মাছ লুট করে অব্যাহতি পাওয়া ছাত্রদল নেতা এখন কলেজের সভাপতি

নানা অভিযোগে অব্যাহতি পাওয়া বাগমারা উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক মহব্বত হোসেনকে মোহনগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি করায় এলাকায় চরম উত্তেজনা। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক আব্দুল হাই সিদ্দিক সরকার ৭ সেপ্টেম্বর চিঠিতে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
পূর্বতন সভাপতি জেলা যুবদলের সদস্যসচিব রেজাউল করিম টুটুলের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে অভিযোগ উঠায় তাঁর অনুসারী মহব্বতকে এ পদে মনোনীত করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের চিঠিতে বলা হয়, টুটুল দায়িত্ব পালনে অপারগতা দেখিয়েছেন বলে পরিবর্তন করা হয়েছে। এ ঘটনায় কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং স্থানীয় বিএনপি নেতাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ জন্ম নিয়েছে।
মহব্বতের বিরুদ্ধে পুকুরের মাছ লুট, চাঁদাবাজি ও ভয় দেখানোর অভিযোগ রয়েছে। গত বছর ১৯ অক্টোবর এসব অভিযোগের পর তাঁকে উপজেলা আহ্বায়ক ও প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। অভিযোগকারী মাছ চাষী রুবেল হক ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে লিখিত অভিযোগ দেন।
সূত্র জানায়, গত বছর ২০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক অতিরিক্ত সচিব সুলতান মাহমুদকে সভাপতি করে অ্যাডহক কমিটি গঠন করে। কিন্তু এরপর ২৬ জানুয়ারি তাঁকে সরিয়ে টুটুলকে সভাপতি করা হয়। অভিযোগ, টুটুল রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সুলতানকে সরান। পরে টুটুলের যোগ্যতা যাচাইয়ের আবেদন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে দেন শিক্ষানুরাগীরা। তারা বলেন, টুটুলের শিক্ষা প্যারামেডিকেল পর্যন্ত, যা স্নাতকোত্তর নয়—বিশ্ববিদ্যালয় নীতিমালা লঙ্ঘন।
সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদুজ্জামান রাসেল বলেন, "মহব্বতকে স্বার্থ রক্ষার জন্য সভাপতি করা হয়েছে। টুটুলের যোগ্যতা না থাকায় তাঁর অনুসারীকে এ পদ দেওয়া হয়।" সুলতান মাহমুদ বলেন, "আমি শিক্ষা বিস্তার চেয়েছিলাম, কিন্তু অজান্তেই আমাকে সরানো হয়। এখন যোগ্য মানুষেরা একা।"
টুটুলকে জাল সনদের অভিযোগে সনদপত্র চাওয়া হয়, কিন্তু তিনি দেননি এবং ফোনও ধরেননি। নতুন সভাপতি মহব্বতও মন্তব্য দেননি। কলেজের উপাধ্যক্ষ নুরুল হুদা উত্তেজিত হয়ে বলেন, "এ বিষয়ে উচ্চ কর্তৃপক্ষের কাছে জিজ্ঞাসা করুন।" জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিদর্শকও সাড়া দেননি।
এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা চরমে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
Comments