Image description

খুলনার পাইকগাছা উপজেলার একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টানা বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। কলমিবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং কালুয়া গড়ের আবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাঠ ও আশপাশের এলাকা মাসের পর মাস পানিতে তলিয়ে থাকছে। এতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে যাওয়া, খেলাধুলা বন্ধ হওয়া এবং ক্লাসরুমে পানি প্রবেশের মতো সমস্যা দেখা দিয়েছে।

কলমিবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থা

চাঁদখালী ইউনিয়নে ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত ৬৫ নং কলমিবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ৮২ শতক জমির ওপর অবস্থিত। এখানে ৪ জন শিক্ষক ও ৫৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। বিদ্যালয়ের পেছনে হাজার বিঘা চিংড়ি ঘের এবং পাশে পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি কালভার্ট থাকলেও চাঁদখালী, বিষ্ণুপুর ও স্লুইস গেট বন্ধ থাকায় পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে বিদ্যালয়ের মাঠে হাঁটু পরিমাণ পানি জমে থাকে। প্রধান শিক্ষক বিকাশ বরণ সানা জানান, গত দেড় মাসের একটানা বৃষ্টির কারণে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা ও বিনোদন বন্ধ হয়ে গেছে, এবং উপস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। তিনি বলেন, “মাঠ বালু-মাটি দিয়ে ভরাট করে উঁচু করা এবং স্লুইস গেট খুলে পানি নিষ্কাশন নিশ্চিত করা হলে সমস্যার সমাধান সম্ভব।”

কালুয়া গড়ের আবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত ১২৪ নং কালুয়া গড়ের আবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ৩৩ শতক জমির ওপর অবস্থিত। এখানে ৪ জন শিক্ষক ও ৫১ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম জানান, গত মাস থেকে টানা বৃষ্টিতে বিদ্যালয়ের মাঠ তলিয়ে গেছে, এমনকি ক্লাসরুমেও পানি প্রবেশ করছে। এতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে। বিদ্যালয়ের সামনে নৈর নদী থাকলেও পানি নিষ্কাশনে বিলম্ব হচ্ছে। তিনি বলেন, “মাঠ উঁচু করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে। সরকারি বরাদ্দ পেলে বালু দিয়ে মাঠ ভরাট করে সমস্যার সমাধান সম্ভব।”

স্থানীয়দের অভিযোগ

স্থানীয় বাসিন্দা ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইউনুছ মোল্লা জানান, কিছু ব্যক্তি স্লুইস গেটের মুখ বন্ধ করে রাখায় পানি নিষ্কাশন বন্ধ হচ্ছে, যা জলাবদ্ধতার প্রধান কারণ। তিনি সরকারের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধানের দাবি জানান।

প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া

পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন জানান, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁদের এ বিষয়ে অবহিত করেনি। তবে বিষয়টি জানার পর তিনি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে আবেদন নিয়ে চলতি অর্থবছরে মাঠ ভরাটের ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।

সমাধানের পথ

জলাবদ্ধতার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে। স্লুইস গেট উন্মুক্ত করা, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নত করা এবং বিদ্যালয়ের মাঠ বালু-মাটি দিয়ে ভরাট করে উঁচু করা জরুরি। স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাতে সহায়ক হবে।