ফরিদপুরে হঠাৎ মরিচের দামে ধস, প্রতি কেজি ১২৫ টাকায় বিক্রি

ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার প্রধান মরিচের হাট মধুখালী পৌর সদর বাজারে হঠাৎ করে মরিচের দামে ব্যাপক ধস নেমেছে। মাত্র কয়েকদিন আগেও যেখানে প্রতি মণ কাঁচা মরিচ ১০ হাজার থেকে সাড়ে ১১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছিল, সেখানে বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) তা কমে প্রতি মণ মাত্র ৫ হাজার ১০০ টাকায় নেমে এসেছে। এতে চাষীরা চরম হতাশায় পড়েছেন।
মধুখালী বাজার দেশের বিভিন্ন জেলা শহর থেকে আসা ব্যাপারীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। প্রতি সোমবার ও শুক্রবার এখানে হাটে স্থানীয় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত মরিচ বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন। গত সোমবারের হাটে হঠাৎ করেই মরিচের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে প্রতি মণ ৬ হাজার টাকা থেকে ১০-১১ হাজার টাকায় পৌঁছায়। খুচরা বাজারে তখন প্রতি কেজি মরিচ ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।
কিন্তু বৃহস্পতিবারের চিত্র ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। আড়তদাররা জানান, প্রতি মণ মরিচ ৫ হাজার ১০০ টাকায় কেনাবেচা হয়েছে, যা প্রতি কেজিতে প্রায় ১২৫ টাকা।
মধুখালী মরিচ বাজারের আড়তদার মির্জা আহসানুজ্জামান আজাউল এবং আতিয়ার রহমান মোল্যা জানান, অতিবৃষ্টির কারণে মরিচ গাছ মরে যাওয়া এবং ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যাওয়ার কারণে এ বছর মরিচের আবাদ কম হয়েছে। গত সোমবার হাটে মরিচের আমদানি কম থাকায় এবং ব্যাপারীদের চাহিদা বেশি থাকায় দাম এক লাফে বেড়ে গিয়েছিল। তবে বৃহস্পতিবার বাজারে মরিচের আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দাম আবার কমে এসেছে। তাদের মতে, মরিচের দাম মূলত আমদানি ও চাহিদার ওপর নির্ভরশীল।
উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের ব্যাসদী গ্রামের মরিচ চাষী মোঃ কাউয়ুম শেখ জানান, তিনি ৬৫ শতাংশ জমিতে মরিচের চাষ করেছিলেন, কিন্তু অতিবৃষ্টিতে তার ৩০ শতাংশ জমিই পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় মরিচ গাছ মরে গেছে। ফলে তার লাভের মুখ দেখা হবে না। একই গ্রামের মোঃ জলিল শেখ ৩৫ শতাংশ জমিতে মরিচ চাষ করে বৃষ্টির কারণে প্রায় ২০ শতাংশ জমি হারিয়েছেন। তিনিও জানান, তার চাষের খরচও উঠবে না।
উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর মধুখালী উপজেলায় মোট ২ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদ করা হয়েছিল। এর মধ্যে অতিবৃষ্টির কারণে ১৫০ হেক্টর জমি আক্রান্ত হয়েছে এবং ১০ হেক্টর জমির মরিচ সম্পূর্ণরূপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কৃষি অফিস আরও জানিয়েছে যে, অতিবৃষ্টির কারণে মরিচ গাছের ফুল নষ্ট হচ্ছে এবং পরাগায়ন কম হওয়ায় ফলনও কম হচ্ছে। এই সম্মিলিত কারণে চাষীরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
Comments