Image description

বিশেষজ্ঞের বরাত দিয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, ‘বিশেষজ্ঞরা সুপারিশ করেছেন কিছু লোডশেডিং দেওয়ার জন্য। না হলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে।’ তবে উপদেষ্টা বলেছেন আমরা তা সহনীয় পর্যায়ে রাখার চেষ্টা করব। এক্ষেত্রে শহর ও গ্রামে সমানভাবে লোডশেডিং করা হবে বলে জানান তিনি। 

রোববার সচিবালয়ে গ্রিড বিপর্যয় নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে সাড়ে ১৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। গরমের কারণে সামনে ১৮ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত চাহিদা বাড়বে। তখন তেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলোতে উৎপাদন আরো বাড়ানো হবে।’ 

এ সময় তিনি জানান, বিশেষজ্ঞরা সুপারিশ করেছেন কিছু লোডশেডিং দেওয়ার জন্য। না হলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে। 

উপদেষ্টা বলেন, ‘যে হারে এসি লাগানো হচ্ছে সে হারে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়েনি। অনেকে বিনা কারণে লাইট, ফ্যান ও এসি চালু করে রাখে।’ 

এ সময় তিনি জানান, দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল ও খুলনায় ২৬ এপ্রিল গ্রিড বিপর্যয়ের কারণ তদন্তে ৮ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়। কমিটির প্রধান করা হয়েছে বুয়েটের উপ-উপাচার্য আবদুল হাসিব চৌধুরীকে। তদন্ত কমিটি গ্রিড বিপর্যয়ের কারণের জন্য কারা দায়ী তা খতিয়ে দেখবে। কোনো ষড়যন্ত্র আছে কিনা তাও তদন্ত করবে। ভবিষ্যৎ করণীয় বিষয়ে সুপারিশ করবে কমিটি। এসব কার্যক্রম শেষে সাত কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেবে কমিটি। 

উপদেষ্টা বলেন, ‘গ্রিডের স্ট্যাবলিটির জন্য কাজ করছে মন্ত্রণালয়। বিদ্যুৎ সরবরাহে এখন কোনো সংকট নেই।’ 

মেট্রোরেল ১ ঘণ্টার জন্য বন্ধ থাকার কারণ খতিয়ে দেখতে বুয়েটের অধ্যাপক শামসুল হককে প্রধান করে কমিটি গঠন করেছে মন্ত্রণালয়। 

উপদেষ্টা জানান, মেট্রোরেল ১ ঘণ্টার জন্য বন্ধ থাকার কারণ বিদ্যুৎ সংকট। কমিটি তা খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দিবে।

মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘আমাদের গ্যাসের উৎপাদন কমে যাচ্ছে, আবার এলএনজি আনতে যে আর্থিক সামর্থ প্রয়োজন তাও কম। তাই চাহিদা অনু্যায়ী গ্যাস দেওয়া যাচ্ছে না।’

পিজিসিবি ও পিডিবি জানিয়েছে ২৬ এপ্রিল আমিনবাজার-গোপালগঞ্জ সার্কিট লাইনের ৪০০ কিলোভোল্টের দুটি তার কাছাকাছি এসে শর্ট সার্কিট হয়ে সমস্যা তৈরী হয়।

গ্রিড বিপর্যয়ের কারণে দেশের বরিশাল ও খুলনা বিভাগের কয়েকটি জেলা প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বিদ্যুৎহীন হয়ে যায়। অবশ্য শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে কিছু কিছু জেলায় বিদ্যুৎ ফিরতে শুরু করে। গ্রিড বিপর্যয়ের কারণে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির আওতাধীন খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা বাগেরহাট, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা ভোলা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী এই ১৫ জেলা বিদ্যুৎহীন হয়ে যায়। এসব স্থানে ১৫ মিনিট থেকে ৯৬ মিনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। সন্ধ্যা সোয়া ৭টা থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে শুরু করে এবং রাত সাড়ে আটটার পর সরবরাহ স্বাভাবিক হয়।