Image description

টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নতুন করে সরকারি কেনাকাটায় নীতিমালা হচ্ছে। যার মাধ্যমে কেনাকাটার মাধ্যমে স্বচ্ছতা আসতে পারে। বাংলাদেশ বছরে প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলারের কেনাকাটা করে। যা বাৎসরিক বাজেটের প্রায় ৪০ শতাংশ। কিন্তু অনেক সময় সরকারি কেনাকাটার ক্ষেত্রে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। এই প্রশ্ন থেকে রেহাই পেতে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ টেকসই সরকারি কেনাকাটার নীতিমালা তৈরি করতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে নীতিমালার খসড়া প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগীয় সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে। আগামীকাল মতামত পাঠানোর শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
নতুন করে নীতিমালা তৈরি করার উদ্দেশ্য সম্পর্কে পরিকল্পনা কমিশন নাম না প্রকাশে শর্তে জানান, বর্তমান যে নীতিমালা রয়েছে তা অনেক পুরোনা। বর্তমান ডিজিটাল বাংলাদেশে এই নীতিমালা যুগোপযোগী করা অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে নতুন প্রস্তাবিত নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে, সরকারি কেনাকাটায় স্বচ্ছতার পাশাপাশি স্বল্প সময়ে ও কম দামে যেন কেনাকাটা করা যায় সে বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্ব পাবে। বেশি লাভ করার জন্য বা সময় অপচয় করার জন্য কেনাকাটার প্রয়োজন নেই। বরং প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে কত স্বল্প সময়ে পাওয়া তা এখন বিবেচ্য বিষয়। বিশেষ করে দুর্যোগের সময় যে পণ্যগুলো কেনাকাটা করা হয় তার বেশিরভাগ হচ্ছে সময়সাপেক্ষ। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ হচ্ছে। এই সময়ে প্রয়োজন হয় বিভিন্ন ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলার পণ্য।
টেন্ডার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনার জন্য বেশ কিছু পরিকল্পনার কথা নতুন নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়াও সরবরাহের সময়ের বিষয়টি বিশেষভাবে বলা হয়েছে। কোনোভাবে কালক্ষেপণ না করে যেন উন্নতমানের ও টেকসই পণ্য কেনা যায় তা বিবেচনায় আনা হচ্ছে।
কীভাবে নতুন নীতিমালা তৈরি করা হচ্ছে, এ প্রসঙ্গে আইএমইডি বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট সহায়তা করছে। তবে টেন্ডারে মূল্যের বিষয়টি বিভিন্নভাবে যাচাই-বাছাই করা হবে। আর তা হবে দ্রুত সম্পন্ন করা হবে। প্রতিযোগিতাভিত্তিক মূল্য যাচাই করা হবে। যেখানে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হবে।
সরকারি কেনাকাটার ক্ষেত্রে অনেক সময় দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের এক সদস্য বলেছেন, দুর্নীতিমুক্ত কেনাকাটার জন্য এই নতুন নীতিমালা করা হচ্ছে। তবে এখন যেহেতু নীতিমালা খসড়া পর্যায়ে রয়েছে সেহেতু আরও কোনো কোনো বিষয় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।
সরবরাহের ক্ষেত্রে যেন কেউ সিন্ডিকেট করতে না পারে সে বিষয়ে ই-টেন্ডার এখনও বহাল থাকলেও আগামীতে এ ব্যাপারে আরও স্বচ্ছতা আনা হবে। যেন সবার কাছে দৃশ্যমান হয়। মোটকথা প্রতিযোগিতার ভিত্তিতেই সরবরাহ যেন হয় সে লক্ষ্য নিয়ে নতুন নীতিমালা করা হবে। তবে মূল্যের ব্যাপারেও প্রতিযোগিতা ও মানের বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হবে।
নতুন নীতিমালায় আরও যে বিষয় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে তা হচ্ছে, প্রস্তাবিত নীতিমালা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় দেখভাল করবে। সে ক্ষেত্রে কোনো কিছু অনিয়ম হলে সেই মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব নিতে হবে।