Image description

রাঙ্গামাটি শহরের ভেদভেদী এলাকায় শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী যোগাশ্রম মন্দিরের পূর্ণাঙ্গ পরিচালনা কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। মন্দির পরিচালনা কমিটি সভাপতির অনিয়ম, দুর্নীতি ও সংগঠনের বিধি-বহির্ভূত কর্মকাণ্ডের কারণে ৩ বছরের কমিটি মাত্র ১১ মাসেই বিলুপ্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মন্দির পরিচালনা কমিটি কর্তৃপক্ষ।

মন্দির পরিচালনা কমিটি কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ইতোপূর্বে গত শনিবার বিকালে মন্দিরে আয়োজিত এক সভায় উপস্থিত সনাতনী ভক্তপ্রাণদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাঁরা জানান, মন্দিরের কমিটি গঠন হয়েছে ১১ মাস। এই ১১ মাসে সংগঠনে সরকারি ভাবে আয়-ব্যয় কোনো হিসাব অডিট হয়নি এবং গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দায়িত্বরত অর্থসম্পাদককেও তাঁর দায়িত্ব যথাযথ বুঝিয়ে দেয় হয়নি। যা করছেন সভাপতি কুশল চৌধুরী একক ক্ষমতাবলে কমিটির কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এর ফলে মন্দির আয়-ব্যয় নিয়ে কমিটির সদস্যরা সভাপতির উপর অনাস্থা প্রকাশ করেন। এ কারণে কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে এবং সকলের সর্বসম্মতিক্রমে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ও জেলার জন্মাষ্টমী পরিষদ সভাপতি দয়াল দাশ সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেন। 
আহ্বায়ক কমিটিতে রয়েছেন; আহ্বায়ক আশীষ কুমার দে, সদস্য সচিব নিখিল কান্তি দে, সদস্য সুব্রত দে, নন্দন দেব নাথ,সান্টু চৌধুরী,অজিত শীল ও পুলক শীল।

শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী যোগাশ্রম মন্দিরের অর্থ সম্পাদক রনজিত কুমার ধর অভিযোগ করেন, মন্দির কমিটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাকে কমিটির কোনো দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়নি সভাপতি কুশল চৌধুরী। সভাপতি নিজ ক্ষমতা বলে গঠনতন্ত্র বিরোধী প্রতিনিয়ত কার্যকলাপ করে আসছেন এবং কমিটির বিভিন্ন আয়-ব্যয় হিসাব নিয়ে অনিয়ম এবং দুর্নীতি করছেন সভাপতি। এগুলো প্রকাশ পাওয়ায় অন্যান্য সদস্যরা সভাপতির উপর ক্ষিপ্ত হয়ে অনাস্থা প্রকাশ করেন।

এদিকে এ বিষয়ে শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী যোগাশ্রম মন্দিরের সভাপতি কুশল চৌধুরীর কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদককে জানান, কমিটি গঠনের ১১ মাসের আয়-ব্যয় হিসাবের জন্য গত শনিবার একটি মিটিং কল করি। এই মিটিংকে পাশ কাটিয়ে তাদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি বাতিল করা হয়। 

তিনি আরো জানান, তাঁর বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও সংগঠনের বিধি-বহির্ভূত কর্মকাণ্ড এগুলো ভিত্তিহীন। তাকে কমিটি থেকে সরানোর জন্য একটি পক্ষ ষড়যন্ত্র করছে।

অপরদিকে, আহ্বায়ক কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মন্দিরের অনিয়ম, দুর্নীতি ও বিধি-বহির্ভূত কর্মকাণ্ড যাতে পুনরায় না ঘটে সে বিষয়ে সকলকে সচেতন থাকতে হবে। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মন্দিরকে কেন্দ্র করে চলমান  অনিয়ম, দুর্নীতি ও সংগঠনের বিধি-বহির্ভূত কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে প্রতিবাদ প্রকাশিত হয়েছে তা এই সভার পর থেকে প্রচারণা বন্ধ রাখারও আহ্বান জানানো হয়।

উল্লেখ্য, রাঙ্গামাটি শহরের ভেদভেদী এলাকায় শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী যোগাশ্রম মন্দিরের পূর্ণাঙ্গ পরিচালনা কমিটি তিন বছরের জন্য গঠন করা হয় ২০২৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর মাসে। কিন্তু সভাপতির অনিয়ম, দুর্নীতি ও সংগঠনের বিধি-বহির্ভূত কর্মকাণ্ডের এই কমিটি মাত্র ১১ মাসে বিলুপ্ত করা হয়েছে।