Image description

শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার রানীশিমুল-তাতীহাটী এলাকার সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ইবনে জায়েদের বিরুদ্ধে আদালতের নির্দেশে জমি সংক্রান্ত তদন্তে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার আদালতে ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়েছেন।

জানা যায়, রানীশিমুল ইউনিয়নের বাসিন্দা মৃত নুরল হকের মৃত্যুর পর তাঁর তিন ছেলে ও তিন মেয়ে পৈত্রিক সম্পত্তি সমানভাবে ভাগ করে চাষাবাদ ও দখলভোগ করে আসছেন। তবে পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে নুরল হকের ছোট ছেলে দেলোয়ার হোসেন প্রায় ছয় বছর আগে নিজ ভিটা ছেড়ে অন্যত্র বসবাস শুরু করেন। তাঁর কিছু জমি স্থানীয় রাজু মিয়া ইজারা হিসেবে পাঁচ বছর ধরে ভোগ করছেন। এছাড়া নুরল হকের মেয়ে মেহেরুন্নেসা ও শিরিনা বেগম তাঁদের পৈত্রিক জমি নুর ইসলাম নামে এক ব্যক্তির কাছে ইজারা দিয়েছেন।

এ অবস্থায় নুরল হকের বড় ছেলে জুহুরুল হক তাঁর ছেলে মোশারফ হোসেন ফটিককে বাদী বানিয়ে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারায় (মামলা নং ৬৩/২৫) বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পিটিশন দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি নুরল হকের দুই মেয়ে ও ছেলে দেলোয়ার হোসেনকে ‘অবৈধ দখলদার’ দাবি করেন, যদিও তাঁদের নামে ডিজিটাল খতিয়ান (নং ২৫-১৪৯০) রয়েছে এবং নিয়মিত খাজনা প্রদান করা হয়।

আদালতের নির্দেশে সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ইবনে জায়েদ তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি প্রকৃত দখলদারদের ‘অবৈধ দখলদার’ এবং বাদী পক্ষকে দখলদার হিসেবে উল্লেখ করে একপাক্ষিক প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। এতে ভুক্তভোগী পরিবারের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, বৈধ খতিয়ান ও খাজনা প্রদানকারী মালিকদের ‘অবৈধ’ ঘোষণা আইনগতভাবে প্রশ্নবিদ্ধ। তারা দ্রুত স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

দেলোয়ার হোসেনের ছেলে আশিক বলেন, “আমাদের নামে ডিজিটাল খারিজকৃত দলিল, খতিয়ান ও খাজনার রেকর্ড বৈধ। তারপরও কীভাবে আমরা অবৈধ দখলদার হলাম, বুঝতে পারছি না। আমরা সুষ্ঠু তদন্ত চাই।”

নুরল হকের বড় মেয়ে মেহেরুন্নেসা বলেন, “আমরা জন্ম থেকেই এই জমিতে আছি। প্রায় ১২ বছর ধরে চাষ করছি। মিথ্যা তথ্য ও নামমাত্র তদন্তের মাধ্যমে আমাকে অবৈধ দখলদার বানানো হয়েছে। আমরা ন্যায়বিচার চাই।”

ছোট মেয়ে শিরিনা বলেন, “এই প্রতিবেদনের কারণে আমরা হয়রানির শিকার হচ্ছি। আমাদের জমি মোশারফ হোসেন দখল করে নিয়েছে। সহকারী ভূমি কর্মকর্তার একপাক্ষিক তদন্ত আমাদের ক্ষতি করেছে।”

এ বিষয়ে সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ইবনে জায়েদ বলেন, “আমি যথাসম্ভব সঠিক তদন্ত করেছি। কারও প্রতি পক্ষপাতের সুযোগ নেই। তদন্ত রিপোর্টের বিরুদ্ধে কেউ চাইলে নারাজি দিতে পারে।”

তবে ভুক্তভোগীরা জানান, মামলার বিবাদী হওয়ায় তাঁদের নারাজি দেওয়ার আইনগত অধিকার নেই, যা কেবল বাদীর জন্য প্রযোজ্য।