে ৩২ জন এবং গ্রেড-৩ পদে ৩৪ জন কর্মকর্তাকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দেওয়া যেতে পারে। এই সুপারিশের ভিত্তিতে ৬ জন কর্মকর্তাকে ৩ ধাপ, ১৭ জনকে ২ ধাপ এবং ৫৫ জনকে ১ ধাপ পদোন্নতি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে ১৩২ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতির সুপারিশ করা হয়নি এবং এর কারণও সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
Comments