Image description

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়াকে যুদ্ধ বন্ধ করতে ৫০ দিনের 'আল্টিমেটাম' দিয়েছেন, অন্যথায় রাশিয়ার ওপর 'খুব কঠোর শুল্ক' আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন হোয়াইট হাউজ থেকে। কিন্তু এই ঘোষণার পর পরই রুশ অর্থনীতিতে আশ্চর্যজনকভাবে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। রুবলের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে এবং মস্কোর শেয়ারবাজার চাঙ্গা হয়েছে। রয়টার্সের খবরে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

রাশিয়ার রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প যতটা কঠোর হবেন বলে বাজার ভাবছিল, বাস্তবে ততটা হননি। ফলে আপাতত স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে মস্কো। তবে যুদ্ধ এবং শান্তির মধ্যেকার উত্তেজনা আবারও নতুন রূপে সামনে এসেছে।

তবে ট্রাম্পের এমন ঘোষণা আসার পরও রাশিয়ার অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে ওঠে। মস্কো স্টক এক্সচেঞ্জে শেয়ারের দাম গড়ে ২.৭ শতাংশ বেড়ে যায়, আর রাশিয়ান রুবলও ডলারের বিপরীতে আগের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়।

গ্রিনিচ মান সময় (জিএমটি) অনুযায়ী বিকেল ৪টা ৫ মিনিটের সময় রুবল ডলারের বিপরীতে ০.২ শতাংশ দুর্বল হয়ে দাঁড়ায় ৭৮.১০-এ, যদিও দিনের একপর্যায়ে এটি ৭৮.৭৫ পর্যন্ত নেমে গিয়েছিল। বছরের শুরু থেকে রুবলের মান বেড়েছে প্রায় ৪৫ শতাংশ। চীনা ইউয়ানের বিপরীতেও রুবল ০.৮ শতাংশ শক্তিশালী হয়ে দাঁড়ায় ১০.৮৭-এ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের কণ্ঠে কড়াকড়ি থাকলেও বাস্তবে সময়সীমা দিয়ে আলোচনার সুযোগ রেখেছেন তিনি। বিশ্লেষক আরতিওম নিকোলায়েভ বলেন, ‘বাজার ধারণা করেছিল ট্রাম্প আরও কঠোর হবেন। কিন্তু তিনি সময় দিয়েছেন এবং সাধারণত সময়সীমা পিছিয়ে দেন।’

মস্কোভস্কি কমসোমোলেটস পত্রিকা তাদের সোমবারের সম্পাদকীয়তে সতর্ক করেছে, ট্রাম্পের ঘোষণা ‘সুখকর’ না হলেও রাশিয়ার জন্য তা সম্পূর্ণ অস্বস্তিরও নয়। কারণ, এতে আলোচনার নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে।

ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্র ‘সর্বোচ্চ মূল্যের অস্ত্র’ পাঠাবে এবং ৫০ দিনের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধে চুক্তি না হলে রাশিয়ার ওপর শুল্ক কার্যকর করা হবে।

নতুন করে অস্ত্র সরবরাহ এবং নিষেধাজ্ঞার হুমকি সত্ত্বেও মস্কো আত্মবিশ্বাসী। তাদের মতে, যুদ্ধক্ষেত্রে এখনো তারা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে এবং আলোচনা চলাকালীন সময়ই কৌশলগত।

ক্রেমলিন বারবার বলছে, তারা শান্তি চায়। তবে তাদের শর্ত অনুযায়ী, যার মধ্যে রয়েছে, ইউক্রেনে পশ্চিমা অস্ত্র সরবরাহ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা।

হোয়াইট হাউজে ফেরার পর থেকেই ইউক্রেন যুদ্ধ থামানো ট্রাম্পের পররাষ্ট্র নীতির অগ্রাধিকারে রয়েছে। তবে এই যুদ্ধের পেছনে ন্যাটো ও ‘সমষ্টিগত পশ্চিমা’র ভূমিকাই প্রধান বলে মস্কোর দাবি। যদিও ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়াই ইউক্রেনে আক্রমণ চালিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী ইউরোপের সবচেয়ে বড় স্থলযুদ্ধের সূচনা করেছিল।

নতুন করে সংঘাতের ইঙ্গিতে কূটনৈতিক উত্তেজনা বাড়লেও অর্থনৈতিকভাবে রাশিয়া সাময়িক স্বস্তিতে আছে বলেই মনে করছে পর্যবেক্ষক মহল।