Image description

প্রতিবেশী মিত্র দেশ বেলারুশে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করার কথা জানিয়েছে রাশিয়া। শনিবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন এ ঘোষণা দেন। এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে হামলা শুরু করতে পশ্চিমাদের কাছ থেকে আরও অস্ত্র পেতে হবে তাদের। 
পুতিনের ঘোষণা : কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র বলতে যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত পারমাণবিক অস্ত্রকে বোঝানো হয়ে থাকে। যুক্তরাষ্ট্র অনেক আগে থেকেই মিত্র দেশগুলোতে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করে আসছে। বিষয়টিকে তুলে ধরে পুতিন বলেন, ‘এখানে অস্বাভাবিক কিছু নেই। দশকের পর দশক ধরে ওয়াশিংটন এটি করে আসছে।’
প্রায় ১৩ মাস আগে ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই এমন সংকেত দিয়ে আসছে রাশিয়া। পদক্ষেপটির মাধ্যমে পরমাণু ইস্যুতে হওয়া আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘন না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন পুতিন। তার এই পদক্ষেপে সতর্কতার সঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ওয়াশিংটন। পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারে মস্কো কোনো সংকেত দেয়নি বলে মন্তব্য করেছেন একজন ঊর্ধ্বতন মার্কিন প্রশাসনিক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার এই ঘোষণার কারণে আমাদের কৌশলগত পারমাণবিক বিষয়ে পরিবর্তন আনার কোনো কারণ দেখি না। ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর সম্মিলিত প্রতিরক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে ওয়াশিংটন।’ তবে বেলারুশে পারমাণবিক অস্ত্র কবে পাঠাবে এ নিয়ে কিছু জানায়নি মস্কো। চলতি বছরের জুলাইয়ের মধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করার কথা বলেছেন পুতিন।
ইউক্রেন ছাড়াও ন্যাটোভুক্ত তিনটি দেশ পোল্যান্ড, লিথুনিয়া ও লাটভিয়ার সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে বেলারুশের। নব্বই দশকের পরে এই প্রথম কোনো মিত্র দেশে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করতে চলেছে রাশিয়া। সম্প্রতি ইউক্রেনকে ইউরেনিয়ামসমৃদ্ধ গোলাবারুদ পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্য। ব্রিটেন এই পদক্ষেপ নিলে কড়া জবাবের সতর্কবার্তা জানিয়েছিল পুতিন। এর পরপরই মিনস্কে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের ঘোষণা দিলেন তিনি। 
আরও অস্ত্র চান জেলেনস্কি : জেলেনস্কি বলেছেন, পশ্চিমা মিত্ররা আরও বেশি করে সামরিক সহায়তা না পাঠালে রাশিয়ার বিরুদ্ধে তার দেশ পাল্টা হামলা শুরু করতে পারবে না। আরও বেশি করে ট্যাঙ্ক, গোলাবারুদ ও হিমার্স রকেট না পাওয়া পর্যন্ত সেনাদের সম্মুখযুদ্ধে পাঠাবেন না বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। জাপানি সংবাদমাধ্যম ইয়োমিউরি শিম্বুনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, পূর্বাঞ্চলীয় ইউক্রেনের পরিস্থিতি ‘ভালো নয়’। মিত্রদেশগুলোর কাছ থেকে গোলাবারুদের সরবরাহ পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন বলেও উল্লেখ করেন এই নেতা।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমরা এখনই শুরু করতে পারব না। ট্যাঙ্ক, গোলাবারুদ ও দীর্ঘ পাল্লার রকেট ছাড়া আমরা আমাদের নির্ভীক সেনাদের সেখানে পাঠাতে পারি না।’ তিনি আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে আপনারা আমাদের সহযোগিতা করার পথ পেয়ে যাবেন। আমরা যুদ্ধাবস্থায় আছি, অপেক্ষা করার সুযোগ নেই।’
রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে ইউক্রেন পাল্টা অভিযান শুরু করবে বলে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে আলোচনা চলছে। ইউক্রেনের কমান্ডাররা ইঙ্গিত করেছেন, এ ধরনের অভিযান অনিবার্য। ইউক্রেনের স্থলবাহিনীর কমান্ডার ওলেকসান্দর সিরস্কি সম্প্রতি বলেছেন, শিগগিরই এ অভিযান চালানো হতে পারে। কয়েক বিশ্লেষক বলেছেন, ইউক্রেনের সেনাবাহিনী রাশিয়ার সেনা সদস্যদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে পাল্টা হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে।