সমগ্র নারী সমাজের জন্য মাহেরীন চৌধুরী একজন জাতীয় বীর : আফরোজা আব্বাস

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস বলেছেন, ‘সমগ্র নারী সমাজের জন্য মাহেরীন চৌধুরী একজন জাতীয় বীর। তার কবর জিয়ারতের মাধ্যমে রুহের মাগফেরাত ও শোক সন্তপ্ত পরিবারকে সমবেদনা জানাতে এখানে এসেছি। আমাদের দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও দেশ নায়ক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আমরা এসেছি। তাদেরকে সমবেদনা জানানোর আমাদের ভাষা নেই। যারা স্বজন হারিয়েছে তারাই শুধু এটা উপলব্ধি করতে পারবে। আমরা শুধু দেখছি মাঝে মাঝে বাকরুদ্ধ হচ্ছি। ভাষা হারিয়ে ফেলছি’।
ঢাকার উত্তরায় শিক্ষার্থীদের জন্য জীবন উৎসর্গকারী মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষিকা মাহেরীন চৌধুরীর কবর জিয়ারত করতে এসে শুক্রবার এসব কথা বলেণ তিনি। এদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা থেকে তাঁর নেতৃত্বে মহিলা দলের নেত্রীরা নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বগুলাগাড়ি চৌধুরী পাড়া গ্রামে পৌঁছে কবর জিয়ারত অংশ নেন। শেষে শিক্ষিকা মাহেরীনের পরিবারের খোঁজবর নিয়ে সমবেদনা জানান।
তিনি বলেন,‘মাহেরীন চৌধুরী এতোগুলো বাচ্চাকে বাঁচাতে গিয়ে তিনি প্রমাণ করেছেন তিনি একজন মা, একজন শিক্ষক। এই বাচ্চার সঙ্গে তার রক্তের সম্পর্ক ছিল না, ছিল আত্মার সম্পর্ক। তিনি সব গুলো বাচ্চাকে নিজের বাচ্চা মনে করেছেন। তিনি তার পরিবার আত্মীয় স্বজন কারো কথা চিন্তা করেন নাই। আমি মনে করি শিক্ষকতা যে মহান পেশা, এই পেশাকে একটা মহানুভবতার জায়গায় পৌছে দিয়েছেন তিনি। সমগ্র নারী সমাজের জন্য তিনি একজন গর্বিত মা হয়ে থাকবেন’।
মাহেরীন চৌধুরীর মহানুভবতার জন্য রাষ্ট্রীয় সম্মান দেওয়া উচিৎ ছিল দাবি করে বলেন,‘মালেশিয়ার প্রধানমন্ত্রী তাকে যে সম্মান দিয়েছেন, তারপর আরেক দেশের প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন। যেটা সবার আগে তার প্রাপ্য ছিল বাংলাদেশের উপদেষ্টাদের পক্ষ থেকে। প্রধান উপদেষ্টার উচিৎ ছিল তাকে প্রথম রাষ্ট্রীয় সম্মান দেওয়া। আমি মনে করি এটা ছিল তার প্রাপ্তি। তার প্রাপ্য সম্মান অবশ্যই দেওয়া উচিৎ, রাষ্ট্রীয় সম্মান তার জন্য প্রযোজ্য। আমি মনে করি অনতিবিলম্বে সরকার তাকে রাস্ট্রিয় সম্মানে ভূষিত করুক’।
মাহেরীন চৌধুরী জন্য সমগ্র নারী সমাজ গর্বিত উল্লেখ করে বলেন,‘ তিনি একজন গর্বিত মা, তার কারণে গর্ব করি যে আমরাও একজন নারী। সমগ্র নারী সমাজ যেন মাহেরীন চৌধুরীর মতো দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে। আমরা সমগ্র নারী সমাজ মনে করি তিনি আমাদের হৃদয়ে আছেন, থাকবেন এবং তার আদর্শকে ধারণ করে আমরা যেন নিজেদেরকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি’।
তিনি শিক্ষক সমাজের প্রতি বলেন,‘শিক্ষকদের বলবো তিনি যেমন শিক্ষকতার মহান পেশাকে মহিমান্বিত করেছেন শিক্ষকরা যেন সেটাকে ধারণ করেন। এই যে বাচ্চাগুলো (মাহেরীন চৌধুরীর দুই সন্তান) আজকে এতিম হয়ে গেল বাচ্চাগুলো যেন গর্ব করে’।
মাহেরীন চৌধরিীর সঙ্গে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আত্মীয়তার সম্পর্কের কথায় বলেন, ‘সম্মান দেওয়ার মালিক মহান আল্লাহ তাআলা। মাহেরীন চৌধুরী যদি আগে বলতেন আমি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাতিজি। তাহলে তাকে স্বৈরাচারী হাসিনার সময় অনেক অপদস্থ, অসম্মানিত হতে হতো, চাকুরীও হয়তো থাকতো না। তারপরেও তাকে অনেক হেনস্তার স্বীকার হতে হয়েছে। তার কপালে এই যে সম্মান মহান আল্লাহতায়ালা রেখেছিলেন জন্যই তিনি আজকে সম্মানিত বীরের মর্যাদা পেয়েছেন’।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য হেলেন জেরিন খান, মৃত মাহেরীন চৌধুরীর স্বামী মনছুর হেলাল, বিএনপি নেতা আবু সাঈদ চৌধুরী ডিডু, নীলফামারী জেলা মহিলা দলের সভাপতি তাসমিন ফৌজিয়া ওপেল, সাধারণ সম্পাদক নাসরিন আক্তার, লালমনিরহাট জেলা মহিলা দলের সভাপতি এডভোকেট জিনাত ফেরদৌস আরা রোজি, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আঞ্জু মনোয়ারা শাপলা, জলঢাকা উপজেলা মহিলা দলের সভাপতি নাসনি আক্তার ববি, সাধারণ সম্পাদক হেমা আহম্মেদ, ডিমলা উপজেলা সভাপতি নুরজাহান পারভীন, জেলা শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী পেশাজীবী পরিষদের জলঢাকা উপজেলার সাধারণ সম্পাদক শাহ্ মো. রোকনুজ্জামান চৌধুরী।
Comments