Image description

শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখতে নিয়মিতভাবে ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরা গ্রহণ প্রাকৃতিক ওষুধের কাজ করে। অতি স্বল্প মূল্যের মধ্যে হাতের নাগালে ঔষধি এই ভেষজ উদ্ভিদের বিভিন্ন গুণের জন্য পাঁচ হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে মানুষ সেবন করে আসছে। 

বেশ কিছু গবেষণায় প্রমাণ হয়েছে, ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে অ্যালোভেরার যেমন বিকল্প নেই, তেমনি এই প্রাকৃতিক উপাদানটিকে কাজে লাগিয়ে অনেক রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। প্রতিদিন অ্যালোভেরার রস বা জুস পান করলে ত্বক, চুল ও দেহকে পরিশুদ্ধ করে প্রাণবন্ত করে তোলে।

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যালোভেরা জুস খাওয়া মাত্র সারা শরীরে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের প্রভাব বেড়ে যায়, যে কারণে শরীরের প্রতিটি অঙ্গের পাশাপাশি হার্টের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রাও হ্রাস পায়। 

ফলে হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও দূর হয়। খাদ্য তালিকায় এই উপাদানটি রাখলে শরীরের যেকোনো চোট-আঘাত লাগলে সেই ক্ষত সারতে সময় লাগবে না। কারণ অ্যালোভেরা জুসে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান শরীরে প্রবেশ করা মাত্র যেকোনো ধরনের ক্ষত সারিয়ে তোলে। ক্ষতের উপরে অ্যালোভেরা জেল লাগালেও সমান উপকার পাওয়া যায়। 

হরমেনাল সমস্যার স্থায়ী কোনো চিকিৎসা না থাকলেও অ্যালোভেরা দেহের সকল হরমোন নিঃসরণের মাত্রা ঠিক রাখে। প্যানক্রিয়াস সংক্রান্ত নানা রোগের চিকিৎসাতেও এই প্রাকৃতিক উপাদানটি বিশেষ ভ‚মিকা পালন করে থাকে। নিয়মিত এই প্রাকৃতিক উপাদানটি খাওয়া শুরু করলে শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং মিনারেলের ঘাটতি দূর হয়। সেই সঙ্গে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের ঘাটতিও দূর হতে থাকে। 

প্রসঙ্গত, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হলো সেই উপাদান, যা আমাদের শরীরকে রোগ মুক্ত রাখতে বিশেষ ভ‚মিকা পালন করে থাকে। অ্যালোভেরা জেল যদি তুলসি, করলা অথবা আমলকীর রসের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন, তাহলে আরও বেশি উপকার মেলে। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে এই জুস শরীরে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের পরিমাণ এত বৃদ্ধি করে যে দেহের প্রতিটি কোনায় জমতে থাকা টক্সিক উপাদান বেরিয়ে যেতে শুরু করে। 

প্রসঙ্গত, এসব টক্সিক উপাদানের মাত্রা যদি বৃদ্ধি পেতে থাকে, তাহলে শরীরের প্রতিটি অঙ্গের কর্মক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। নিয়মিত এই প্রাকৃতিক উপাদানটি গ্রহণ করলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এতটা শক্তিশালী হয়ে ওঠে যে সর্দি-কাশি থেকে শুরু করে ছোট-বড় কোনো রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। সেইসঙ্গে সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে। 

হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটাতে এই ভেষজ উপাদানটি শরীরে প্রবেশ করার পর পাচক রসের ক্ষরণ এতটা বাড়িয়ে দেয় যে বদ-হজমের মতো রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। সেইসঙ্গে অ্যাসিডিটি এবং কনস্টিপেশনের মতো সমস্যাও কমতে শুরু করে। অনেক নারীই অ্যানিমিয়ায় ভুগছেন।