Image description

পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে একের পর এক জঙ্গি হামলায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে গোটা অঞ্চল। সর্বশেষ, শনিবার কোয়েটা শহরের উপকণ্ঠে নওয়ান কিল্লি এলাকায় এক বিস্ফোরণে অন্তত দুইজন নিহত এবং আরও ছয়জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। খবর: জিও নিউজ।

বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গেই উদ্ধারকারী দল ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। আহতদের দ্রুত কাছের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে এটি কী ধরনের বিস্ফোরণ ছিল, তা এখনও নির্দিষ্ট করে বলা যায়নি। পুরো এলাকা ঘিরে রেখে তদন্ত শুরু করেছে নিরাপত্তা বাহিনী।

২০২১ সালে তালেবান আফগানিস্তানে পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর থেকে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী খাইবার পাখতুনখাওয়া ও বেলুচিস্তান প্রদেশে এই হামলা সবচেয়ে বেশি লক্ষ করা যাচ্ছে। এসব হামলার লক্ষ্যবস্তু মূলত নিরাপত্তা বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার সদস্যরা।

পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (পিআইসিএসএস)-এর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে সন্ত্রাসী হামলার হার পূর্ববর্তী মাসের তুলনায় ৪২ শতাংশ বেড়েছে। ওই মাসে দেশজুড়ে ৭৪টি জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে, যাতে প্রাণ হারান ৯১ জন। নিহতদের মধ্যে ৩৫ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য, ২০ জন সাধারণ নাগরিক এবং ৩৬ জন হামলাকারী। আহত হন আরও ১১৭ জন, যাদের মধ্যে ৫৩ জন ছিলেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য, ৫৪ জন সাধারণ মানুষ এবং ১০ জন সন্ত্রাসী।

এই ঘটনার ঠিক একদিন আগে, বেলুচিস্তানের খুজদার জেলার সোরাব শহরে অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার (এডিসি) হিদায়ত বুলেদি জঙ্গি হামলায় নিহত হন। প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র শাহিদ রিন্দ জানিয়েছেন, ‘ফিতনা আল-হিন্দুস্তান’ নামের একটি জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা ডেপুটি কমিশনারের বাসভবনে হামলা চালায়।

বিবৃতিতে শাহিদ রিন্দ আরও জানান, নিষিদ্ধ ঘোষিত বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)-এর সদস্যরা একইদিন সোরাব বাজারে ঢুকে একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক লুট করে এবং একাধিক সরকারি কর্মকর্তার বাসভবনে অগ্নিসংযোগ করে। ঘটনার পরপরই ফ্রন্টিয়ার কর্পস (এফসি), পুলিশ ও লেভিস বাহিনী যৌথভাবে ওই এলাকায় অভিযান চালায়।

২১ মে বেলুচিস্তানের খুজদার জেলার জিরো পয়েন্টের কাছে আরও একটি ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সেদিন একটি স্কুলবাসকে লক্ষ্য করে চালানো হামলায় পাঁচ শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৮ জন প্রাণ হারান, আহত হন আরও অনেকে। বাসটিতে ৪০ জনের বেশি শিক্ষার্থী ছিল এবং তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়ার পথে ছিল। এ ঘটনার নিন্দা জানায় দেশটির রাজনৈতিক মহল ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।

বেলুচিস্তান দীর্ঘদিন ধরেই পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদে আক্রান্ত প্রদেশগুলোর একটি হিসেবে পরিচিত।