Image description

মানিকগঞ্জ জেলা আদালত চত্বরে বিয়ে পড়ানোর প্রবণতা উদ্বেগ তৈরি করেছে। অভিযোগ রয়েছে, আদালতে কর্মরত কিছু আইনজীবীর সহকারী (মুহুরী) নিয়ম বহির্ভূতভাবে মুসলিম তরুণ-তরুণীদের বিয়ে পড়াচ্ছেন। অথচ এসব বিয়ের নেই কোনো বৈধতা-না শরিয়ত অনুযায়ী, না আইনগতভাবে।

বুধবার (১৬ জুলাই) সকালে মানিকগঞ্জ কোর্ট এলাকায় অবৈধ বিবাহ নিবন্ধন বন্ধ এবং কাজী মনিরুজ্জামান এর ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধনে জেলা কাজী সমিতি এ কথা জানান। 

মানববন্ধনে জেলা কাজী সমিতির সভাপতি ফজলুর রহমান, সহ-সভাপতি আবু দাউদ, মাওলানা নাজমুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম, সদর উপজেলার সভাপতি নূর মোহাম্মদ, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, সাটুরিয়া উপজেলার সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রউফ, সিঙ্গাইর উপজেলার সভাপতি হারুন অর রশিদ, হরিরামপুর উপজেলার সভাপতি আবু হানিফ, সদর উপজেলার পুটাইল ইউনিয়নের কাজী শাহীন তারেক, মানিকগঞ্জ পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের কাজী এএসএম সাইফুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, কোর্ট এলাকায় নামধারী কাজীদের দৌরাত্ম বেড়ে গেছে। নামধারী কাজীদের ভিড়ে সংকট তৈরি হয়েছে আসল কাজীদের। নকল কাজীদের কাছে এসে মানুষ প্রতারিত হচ্ছে। সম্প্রতি এমন ঘটনায় ভুয়া কাজীর কাছ থেকে নকল তুলতে গিয়ে অমানবিক মারধরের শিকার হয়েছেন কাজী মনিরুজ্জামান। আমরা এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করি।

জেলা কাজী সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম বলেন, বিয়ের জন্য নির্ধারিত কাবিননামা, সাক্ষী, মোহর নির্ধারণ, এবং নিকাহ রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক। এগুলো ছাড়া কোনো বিয়ের বৈধতা নেই। কোর্টে যারা বিয়ে পড়াচ্ছেন, তারা এসব মানছেন না।

জেলা কাজী সমিতির সভাপতি ফজলুর রহমান বলেন, বিয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি ধর্মীয় ও সামাজিক বিষয়কে এভাবে প্রহসনে পরিণত করা অত্যন্ত বিপজ্জনক। এই প্রবণতা বন্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, কঠোর নজরদারি এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।

মানববন্ধন শেষে সমিতির পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসককে কোর্ট এলাকায় অবৈধ বিয়ে বন্ধের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

বিষয়টি উদ্বেগের জানিয়ে মানিকগঞ্জ জেলা জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর নূরতাজ আলম বাহার বলেন, এসব ভুয়া বিয়ের ফলে পরবর্তীতে নারী নির্যাতন, তালাক কিংবা সম্পত্তির উত্তরাধিকার নিয়েও জটিলতা দেখা দেয়। অনেক নারী বিচার পেলেও প্রমাণের অভাবে আটকে যায় অনেক মামলা। এক্ষেত্রে প্রশাসনের উদ্যোগী হয়ে আইনানক ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে হবে।