
রাজশাহীর চারঘাটে ঈদ উপলক্ষ্যে আতশবাজি নিয়ে দুই বন্ধুর সংঘর্ষে আশিক ইসলাম নামে এক কলেজছাত্র খুনের ঘটনায় একই পরিবারের তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার দুপুরে রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহা. মহিদুজ্জামান এই রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, আশিক ইসলামের বন্ধু ও প্রধান অভিযুক্ত চারঘাট উপজেলার ডালিপাড়া গ্রামের আশিক আলী ও তারা বাবা কালাম আলী এবং বড় ভাই আরিফ আলী। রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মুন্সি আবুল কালাম আজাদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের জুলাই মাসে কোরবানির ঈদের আগের দিন রাত ৮টার দিকে আশিক ইসলাম ও তার বন্ধুরা স্থানীয় কাঁকড়ামারী বাজারে আতশবাজি (মরিচ পটকা) কিনতে যায়। আতশবাজি নিয়ে ফেরার পথে তাদের আরেক বন্ধু আশিক আলীর সঙ্গে দেখা হয়। দুজনের নাম একই হওয়ার কারণে তাদের মধ্যে পারিবারিক ভাবেও বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল। এ সময় আশিক আলী বন্ধুদের কাছে থেকে মজা করার জন্য তিনটি আতশবাজি কেড়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।
পরে রাত ১০টার দিকে আশিক ইসলাম ও তার বন্ধুরা মিলে আতশবাজি উদ্ধার করতে চন্দন শহর গ্রামে আশিক আলীর বাড়িতে যায়। এ সময় দুই আশিকের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে আশিক ইসলাম ও তার বন্ধুরা আশিক আলীর পরিবারের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে আশিক আলী ও আশিক ইসলাম দুজনই আহত হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে আশিক ইসলামের মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় আশিকের বাবা আসলাম আলী বাদী হয়ে চারঘাট থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলায় বিচারক রায় দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মুন্সি আবুল কালাম আজাদ বলেন, তিন বাবা-ছেলেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। তবে আসামির মা আরিফা বেগমকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আসামিদের ২০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিল। তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে রায় ঘোষণা দিন সকাল থেকেই আশিক ইসলামের মাসহ আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসী ফাঁসির দাবিতে বিভিন্ন ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে ছিল।
রায় ঘোষণা পর আশিক ইসলামের পিতা আসলাম আলী বলেন, যারা আমার ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে তাদের ফাঁসিতে দড়িতে ঝুলতে দেখা ছাড়া আমার আর কোনো চাওয়া নেই। এজন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ড রায়ে আমরা খুশি না। পরবর্তীতে সবার সাথে আলোচনা এ রায়ের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Comments