
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটাতে শান্তি আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, রাশিয়া ও ইউক্রেন "অবিলম্বে" যুদ্ধবিরতি ও শান্তিচুক্তির লক্ষ্যে আলোচনা শুরু করতে যাচ্ছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দুই ঘণ্টার ফোনালাপের পর এক বিবৃতিতে তিনি এই ঘোষণা দেন।
ট্রাম্পের এই ঘোষণায় যুদ্ধবিরতি বা চূড়ান্ত শান্তিচুক্তি খুব কাছাকাছি—এমন কোনো ইঙ্গিত এখনো পাওয়া না গেলেও, আলোচনা শুরু হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
পুতিন জানিয়েছেন, তিনি ইউক্রেনের সঙ্গে একটি সম্ভাব্য শান্তি সমঝোতা নিয়ে আলোচনায় প্রস্তুত। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি একে "একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়" বলে উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রকে আলোচনায় সক্রিয় থাকার আহ্বান জানান।
ট্রাম্প বলেন, পুতিনের সঙ্গে আলোচনা "খুব ভালো" হয়েছে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার শর্তগুলো দুই দেশের মধ্যেই আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করতে হবে। তিনি জেলেনস্কিকেও এই আলোচনা শুরু হওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন। দ্বিতীয় ফোনালাপে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কমিশন প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েনসহ ফ্রান্স, জার্মানি, ফিনল্যান্ড এবং ইতালির নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
জেলেনস্কি জোর দিয়ে বলেন, এই আলোচনা যেন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় প্রতিনিধি নিয়েই হয়। তিনি বলেন, "যুক্তরাষ্ট্র যদি নিজেকে সরিয়ে নেয়, তবে একমাত্র লাভবান হবেন পুতিন।"
পুতিনের উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট যুদ্ধবিরতির সময়সীমা এখনো ঠিক হয়নি। তবে ট্রাম্প দ্রুত কোনো চুক্তি চাচ্ছেন।
জেলেনস্কি "পূর্ণ ও নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি" চান। রাশিয়া রাজি না হলে, আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞার প্রয়োজন রয়েছে বলে তিনি জানান।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট ভন ডার লিয়েন বলেন, "ট্রাম্পের শান্তিচেষ্টা প্রশংসনীয়। যুক্তরাষ্ট্র আলোচনায় সক্রিয় থাকাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।"
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি জানান, পোপ লিওর প্রস্তাবিত মধ্যস্থতা ও আলোচনা আয়োজনের স্থান হিসেবে ভ্যাটিকানের প্রস্তাবকে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য নেতারা ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছেন।
এর আগে, পুতিন তুরস্কে সরাসরি বৈঠকের জন্য জেলেনস্কির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। এরপর ভ্যাটিকানকে আলোচনার ভেন্যু হিসেবে প্রস্তাব দেন পোপ।
রাশিয়া অতীতে একাধিকবার অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলেও, উভয় পক্ষই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে। ইউক্রেন একটি নিরবচ্ছিন্ন ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি দাবি করেছে।
Comments