Image description

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত শিশু রাইসা মনিকে (৯) গ্রামবাসীর চোখের জলে চিরবিদায় জানানো হয়েছে। শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকালে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বাজড়া দক্ষিণ পাড়া ঈদগাহ ময়দানে জানাজার পর বাজড়া শামসুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানা কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

রাইসা ছিল আলফাডাঙ্গার বাজড়া গ্রামের শাহাবুল শেখ ও রাবেয়া খাতুন দম্পতির মেয়ে। পরিবার-পরিজন নিয়ে রাইসার বাবা শাহাবুল শেখ উত্তরার নয়ানগরে ভাড়া বাসায় থাকতেন। তিন ভাই-বোনের মধ্যে রাইসা ছিল মেজ। সে উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। তার বড় বোন সিনথিয়া (১৪) একই স্কুলের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে এবং ভাই রাফসান (৪) সবার ছোট। রাইসার অকাল মৃত্যুতে পরিবার ও এলাকাবাসী গভীরভাবে শোকাহত।

মাইলস্টোন স্কুলে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের পর থেকে নিখোঁজ ছিল রাইসা মনি। দুর্ঘটনার পর থেকে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) শিশুটির মুখমণ্ডলের অংশবিশেষ দেখে রাইসা হিসেবে দাবি করেন বাবা শাহাবুল শেখ (৪৪)। মঙ্গলবার বিকেলে ডিএনএ সংগ্রহ করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ডিএনএ প্রতিবেদনে রাইসার লাশ শনাক্ত হলে বৃহস্পতিবার রাতে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।

শুক্রবার সকালে রাইসার লাশ ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বাজড়া গ্রামে পৌঁছালে এলাকায় মাতম শুরু হয়। সকাল থেকেই নিহত রাইসার বাড়িতে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসীর আহাজারি চলছিল। আকস্মিক মৃত্যুতে বাক্‌রুদ্ধ গ্রামবাসী। রাইসার লাশ গ্রামে আসার পর কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। পরে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়। জানাজায় আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসেল ইকবাল, সেনাবাহিনীর সদস্য ও এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।

রাইসার চাচা ইমদাদুল শেখ বলেন, ‘রাইসাকে আজ ভোররাতে গ্রামের বাড়িতে আনা হয়। সকাল সোয়া ৯টায় জানাজা সম্পন্ন করে স্থানীয় কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়েছে।’

স্থানীয় গোপালপুর ইউপির ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য ওবায়দুর রহমান বলেন, রাইসা মনির অকালমৃত্যুতে পুরো এলাকার মানুষ শোকে হতবিহ্বল। তার মরদেহ বাড়িতে পৌঁছানোর পর হৃদয়বিদারক দৃশ্য তৈরি হয়। এমন কোনো মানুষ নেই, কাঁদেননি। গ্রামবাসী এমন মৃত্যু আগে কখনো দেখেননি।