
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে আকস্মিক তীব্র ঝড় ও ভারী বৃষ্টিতে জনজীবন কার্যত থমকে দাঁড়িয়েছে। শুক্রবার ভোর থেকে শুরু হওয়া এই বৃষ্টি দীর্ঘদিনের তীব্র গরমের পর কিছুটা স্বস্তি এনে দিলেও, ব্যাপক জলাবদ্ধতা, যানজট এবং বিমান-ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় চরম দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ।
সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, ঝড় ও ধূলি ঝড়ের কারণে প্রায় ১২০টি ফ্লাইট বিলম্বে ছেড়েছে। অন্যদিকে, প্রবল ঝোড়ো হাওয়ায় দিল্লির দ্বারকা এলাকায় একটি বাড়ির ওপর গাছ ভেঙে পড়লে এক নারী ও তার তিন সন্তানের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
এছাড়াও, শহরের বিভিন্ন এলাকায় বহু গাছপালা উপড়ে পড়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে লাজপত নগর, আর কে পুরম এবং দ্বারকার মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে ব্যাপক জলজট সৃষ্টি হয়েছে। সকাল থেকেই এসব এলাকায় যান চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়, তৈরি হয় দীর্ঘ যানজট।
বিমান চলাচলেও এর বড় প্রভাব পড়েছে। ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের আগেই তিনটি ফ্লাইটকে আহমেদাবাদ এবং জয়পুরে ঘুরিয়ে নিতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। এই ঘুরিয়ে নেওয়া ফ্লাইটগুলোর মধ্যে ছিল ব্যাঙ্গালোর-দিল্লি এবং পুনে-দিল্লি রুটের বিমান।
ফ্লাইট রাডারের তথ্য অনুযায়ী, দিল্লি বিমানবন্দরে বিমান অবতরণে গড়ে ২১ মিনিট এবং উড্ডয়নে ৬১ মিনিট পর্যন্ত বিলম্ব ঘটেছে। দিল্লি থেকে ছেড়ে যাওয়া ২০টিরও বেশি ফ্লাইট নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরিতে যাত্রা করেছে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভারতের বিভিন্ন বিমান সংস্থা যাত্রীদের বিমানবন্দরে রওনা হওয়ার আগে তাদের ফ্লাইটের সর্বশেষ আপডেট জেনে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। এয়ার ইন্ডিয়া তাদের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দিল্লিতে চলাচলকারী কিছু ফ্লাইট বৈরী আবহাওয়ার কারণে ডাইভার্ট করা হয়েছে এবং বিলম্বে চলছে। এই অপ্রত্যাশিত দুর্যোগের কারণে তাদের সামগ্রিক ফ্লাইটের সময়সূচিতে প্রভাব পড়তে পারে বলেও উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।
শুধু বিমান নয়, রেল পরিষেবাও এই ঝড়ের কারণে ব্যাহত হয়েছে। তীব্র বাতাসের কারণে বিভিন্ন স্থানে গাছ বিদ্যুতের তারের ওপর পড়ে যাওয়ায় প্রায় ১৫ থেকে ২০টি ট্রেন দেরিতে চলছে। এর ফলে দিল্লিতে রেলযাত্রীদেরও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
Comments