Image description

উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের মূল ফটক এখন তালাবদ্ধ। দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ রয়েছে শিক্ষা কার্যক্রম, ক্যাম্পাসে নেই কোনো শিক্ষার্থীর উপস্থিতি। প্রতিষ্ঠানটির সামনে গেটের বাইরের রাস্তাজুড়ে অবস্থান করছেন অনেক অভিভাবক, উৎসুক জনতা ও গণমাধ্যমকর্মীরা। 

বুধবার সকালে প্রতিষ্ঠানটির সামনে গিয়ে এ চিত্র দেখা যায়।

খুব সকালে একটু ফাঁকা থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন বয়সী মানুষ জড়ো হচ্ছেন। কেউ মোবাইল ফোনে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন। গণমাধ্যমের ক্যামেরাগুলো স্থির হয়ে আছে তালাবদ্ধ সেই গেটের দিকে। মাঝে-মধ্যে ভেতর থেকে কেউ বের হলে ছুটে যাচ্ছে ক্যামেরা আর মাইক্রোফোন।

স্থানীয় এক বাসিন্দা বললেন, দুই দিন আগেও যেখানে শিশুরা খেলাধুলা করত, সেখানে এখন তালা ঝুলছে। কেউ ভেতরে ঢুকতে পারছে না। মনটা বারবার টানছে, ভেতরে ঢুকে একটু দেখে আসি।

গেটের ভেতরে কলেজ মাঠে বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও নিরাপত্তাকর্মীরা রয়েছেন। কেউ ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে বাধা দেওয়া হচ্ছে। গণমাধ্যমকর্মীরা অনেকেই ক্যাম্পাসে প্রবেশের অনুমতি না পেয়ে বাইরে থেকেই ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করছেন।

এদিকে, যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় হতাহতদের প্রকৃত সংখ্যা নিরূপণ এবং আহত, নিহত ও নিখোঁজদের নাম-ঠিকানাসহ তালিকা তৈরিতে ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জিয়াউল আলমকে সভাপতি করে গঠিত এই কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন—উপাধ্যক্ষ (প্রশাসন) মো. মাসুদ আলম, প্রধান শিক্ষিকা খাদিজা আক্তার, কো-অর্ডিনেটর লুৎফুন্নেসা লোপা, অভিভাবক প্রতিনিধি মনিরুজ্জামান মোল্লা (শিক্ষার্থী: যাইমা জাহান, চতুর্থ শ্রেণি), এবং দ্বাদশ শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী—মারুফ বিন জিয়াউর রহমান ও মো. ভাসনিম ভূঁইয়া প্রতিক। কমিটিকে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সরাসরি ঘটনাস্থল পরিদর্শন, সংশ্লিষ্ট পরিবারদের সঙ্গে যোগাযোগ এবং নিশ্চিত তথ্য যাচাই করে তালিকা প্রস্তুত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২১ জুলাই (সোমবার) দুপুরে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিধ্বস্ত হয়। এতে বহু শিক্ষার্থী হতাহত হন। এখন পর্যন্ত ৩২ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে হাসপাতালগুলো। মর্মান্তিক এই ঘটনার পরদিন রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালন করা হয়। মানবিক বিবেচনায় স্থগিত করা হয় এইচএসসি ও সমমানের সব পরীক্ষা।