
নওগাঁ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সামসুল হকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের আপত্তিকর মেসেজ পাঠানো এবং অবৈধ সম্পর্কে জড়ানোর জন্য চাপ প্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন স্ক্রিনশটে অধ্যক্ষকে ছাত্রীদের ওড়না ছাড়া ছবি চাইতে এবং অশালীন মন্তব্য করতে দেখা গেছে। এ ঘটনায় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া একটি স্ক্রিনশটে দেখা যায়, অধ্যক্ষ সামসুল হক এক ছাত্রীর সৌন্দর্যের প্রশংসা করে লেখেন, “আরও সুন্দরী ছবি আছে তোমার।” ছাত্রী উত্তরে বলেন, “আর নেই স্যার। আমি সুন্দর না।” এরপর অধ্যক্ষ লেখেন, “আছে আছে, ওড়না ছাড়া।” ছাত্রী বারবার অস্বীকার করলেও তিনি বলেন, “কলেজে দেখেছি তো।” এমন কথোপকথনের স্ক্রিনশট সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী জানান, “দুই বছর আগে বিএমসি মহিলা কলেজে অধ্যক্ষ থাকাকালীন সামসুল হক স্যার আমার সঙ্গে ফেসবুকে যুক্ত হন। আমার ছবিতে অশালীন মন্তব্য করতেন এবং ওড়না ছাড়া ছবি চেয়েছিলেন। ভয়ে তখন চুপ ছিলাম, কিন্তু এখন অন্য ছাত্রীদের স্ক্রিনশট ভাইরাল হওয়ায় প্রতিবাদ করছি।”
আরেক স্ক্রিনশটে দেখা যায়, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে অধ্যক্ষ এক ছাত্রীকে লেখেন, “নতুন বউ সাজে দেখা করলে না?” এবং তার সৌন্দর্য নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেন। অর্থনীতি বিভাগের ওই শিক্ষার্থী জানান, “স্যার প্রায়ই ব্যক্তিগতভাবে দেখা করতে চাইতেন। এড়িয়ে যাওয়ায় আমাকে কলেজের সাংস্কৃতিক কার্যক্রম থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে এবং টিসি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে।”
অভিভাবক লিপি বেগম বলেন, “একজন শিক্ষকের এমন নোংরা মানসিকতা অগ্রহণযোগ্য। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত আমার মেয়েকে কলেজে পাঠাব না।”
অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ সামসুল হকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা স্ক্রিনশটগুলো যাচাই করে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন।
Comments