Image description

মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগের চলমান অনুসন্ধানের জেরে এবার আলোচিত ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলমের আরও ২০০ দশমিক ২৬ একর জমি জব্দের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। যার বাজার মূল্য ১৮০ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এটি এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে চলমান বৃহৎ পরিসরের সম্পদ জব্দের প্রক্রিয়ার সর্বশেষ ঘটনা।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত এই আদেশ দেন। দুদকের উপপরিচালক তাহসিন মুনাবিল হক এই জব্দের আবেদনটি আদালতে পেশ করেন।

দুদকের উপপরিচালক তাহসিন মুনাবিল হক আদালতে দাখিল করা আবেদনে উল্লেখ করেন, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম ও তার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিভিন্ন ব্যাংক থেকে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ঋণ নিয়ে তা আত্মসাৎ করেছেন। সেই আত্মসাৎকৃত অর্থ দিয়ে তারা নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন।

অনুসন্ধানকালে দুদক জানতে পারে যে, সাইফুল আলম ও তার পরিবারের সদস্যরা তাদের স্থাবর সম্পত্তি অন্যত্র হস্তান্তর বা বেহাত করার চেষ্টা করছেন। এ কারণে অনুসন্ধান শেষ হওয়ার আগেই ওই সম্পত্তি জব্দ করা জরুরি, অন্যথায় পরবর্তীতে তা উদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়বে।

এর আগেও সাইফুল আলমের বিপুল পরিমাণ সম্পদ জব্দ ও অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। গত ২৩ এপ্রিল ৪০৭ কোটি টাকা মূল্যের ১৫৯ একর জমি জব্দের আদেশ দেওয়া হয়েছিল। গত ১৭ এপ্রিল তার ১,৩৬০টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়, যেখানে ২ হাজার ৬১৯ কোটি ৭ লাখ ১৬ হাজার টাকা ছিল। এর আগে গত ১০ মার্চ ১,৬০০ বিঘা জমি এবং ৯ এপ্রিল ৯০ বিঘা জমি জব্দের নির্দেশ আসে। একই দিনে তার ঘনিষ্ঠজনদের নামে থাকা ৩৭৪টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি তাদের ৮ হাজার ১৩৩ কোটি ৫৬ লাখ ৭২ হাজার টাকা মূল্যের শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়। এছাড়াও, গত ৩ ফেব্রুয়ারি ৩৬৮ কোটি ২৫ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের ১৭৫ বিঘা সম্পদ জব্দের নির্দেশ এবং ১২ ফেব্রুয়ারি ৪৩৭ কোটি ৮৫ লাখ ২ হাজার ২৭৪টি শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়, যার মূল্য ছিল ৫ হাজার ১০৯ কোটি টাকা। সবশেষে, গত ১৬ জানুয়ারি এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের ৩ হাজার ৫৬৩ কোটি ৮৪ লাখ ২১ হাজার টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন একই আদালত। গত ৭ অক্টোবর এস আলম ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনসহ তার পরিবারের ১২ সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়েছিল।