Image description

আগামী ১ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক পণ্যের ওপর আমেরিকার আরোপিত ৩৫ শতাংশ নতুন শুল্ক কার্যকর হলে দেশের পোশাক খাতের ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের বিপাকে পড়বেন। এই নতুন হার কার্যকর হলে মোট শুল্কহার ৫০ শতাংশে দাঁড়াবে, যা বর্তমান অবস্থায় বাংলাদেশের কোটি কোটি টাকার ক্রয়াদেশ হারানোর আশঙ্কা তৈরি করেছে।

ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা করছেন যে, আমেরিকার বাজারনির্ভর বেশিরভাগ দেশীয় পোশাক কারখানা বন্ধের ঝুঁকিতে পড়বে। তবে, এই অনিশ্চয়তার মধ্যেও তারা একটি আশার আলো দেখছেন। ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা, এক সপ্তাহের মধ্যেই এ বিষয়ে সুখবর আসতে পারে। এই সুখবর কী হতে পারে, তা নিয়ে তারা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।

পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ'র তথ্যমতে, দেশে সচল পোশাক কারখানা আড়াই হাজারের মতো। যার মধ্যে বিজিএমইএ'র সদস্য এক হাজার ৩২২টি পোশাক কারখানার ওপর বাড়তি শুল্কের সরাসরি প্রভাব পড়বে। শুল্ক কার্যকর হলে আমেরিকার বাজারনির্ভর বেশিরভাগ দেশীয় পোশাক কারখানা বন্ধ হওয়ার শঙ্কায় ব্যবসায়ীরা। এছাড়া, কর্মসংস্থান হারাবে ১০ লাখের বেশি মানুষ। তবে, এক সপ্তাহের মধ্যে সুখবরের আশায় সংশ্লিষ্টরা।  

শাশা ডেনিমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামস মাহমুদ বলেন,‌ ‌‌‌‌‘রপ্তানির ৮৩ শতাংশই গার্মেন্টস, এটা আমাদের দুর্ভাগ্য যে আমরা পণ্যর বহুত্ব আনতে পারিনি। এটা আমাদের বড় চ্যালেঞ্জের জায়গা যে, আমাদের ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ অর্ডার যদি কমে যায় তাহলে অর্থনীতিতে কিছুটা প্রেসার সৃষ্টি করবে।’

বিকেএমইএ এর নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম বলেন, ‌‌‌‘উনারা যেভাবে রোডম্যাপ নিয়ে সামনে যাচ্ছে, এটা আমি মনে করি এটার একটা ইতিবাচক প্রভাব আছে। ৭ দিন থাকুক আর দশদিন থাকুক, সেটাতো আমাদের হাতে আছে।’  

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ৯০ দিন সময় পেয়েও দর-কষাকষিতে ব্যর্থ সরকার। তবে ,এখনো সময় আছে বলে ধারণা তাদের। শেষ সময়ে এসে তড়িগড়ি করলেও আলোচনায় রাখা হয়নি ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞদের।

সিপিডি সম্মাননীয় ফেলো  ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘অর্থের সঙ্গে জড়িত কর্মকাণ্ডে যাতে স্পষ্টতা থাকে সেটার দিকে সম্মিলিত দাবি থাকে, তাহলে আমি মনে করি, আমাদের বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সত্ত্বেও অর্থনৈতিক আমাদের যে চাহিদা, সে চাহিদা অনুযায়ী আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারব। 

ইপিবির হিসাবে, গত অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট রপ্তানি পণ্যের ১৭ শতাংশই যায় আমেরিকায় এর ৮৭ শতাংশই তৈরি পোশাক। 

এদিকে, আমেরিকার পাল্টা শুল্ক কমানোর বিষয়ে ইউএসটিআরের সঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের  ২৯ জুলাই বৈঠক হবে । সরাসরি আমেরিকায় গিয়ে আলোচনার কথা থাকলেও আপাতত এ বৈঠক হবে অনলাইনে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছে। মঙ্গলবার রাত ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত মোট আড়াই ঘণ্টাব্যাপী এ আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।

তবে, বৈঠকে যেহেতু শুল্ক নিয়ে দর-কষাকষির বিষয় রয়েছে তাই সশরীরে আলোচনার জন্য ইউএসটিআরের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশের ওপর আমেরিকার ঘোষিত ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবার কথা। বর্তমানে এ হার ১৫ শতাংশ। নতুন শুল্ক কার্যকর হলে দেশটিতে বাংলাদেশি পণ্যের উপর দু্ই হার মিলে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ হবে।