
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে সাম্প্রতিক আকস্মিক বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮২ জনে দাঁড়িয়েছে এবং এখনও ৪১ জন নিখোঁজ রয়েছেন। উদ্ধার অভিযান জোরদার করা হলেও বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় তা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শুক্রবার স্থানীয় সময় অনুযায়ী, স্যান অ্যান্টোনিও শহরে প্রবল বর্ষণের ফলে গুয়াদালুপ নদীর পানি প্রায় ৯ মিটার (২৯ ফুট) বেড়ে যায়, যা আশেপাশের এলাকায় আকস্মিক এবং ব্যাপক বন্যার সৃষ্টি করে। নদীর তীরেই অবস্থিত একটি খ্রিস্টান গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্পে প্রায় ৭৫০ জন শিশু অবস্থান করছিল।
কার কাউন্টির পুলিশ কর্মকর্তা ল্যারি লেইথা জানিয়েছেন, এই কাউন্টিতেই ৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ২৮ জনই শিশু। শনিবার সকালে বন্যার পানি সরে যেতে শুরু করলে প্রায় ৮৫০ জনকে ওই অঞ্চল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। কার কাউন্টিতে উদ্ধার হওয়া ১৮ জন প্রাপ্তবয়স্ক এবং ১০ শিশুর পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
কারভিলের নগর ব্যবস্থাপক ডাল্টন রাইস জানান, ক্যাম্পের ১০ জন শিশু এবং একজন কাউন্সিলর এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
সিএনএন-এর তথ্য অনুযায়ী, বন্যায় এ পর্যন্ত টেক্সাসের বিভিন্ন কাউন্টিতে অন্তত ৮২ জনের মৃত্যু হয়েছে: কার কাউন্টিতে ৬৮ জন, ট্রাভিস কাউন্টিতে ৬ জন, বার্নেট কাউন্টিতে ৩ জন, কেনডাল কাউন্টিতে ২ জন, উইলিয়ামসন কাউন্টিতে ২ জন এবং টম গ্রিন কাউন্টিতে ১ জন।
জাতীয় আবহাওয়া পরিষেবা (এনডব্লিউএস) জানিয়েছে, কার কাউন্টিতে বন্যার জরুরি অবস্থা মূলত শেষ হয়ে এলেও, তারা আরও ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে এবং বন্যা পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রেখেছে।
কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আরও ঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে, যা উদ্ধার অভিযানকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। এছাড়া, বন্যার কারণে সৃষ্ট ধ্বংসাবশেষ, ব্যাপক কাদা এবং বিষধর সাপের কারণে উদ্ধারকর্মীরা কাজে বেগ পাচ্ছেন।
টানা তিনদিনের বন্যার পর টেক্সাসের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বড় উদ্ধার অভিযান। গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট গতকাল রোববার বলেছেন, প্রত্যেক নিখোঁজ ব্যক্তিকে খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চলবে।
ডাল্টন রাইস জানান, উদ্ধার ও তল্লাশি অভিযানে সহায়তার জন্য এক হাজারেরও বেশি উদ্ধারকর্মী ঘটনাস্থলে রয়েছেন এবং হেলিকপ্টার ও ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে। কিছু মানুষকে গাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং মার্কিন কোস্টগার্ডের হেলিকপ্টারও সহায়তার জন্য এসেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার বন্যা মোকাবিলায় রাজ্য ও স্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে একযোগে কাজ করছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে, বন্যার পানিতে ঘরবাড়ি ও গাছপালা উপড়ে গেছে। স্থানীয় আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাতে কেরি এলাকায় ১২ ইঞ্চি বৃষ্টি হয়েছে, যা ওই এলাকার বার্ষিক মোট বৃষ্টির এক-তৃতীয়াংশ।
Comments