
কিশোরগঞ্জে কবর তৈরির কারিগর মনু মিয়া। কবর খননের কাজ করে জীবনের সুদীর্ঘ ৪৯টি বছর পার করে দিয়েছেন। কোনো ধরনের পারিশ্রমিক কিংবা বকশিস না নিয়ে এ পর্যন্ত খনন করেছেন ৩ হাজার ৫৭টি কবর। গ্রামের মানুষদের কাছে তিনি পরিচিত ‘গোরখোদক’ হিসেবে। কোনও গ্রামে মৃত্যুর খবর পেলেই নিজের লাল লাল রঙের ঘোড়া পৌঁছে যেতেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, সেই বিশ্বস্ত সঙ্গী আর নেই।
মনু মিয়া বর্তমানে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আর তার অনুপস্থিতিতে দুষ্কৃতকারীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে ঘোড়াটিকে হত্যা করে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মনু মিয়ার শারীরিক ও মানসিক অবস্থার কথা ভেবে স্ত্রী ও স্বজনেরা তার কাছে গোপন রেখেছেন ঘোড়াটি হত্যার কথা।
মর্মান্তিক এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই মনু মিয়ার পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন অভিনেতা খায়রুল বাসার। এক ফেসবুক পোস্টে তিনি জানান, “মনু মিয়াকে আমি ঘোড়া কিনে দিতে চাই। আমার কবর খোঁড়ার আগ পর্যন্ত আল্লাহ যেন তাকে সুস্থ ও নিরাপদ রাখেন।”
সেই সঙ্গে তিনি আহ্বান জানান, যদি কেউ মনু মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিতে পারেন, তাহলে চিরকৃতজ্ঞ থাকবেন।
এরপরই মনু মিয়ার সঙ্গে ফোনকলে কথা বলেন খায়রুল বাসার। কথোপকথনে তিনি আশ্বস্ত করেন, খুব শিগগিরই হাসপাতালে যাবেন তাকে দেখতে।
এরপর সোমবার রাতেই হাসপাতালে মনু মিয়ার সঙ্গে দেখা করেন খায়রুল বাসার। দীর্ঘক্ষণ কথাও বলেন তার সঙ্গে। সেই ছবিও সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করে মনু মিয়াকে নায়ক বলে সম্বোধন করেন বাসার।
খায়রুল বাসার লিখেছেন, ‘আজ এক নায়কের সাথেই দেখা হলো আমার। আমি নিজ চোখে এক নায়ককেই দেখে আসলাম, বুক মেলালাম এক নায়কের সাথে! আজন্ম এক নায়ক মনু মিয়া। এই নায়কের গল্প বলবো শিগগিরেই। এটুকু বলি, মনু মিয়া অসহায় না বরং অসহায়ের সহায় হয়ে ওঠার প্রচণ্ড শক্তি আছে তার। এই দিশাহীন সমাজে এক আদর্শের নাম মনু মিয়া।’
Comments