Image description

ফিলিস্তিনের গাজায় সামরিক অভিযান নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে কয়েক সপ্তাহ ধরে মতবিরোধ ও দ্বন্দ্বের পর পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের শীর্ষ নির্বাহী রোনেন বার। আগামী ১৫ জুন তিনি দায়িত্ব ছাড়বেন। মঙ্গলবার টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হামলা ঠেকাতে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে রোনেন বার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

টাইমস অব ইসরায়েল আরও জানায়, গত মাসে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সুপারিশে ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রীসভা বারের বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেয়। বর্তমানে সেই সিদ্ধান্ত দেশটির সর্বোচ্চ আদালত হাই কোর্টে আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

নেতানিয়াহু তার বক্তব্যে জানান, হামলার আগে গোয়েন্দা ত্রুটির জন্য তিনি বারের ওপর থেকে আস্থা হারিয়েছেন এবং তাকে তীব্রভাবে সমালোচনা করেছেন। অন্যদিকে, বার অভিযোগ করেন, তার বরখাস্তের সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে এবং তা নৈতিকতার পরিপন্থী।

রবিবার ইয়োম হাযিকরন বা স্মরণ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে বার বলেন, ‘বহু বছর ধরে নানা ফ্রন্টে কাজ করেও আমরা ৭ অক্টোবরের হামলা ঠেকাতে পারিনি। সেদিন নিরাপত্তা ব্যবস্থার সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটেছিল।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমি সংস্থার প্রধান হিসেবে দায় স্বীকার করছি। সাহস ও আত্মত্যাগের স্মরণে এই বিশেষ সন্ধ্যায় আমি আমার পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানাচ্ছি।’

বার বলেন, হামাসের হুমকিকে শিন বেট কখনও অবমূল্যায়ন করেনি; বরং বরাবরই গুরুত্ব দিয়ে মোকাবিলা করেছে। তবে তারপরও ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে তিনি বলেন, এর পূর্ণাঙ্গ নিরূপণের জন্য একটি জাতীয় তদন্ত কমিশন গঠন করা জরুরি।

নেতানিয়াহুর প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি মন্তব্য করেন, ‘ব্যক্তিগত দায়িত্ব নেওয়ার মাধ্যমেই নেতৃত্বের মান তৈরি হয়। যারা দায়িত্ব নেয় না, তাদের নেতৃত্বের অধিকার নেই।’

এর আগে, গত বছর ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান মেজর জেনারেল আহারন হালিভাও পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছিলেন। হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলার গোয়েন্দা ব্যর্থতার দায় নিয়ে তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানান।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সামরিক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের প্রধান ৭ অক্টোবরের নজিরবিহীন হামলার গোয়েন্দা ব্যর্থতার দায় নিয়ে পদত্যাগ করেছেন।’

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘মেজর জেনারেল আহারন হালিভা তার মেয়াদ শেষে প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রচলিত নিয়ম ও পেশাদারিত্বের ধারায় নতুন গোয়েন্দাপ্রধান নিয়োগ করা হবে।’