
রাশিয়ার কাছ থেকে দুটি হেলিকপ্টার কেনার চুক্তি করে বিপাকে পড়েছে বাংলাদেশ। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ৪০০ কোটি টাকার এ চুক্তির আওতায় ইতিমধ্যে ২৯৮ কোটি টাকা পরিশোধ করা হলেও হেলিকপ্টারগুলো এখনো দেশে আনা সম্ভব হয়নি। কারণ, হেলিকপ্টার সরবরাহকারী রুশ প্রতিষ্ঠান জেএসসি রাশিয়ান হেলিকপ্টার্সের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ফলে হেলিকপ্টার আনা হলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক টানাপোড়েনের আশঙ্কা রয়েছে, আবার চুক্তি ভাঙলে বিপুল আর্থিক ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠি অনুযায়ী, এমআই–১৭১ এ–২ মডেলের দুটি হেলিকপ্টার রাশিয়ার ওয়্যারহাউসে রাখা আছে এবং রক্ষণাবেক্ষণে অতিরিক্ত ব্যয় হচ্ছে। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি ও এপ্রিলে সেগুলো পরিবহনের প্রস্তুতিও নিয়েছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের নিষেধাজ্ঞার কারণে বাংলাদেশ সরকার প্রক্রিয়া স্থগিত করে।
২০২১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ পুলিশ ও রাশিয়ান হেলিকপ্টার্সের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়। তৎকালীন পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ এবং প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক আন্দ্রে আই ভোগেনিস্কি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ চুক্তি সম্পন্ন করেন। একই বছরের অক্টোবরে মন্ত্রিসভা কমিটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয় এবং নভেম্বর মাসে পুলিশ সদর দপ্তরে আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষর হয়। পুলিশের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, হেলিকপ্টার দুটি বেসামরিক কাজে ব্যবহৃত হবে এবং এর মাধ্যমে পুলিশের এয়ার উইং গঠিত হবে।
তবে সমালোচনা উঠেছে, কেননা ২০২১ সালের এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানকে নিষিদ্ধ তালিকায় রাখার পরও বাংলাদেশ নভেম্বর মাসে ওই কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছে এবং পরে বিপুল অর্থ পরিশোধ করেছে।
চুক্তিপত্র অনুযায়ী, বাংলাদেশ হেলিকপ্টার না নিলে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ব্যয়কৃত অর্থ ফেরত চাইতে পারবে। এমনকি বিরোধ দেখা দিলে মামলা আন্তর্জাতিক আরবিট্রেশন সেন্টারে গড়াতে পারে। ফলে বাংলাদেশ দ্বিমুখী চাপে পড়েছে-একদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা, অন্যদিকে চুক্তিভঙ্গজনিত আর্থিক ক্ষতি।
Comments