Image description

কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক ডজনেরও বেশি বিশ্বনেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। পাকিস্তানও তার মিত্র চীন, সৌদি আরব, ইরান ও মিসরের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। এমন অবস্থায় পেহেলগামে ভয়াবহ হামলা ও সেখানে হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র নিয়ে নতুন তথ্য সামনে এসেছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্যমতে, হামলাকারীরা কোকেরনাগের জঙ্গল হয়ে ২০ থেকে ২২ ঘণ্টা হেঁটে পেহেলগামে বৈসারন উপত্যকায় পৌঁছায়। হামলার আগে তারা স্থানীয় নাগরিক এবং পর্যটকদের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়।

হামলায় চারজন অংশ নিয়েছিল। এরমধ্যে আদিল ছিলেন স্থানীয়। বাকি তিনজন তার সহায়তায় পাহাড়ি পথ পেরিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে। ঘটনার দিন, স্থানীয় একটি দোকানের পেছন থেকে দুই সন্ত্রাসী বেরিয়ে প্রথমে চারজনকে কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করে। এ দৃশ্য ছড়িয়ে পড়লে আতঙ্কিত হয়ে বাকি পর্যটকরা এদিন-সেদিক ছুটতে থাকে। সেসময়, অন্য দুই জঙ্গি গুলি চালাতে শুরু করে। হামলায় একে-৪৭ ও এম৪ রাইফেল ব্যবহৃত হয়েছে।

এর আগে, গত ২২ এপ্রিল পেহেলগামে হামলার পর পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। আটারি সীমান্ত বন্ধ করে দিয়ে পাকিস্তানিদের ফিরে যেতে বলা হয়েছে। সব ধরনের বাতিল হয়েছে ভিসা। সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিতও করেছে ভারত।

পাল্টা ব্যবস্থা হিসাবে একই ধরনের পদক্ষেপ দিয়েছে পাকিস্তানও। সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিতে ভারতের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান সিমলা চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে। এ ছাড়া পাকিস্তানের আকাশসীমা নিষিদ্ধ, সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে ইসলামাবাদ।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ জানান, সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিতের পদক্ষেপকে ‘যুদ্ধের ঘোষণা’ হিসেবে দেখছে পাকিস্তান। তিনি বলেছেন, যেকোনো মূল্যে নিজের পানির অধিকার রক্ষা করবে পাকিস্তান। 

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ হুঁশিয়ার করে বলেন, যদি পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়, আমাদের থামাতে কেউ পারবে না। মোদি যদি উত্তেজনা বাড়ানোর পথ বেছে নেন, তবে আমরা তাকে তার বাড়ি পর্যন্ত ধাওয়া করব।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে প্রতিটি ভারতীয় নাগরিকের ‘রক্ত ফুটছে’। হামলায় জড়িত প্রত্যেককে কঠিনতম শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।

বিশ্লেষক এবং কূটনীতিকরা বলছেন, পাকিস্তান যে কাশ্মীরা হামলা চালিয়েছে, তার জোরালো প্রমাণ এখনও দেখাতে পারেনি ভারত। এ অবস্থায় দিল্লি কোনো পদক্ষেপ নিলে বিশ্ব মঞ্চে তার ন্যায্যতা পাওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে, পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে চমলান সামরিক সংঘর্ষের আশঙ্কা যদি বাড়তে থাকে তাহলে তা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হতে পারে। 

এদিকে, ইরান এবং সৌদি আরব উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। ইরান ও বাংলাদেশ প্রকাশ্যে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে। জাতিসংঘ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন সংযম এবং সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের লড়াইয়ের প্রতি জোরালো সমর্থন জানিয়েছেন।