Image description

আর দু’সপ্তাহের মধ্যেই ঈদ করতে শিকড়ের টানে ছুটবে মানুষ। অযুত মানুষ ছাড়বে ঢাকা শহর। কিন্তু এর মধ্যেই গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে  সড়কপথেও অব্যবস্থা।অধিকাংশ জায়গায় ভাঙাচোরা ও সরু সড়ক, সড়ক সম্প্রসারণ ও নানা অব্যবস্থাপনার কারণে ঈদযাত্রায় বাড়িফেরা মানুষের এবারও যানজটের ভয়াবহ দুর্ভোগ পোহাতে হতে পারে-এমন শঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।

তাদের মতে, ঈদযাত্রায় সড়ক-মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেশি থাকায় শ্লথ হয়ে পড়ে সেতু ও সড়কের টোল আদায়, অনেক সময় সড়কে গাড়ি অকেজো হয়ে পড়ে এবং একত্রে অনেক মানুষ সড়কে নেমে পড়ে-এতে সড়ক ও মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এসব কারণ চিহ্নিত, বছরের পর বছর সরকারের বিভিন্ন স্তরের নীতিনির্ধারকদের বৈঠকে আলোচনা হয়, সিদ্ধান্ত হয়, কিন্তু সমাধান হয় না। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে প্রতিবছর আনন্দের ঈদযাত্রা দুর্ভোগে পরিণত হয়। সড়ক ও পরিবহন খাত সংশ্লিষ্টদের আরও অভিমত-ঈদের আগে ছুটি কম হওয়ায় একসঙ্গে অনেক মানুষ ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে রওয়ানা হবেন। সেসময় সড়ক ও মহাসড়কগুলো যানজটে স্থবির হয়ে পড়বে। এ ব্যাপারে সরকারকে ভাবতে হবে।

সরকারি যে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে, ঈদের আগে আরও দুদিন ছুটি বাড়ানো দরকার। তাহলে মানুষ স্বস্তিতে বাড়ি ফিরতে পারবেন। পাশাপাশি গার্মেন্টস সেক্টরে আগে বেতন-বোনাস পরিশোধ এবং ভাগে ভাগে শ্রমিকদের ঈদের ছুটিতে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে যানজট অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে। বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে উত্তরবঙ্গ এলাকার সড়ক-মহাসড়কে। কেননা এবার এই অঞ্চলে যানজটের শঙ্কা বেশি। এ বছর ১২ মার্চ রোজা শুরু হয়েছে। আর পবিত্র ঈদুল ফিতর নির্ভর করে চাঁদ দেখার ওপর। তবে ইতোমধ্যে ঈদের জন্য ১০, ১১ ও ১২ এপ্রিল সম্ভাব্য ছুটির তারিখ নির্ধারণ করা আছে। এভাবে হলে ঈদের পরদিন ১৩ এপ্রিল শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন। এরপরের ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ। এদিনও সরকারি ছুটি অর্থাৎ ঈদুল ফিতরে ৫ দিন ছুটি নিশ্চিত হয়ে আছে। তবে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে ৮ ও ৯ এপ্রিল নির্বাহী আদেশে ছুটি ঘোষণা করার বিষয়ে ভাবতে হবে।

ঈদের আগে ছুটি না বাড়ালে সড়ক ও মহাসড়কে বাড়িফেরা মানুষের বহন করা গাড়ি স্থবির হয়ে পড়বে। অন্তত ঈদের আগে দুদিন ছুটি বাড়ানো দরকার। এতে মানুষের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন হবে এবং অনেক দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচানো যাবে। একইসঙ্গে গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ইতোমধ্যে বলেছে ডলার সংকটের কারণে তাদের পাওনা বায়াররা সঠিকভাবে পরিশোধ করছেন না। এজন্য ঈদের আগে মালিকদের পক্ষে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করা কঠিন হবে। এটা হলে যদি তারা সড়ক অবরোধ করে তাহলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে। পাশাপাশি সরকারের নির্দেশনা অনুসরণ করে ভাগে ভাগে শ্রমিকদের ছুটির সিদ্ধান্ত কার্যকরে সরকার সংশ্লিষ্টদের সক্রিয় থাকতে হবে।

আমরা মনেকরি, একসঙ্গে অনেক মানুষ সড়কে নেমে পড়লে সরকারের কোনো ব্যবস্থাপনায় কাজ হবে না। এজন্য আগে থেকে ব্যবস্থাপনার বিষয়গুলো দেখভাল করতে হবে। এছাড়া এসব সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। তবে দ্রুতগতির ট্রেন চালু করতে পারলে চলাচল অনেক স্বস্তিদায়ক হতে পারে। এখন থেকেই পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করলে ঈদযাত্রা হবে শঙ্কাহীন।

মানবকণ্ঠ/এআই