Image description

কিশোরগঞ্জের সাবেক সাংসদ ফজলুর রহমানের বাসার সামনে অশোভন স্লোগান দিয়ে আলোচনায় আসা তমা এবার চাঁদাবাজির অভিযোগে ফের আলোচনায় এসেছেন। পুলিশ ও মামলার বিবরণ অনুযায়ী, বুধবার গভীর রাতে রাজধানীর উত্তরায় এক গার্মেন্টস ব্যবসায়ীর বাসায় ঢুকে গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন তিনি।

বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে (সোয়া ১টার দিকে) উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের ৬ নম্বর রোডের একটি বাসায় প্রবেশ করেন তমাসহ কয়েকজন। তারা নিজেদের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে গার্মেন্ট ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেনকে একটি মামলা থেকে অব্যাহতির ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা বলেন এবং এর বিনিময়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। রাতেই পরিবারটি তাদের সাড়ে ৫ লাখ টাকা দেয়। বাকি সাড়ে চার লাখ টাকা পরদিন বিকাল ৪টার মধ্যে দিতে হবে বলে তারা হুমকি দেন। ফজরের আজানের সময় তারা বাসা থেকে চলে যান।

এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার দেলোয়ার হোসেনের শ্যালক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় তমাসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা দুজনকে আসামি করে মামলা করেন। ওই দিন রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে আসামি এ এইচএম নোমান রেজাকে বিমান বন্দর থানার সামনে থেকে গ্রেপ্তার করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাত ৩টা ৪০ মিনিটে তানজিল হোসেন ও ফারিয়া আক্তার তমাকে বিমান বন্দর থানার জসিম উদ্দিন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে নিলয় এবং অজ্ঞাতনামা দুই আসামি এখনো পলাতক রয়েছেন।

তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আব্দুল মালেক খান জানান, তারা চাঁদাবাজির চার লাখ ৩০ হাজার টাকা উদ্ধার করেছেন এবং বাকি টাকা উদ্ধারের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে। অজ্ঞাত দুই আসামির পরিচয় সনাক্ত করার কাজও চলছে।

মামলার বাদী রিয়াজ উদ্দিন বলেন, “রাতটা আমাদের জন্য ছিল মানসিক টর্চারের একটা রাত। রাত ১টার পর সমন্বয়ক পরিচয়ে পুলিশ নিয়ে ধস্তাধস্তি করে তারা বাসায় প্রবেশ করে।” তিনি জানান, ৬ জন চাঁদাবাজি করতে এসেছিল, যাদের মধ্যে দুজন ইনডোরে এবং চারজন আউটডোরে ছিল। তাদের সঙ্গে ৫-৬ জন পুলিশও ছিল। রিয়াজ উদ্দিনের অভিযোগ, চাঁদাবাজরা পুলিশকেও অসহায় করে রেখেছিল এবং তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ করতে দিচ্ছিল না। তারা নিজেদের সেনাবাহিনী ও পুলিশের ঊর্ধ্বে বলে হুমকি দেয়।

রিয়াজ উদ্দিনের অভিযোগ অনুযায়ী, নোমান রেজা একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেছিলেন, যেখানে দেলোয়ার নামে একজন আসামি ছিলেন। সেই সূত্র ধরে তারা গার্মেন্টস ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেনকে টার্গেট করেন।

আসামিদের আইনজীবী এ এইচ এম আশিক বলেন, “আমার যেটুকু ধারণা, তাদের ফাঁসানো হয়েছে। তারা মামলা করেছে, আসামি ধরতে পুলিশ নিয়ে সেখানে গেছে।” তিনি আরও বলেন, “সমন্বয়করা বেশিরভাগই এটা করেছে।” তবে তিনি দাবি করেন, তমা অসুস্থ ছিলেন এবং তার কাছে একটি বড় প্রেসক্রিপশন আছে। যদিও কী ধরনের অসুস্থতা, সে বিষয়ে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

আদালত তিন আসামির জামিন আবেদন নাকচ করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। আগামী ১৬ অক্টোবর মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য করা হয়েছে।