দুবাইয়ে রপ্তানি হবে ওয়েস্টার্ন মেরিন নির্মিত দুটি উচ্চক্ষমতার টাগবোট

বাংলাদেশের স্বনামধন্য জাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড লিমিটেড-এর তৈরি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন দুটি টাগবোট চলতি জুলাই মাসেই সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাইয়ে রপ্তানি হচ্ছে। এটি দেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্পের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন, যা বিশ্ববাজারে 'মেইড ইন বাংলাদেশ' ব্র্যান্ডের সুনাম আরও বাড়াবে।
চট্টগ্রাম বোটক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী লে. জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ বলেন, "গত বছর ওয়েস্টার্ন মেরিন 'রায়ান' নামের একটি জাহাজ রপ্তানি করেছিল, আর এবার নতুন এই দুটি টাগবোট রপ্তানি হচ্ছে। এই জাহাজগুলো বিশ্ব দরবারে 'মেইড ইন বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং করবে। বিশ্বব্যাপী শিপ বিল্ডিং শিল্পের বাজার প্রায় ৪শ বিলিয়ন ডলারের, যার ১% অংশও যদি বাংলাদেশ দখল করতে পারে, তবে অন্তত ২শ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব।"
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, ২০০৮ সালে আধুনিক জাহাজ নির্মাণ প্রথা চালু হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ অসংখ্য জাহাজ রপ্তানি করে প্রায় ২শ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। এই শিল্প সাময়িক বিপর্যয় কাটিয়ে আবারও ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
ওয়েস্টার্ন মেরিনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন সোহেল হোসেন জানান, ২০২৩ সালে তারা সংযুক্ত আরব আমিরাত ভিত্তিক মারওয়ান শিপিং লিমিটেডের সঙ্গে আটটি জাহাজ নির্মাণের চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তির আওতায় দুটি টাগবোট, দুটি লজিস্টিক ক্রাফট এবং চারটি ট্যাংকার অন্তর্ভুক্ত। বর্তমানে নির্মাণাধীন 'খালিদ' ও 'ঘাযা' নামের ৬৫ টন বোলার পুল ক্ষমতাসম্পন্ন টাগবোট দুটি এই জুলাই মাসেই ইউএইতে পাঠানো হবে। বাকি ৬টি জাহাজ ২০২৫-২৬ সালের মধ্যে হস্তান্তর করা হবে।
ক্যাপ্টেন হোসেন আরও জানান, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ ব্যবস্থার উন্নয়নেও ওয়েস্টার্ন মেরিন কাজ করছে। বাংলাদেশ ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট করপোরেশন (BIWTC)-এর অধীনে 'এমভি সুরমা' ও 'এমভি শাপলা' নামে দুটি আধুনিক যাত্রীবাহী জাহাজও তাদের তত্ত্বাবধানে নির্মাণাধীন রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সাল থেকে ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড বিদেশে জাহাজ রপ্তানি করে আসছে। বর্তমানে তারা বিশ্বের ১১টি দেশে মোট ৩৪টি জাহাজ রপ্তানি করেছে, যা বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ সক্ষমতার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
Comments