Image description

গোপালগঞ্জ শহরে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিবিড় টহল জোরদার করেছে। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সহিংসতা, সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে কাজ করছে। বুধবার (১৬ জুলাই) রাত ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ কার্যকর থাকায় শহরের রাস্তাঘাট প্রায় জনশূন্য। এরই মধ্যে লঞ্চঘাট এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বিত টহল দল সড়কে অবস্থানরত লোকজনকে সরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি দুজনকে আটক করেছে।

এদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে দলটির নেতাকর্মীদের উপর আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের হামলা এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত এ ঘটনায় ২০ জনকে আটক করেছে যৌথবাহিনী।

গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মীর মো. সাজেদুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘সংঘাতের ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এ ঘটনায় ২০ জনকে আটক করা হয়েছে। তারা থানায় আছেন। রাত ৩টার দিকে যৌথ বাহিনী তাদের থানায় হস্তান্তর করে। শহরের পরিবেশ এখন শান্ত রয়েছে।

কারফিউ থাকায় মার্কেট ও দোকানপাট বেশিরভাগই বন্ধ রয়েছে। তবে সড়কের পাশের বা গলির ভেতর দু-একটি করে দোকান খোলা ছিল। উৎসুক অনেক মানুষকেও শহরে দেখা গেছে। 

খাদ্যপণ্য উৎপাদনকারী একটি প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় বিক্রয়কর্মী মো. হাসান বলেন, এমন ঘটনা কারও প্রত্যাশিত ছিল না। আমরা খেটে খাওয়া মানুষ, হরতাল-কারফিউ হলে আমাদের সমস্যা। আমরা এই পরিস্থিতিতে সবাই আতঙ্কে আছি। 

নিহত সোহেল রানার প্রতিবেশী সোনিয়া আক্তার বলেন, এনসিপির কর্মসূচি ঘিরে কয়েকদিন ধরেই এখানে উত্তেজনা চলছে। তাহলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কেন পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেনি? কেন এমন ঘটনা ঘটল? এখন মানুষ আতঙ্কিত অবস্থায় রয়েছে।

ব্যাংকে টাকা তুলতে আসা রাজমিস্ত্রী আসলাম হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু এই এলাকার মানুষের কাছে একটা আবেগ। এটা শুধু দলের নেতাকর্মীদের বিষয় না। ৫ আগস্টের পর তো কোনো নেতাকর্মী এলাকায় নেই। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আপত্তিকর কোনো কথা সাধারণ মানুষও ভালোভাবে নেয়নি। তাই হামলার ঘটনা ঘটে। তবে অবশ্যই এই মৃত্যু কারও কাম্য ছিল না।