
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই ইসরায়েল তেহরানের আহমেদাবাদের কাছে অবস্থিত নাতানজ পারমাণবিক স্থাপনায় (শহীদ আহমাদি রোশন পারমাণবিক স্থাপনা) হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তাদের বিমানবাহিনী বুধবার রাতে ইরানের নাতাঞ্জ শহরের একটি স্থাপনায় হামলা করে। ইসরায়েলের দাবি, এই স্থাপনাটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কাজে ব্যবহৃত হচ্ছিল। খবর বিবিসি।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) আরও জানায়, এই স্থাপনায় এমন বিশেষ যন্ত্রাংশ ও উপকরণ রয়েছে যা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহার হয়। তাদের অভিযোগ, সেখানে এমন প্রকল্প চলছে যা পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচিকে দ্রুত এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে।
উল্লেখ্য, ইরানের মূল ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র নাতাঞ্জে এর আগেও হামলা হয়েছে। ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের প্রথম দিকে, গত ১৪ জুন, সেখানে ইসরায়েল হামলা চালায়। ওই হামলায় ইরানের বেশ কয়েকজন শীর্ষ জেনারেল নিহত হন।
তবে ইরান নিশ্চিত করেছে যে, নাতানজ পরমাণু সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রের ভূমির ওপরের অংশগুলো ধ্বংস হয়েছে। আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (IAEA) জানিয়েছে, সেখানে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা 'অপরিবর্তিত' রয়েছে। আন্তর্জাতিক পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রধান জানান, ইসরায়েলের গত শুক্রবারের হামলার পর ইরানের ভূগর্ভস্থ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রে থাকা সেন্ট্রিফিউজগুলো পুরোপুরি ধ্বংস না হলেও সম্ভবত 'মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে'।
ইসরায়েল অভিযোগ করেছে, ইরান সম্প্রতি তাদের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদকে 'অস্ত্র তৈরির পথে' নিয়ে যাচ্ছে, যা বিদ্যুৎ উৎপাদন বা পারমাণবিক বোমা দুটোর জন্যই ব্যবহৃত হতে পারে। এর প্রতিক্রিয়ায়, গত রোববার ইরান আবারও জানিয়েছে যে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যের জন্য। ইরান আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার ৩৫ জাতির বোর্ডকে ইসরায়েলি হামলার তীব্র নিন্দা জানানোর আহ্বান জানিয়েছে।
তেহরান থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত নাতাঞ্জ ইরানের মূল ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র। এটি বাংকারযুক্ত একটি স্থাপনা এবং ২০০২ সালে কেন্দ্রটির কথা প্রথম প্রকাশ পায়। এই স্থাপনার দুটি সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রে প্রায় ৭০টি সেন্ট্রিফিউজের সারি রয়েছে।
Comments