Image description

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় মানবতা বিরোধী অপরাধ সংঘটিত করার অভিযোগে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সরকারের অন্য সিনিয়র কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করতে পারে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। 

শনিবার (২৭ এপ্রিল) বেশ কয়েকটি ইসরায়েলি গণমাধ্যম ছাড়াও অন্যান্য গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ আরও কিছু ইসরায়েলি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে যাচ্ছে আইসিসি।

মারিভ পত্রিকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে যে, আইসিসির গ্রেফতারি পরোয়ানার শঙ্কায় নেতানিয়াহু অত্যন্ত ভীত ও উদ্বেগের মধ্যে আছেন। আর এই গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে নেতানিয়াহু প্রচণ্ড চাপে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলি বিশ্লেষক বেন কাসপিট। 

রবিবার (২৮ এপ্রিল) হিব্রু ভাষার সংবাদমাধ্যম ওয়াল্লা নিউজকে কাসপিট জানিয়েছেন, নেতানিয়াহু এবং অন্যরা হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সম্ভাব্য গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে প্রচণ্ড চাপে রয়েছেন। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ইসরায়েলের অবস্থানের জন্য এটি খুবই খারাপ একটি বিষয় হবে।

বিশ্লেষক বেন কাসপিট আরও জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ঠেকাতে অব্যাহতভাবে টেলিফোনে কথা বলে যাচ্ছেন নেতানিয়াহু। তার মূল নজর এখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের ওপর। নেতানিয়াহুর বিশ্বাস বাইডেনের সহায়তা নিয়ে তিনি গ্রেফতারি পরোয়ানা থেকে রক্ষা পেতে পারেন।

প্রভাবশালী ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজকে অপর এক বিশ্লেষক আমোস হারেল লিখেছেন, আইসিসির প্রধান প্রসিকিউটর করিম খান এই সপ্তাহে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করতে পারেন বলে ধারণা করছে ইসরায়েলি সরকার। আর এ বিষয়টি মাথায় রেখে এখন তারা কাজ করছে।

এদিকে নেতানিয়াহু ও অন্যান্য ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যেন আইসিসি পরোয়ানা জারি না করে সেজন্য সর্বাত্মক কূটনৈতিক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) এক এক্স বার্তায় নেতানিয়াহু লিখেছেন, ইসরাইলের সহজাত ও আত্মরক্ষার অধিকার খর্ব হয়, আইসিসির এমন কোনো প্রচেষ্টা আমার নেতৃত্বে এই দেশটি মেনে নেবে না। মধ্যপ্রাচ্যের একমাত্র গণতন্ত্র ও বিশ্বের একমাত্র ইহুদি রাষ্ট্রের সামরিক কর্মকর্তাদের জব্দ করার হুমকি আপত্তিজনক। আমরা এর কাছে কখনও মাথা নত করব না।

আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে। জানুয়ারিতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন রায়ে তেল আবিবকে গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে এবং গাজার বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তা দানের নিশ্চয়তা দেয়ার ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
 
গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলার পর থেকে ইসরাইল গাজা উপত্যকায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, এখন পর্যন্ত ইসরাইলের হামলায় ৩৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন ৭৭ হাজারের বেশি। 
 
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি


মানবকণ্ঠ/এফআই