
চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য আন্তর্জাতিক অপারেটরের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকালে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের (এনসিটি) কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন। তার মতে, আন্তর্জাতিক অপারেটরদের মাধ্যমে বন্দরের কার্যক্রম আরও সুচারু ও আধুনিক হবে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘বর্তমানে আমরা আমাদের বন্দরগুলো দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করছি। তবে আরও দক্ষতা অর্জনের জন্য আমাদের আন্তর্জাতিক পরিসরে প্রবেশ করতে হবে। যখনই একটি আন্তর্জাতিক অপারেটর নিয়োগ করা হবে, তখনই একটি বন্দর আন্তর্জাতিক পরিসরে প্রবেশ করতে পারবে।’
পরিদর্শনকালে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান, কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চল রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী, বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বর্তমানে এনসিটি পরিচালনায় নিয়োজিত চট্টগ্রাম ড্রাইডক লিমিটেডের (সিডিডিএল) কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
৭ জুলাই বন্দর কর্তৃপক্ষ নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনার জন্য ছয় মাসের জন্য অস্থায়ীভাবে বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিচালিত চট্টগ্রাম ড্রাইডক লিমিটেডকে (সিডিডিএল) দায়িত্ব দিয়েছে। এর আগে এটি পরিচালনা করত বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড।
সরকার বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ডিপি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে নিউমুরিং টার্মিনাল পরিচালনা নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এই অন্তর্বর্তী সময়ে পরিচালনা করবে সিডিডিএল।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা কেবল পুরোনো অপারেটরের পরিবর্তে নতুন অপারেটর নিয়োগ করতে যাচ্ছি। এর একমাত্র উদ্দেশ্য দক্ষতা বৃদ্ধি। কারণ, আমি বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন বন্দরের কার্যক্রম পরিদর্শন করেছি। আমার এতে কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থ নেই, এমনকি আমি চট্টগ্রামের বাসিন্দাও নই।’
নৌ উপদেষ্টা বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের নিজস্ব বন্দর। এটি আমাদের সম্পদ এবং এটি আমাদের হাতেই থাকবে। কেউ যদি ভিন্নভাবে অপপ্রচার করে, আমি আশা করি তারা দেশের স্বার্থে আর এমনটি করবে না।’
নৌ উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমরা এগিয়ে যেতে চাই। আমরা বৈশ্বিক অঙ্গনে প্রবেশ করতে চাই। নিজেদের মধ্যে আটকে থাকতে চাই না।’
সাইফ পাওয়ারটেক প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘১৭-১৮ বছর ধরে এনসিটি এবং আরেকটি টার্মিনাল পরিচালনাকারী এই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানটি ভালো কাজ করেছে। তবে সরকার এখন তাদের তুলনায় আরও দক্ষতার সঙ্গে টার্মিনাল পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছে।’
সিডিডিএল এনসিটির দায়িত্ব নেওয়ার পর অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘ড্রাইডক কর্তৃপক্ষ এনসিটির দায়িত্ব নেওয়ার পর কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণ গড়ে ৩০ শতাংশ বেড়েছে। আগামীতে যে বিদেশি অপারেটর নিয়োগ পাবে, তার অধীনে এই উন্নয়ন ধারাবাহিক থাকবে।’
বন্দরের মাশুল বাড়ানো নিয়ে নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, মন্ত্রণালয় এককভাবে মাশুল বাড়ায়নি। আন্তমন্ত্রণালয় আলোচনা হয়েছে। ব্যবহারকারীদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে বন্দরের মাশুল বাড়ানো হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রধান বন্দরের চেয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের মাশুল এখনো অনেক কম।
কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চল রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী বলেন, সিডিডিএল দায়িত্ব নেওয়ার পর ১৭ দিনে নিউমুরিং টার্মিনালে জাহাজের গড় অবস্থান গড়ে ১০ ঘণ্টা সময় কমেছে। কনটেইনারের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩০ শতাংশ।
Comments