প্রাণহানির ঝুঁকি নিয়ে চলছে বিদ্যালয়ের শ্রেণী কার্যক্রম

যেকোনো মুহূর্তে ধসে পড়তে পারে ভবন! এমন ভয় ও আতঙ্কের মধ্যে পাঠদান চলছে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির রোসাংগিরি আরবানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
জানা গেছে, ফটিকছড়ি উপজেলার সমিতির হাট ইউনিয়নের রোসাংগিরি আরবানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯২১ সালে স্থাপিত হয়। ১৯৯৩-১৯৯৪ সালে দ্বিতল বিশিষ্ট বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টার ভবন নির্মাণ করে দেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। ৭-৮ বছর আগে সেই ভবনের পিলারে ফাটল দেখা দিলে তা আস্তর করে সংস্কার করা হয়। পরে সে প্লাস্টারও ঝরে যায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের প্রত্যেকটি পিলারে ফাটল ধরেছে। মরিচা পড়ে রড উন্মুক্ত হয়ে গেছে। ২৬ পিলারের মধ্যে সবকটি পিলারের অবস্থা প্রায় একই। এটি বিদ্যালয় ভবন কাম সাইক্লোন শেল্টার হওয়ায় নেই পার্টিশন ওয়াল। ফলে যেকোনো মুহূর্তে ভবন ধ্বসে পড়ে প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। এমন ঝুঁকি নিয়েই ২৭০ শিক্ষার্থী এখানে ক্লাস করছে। ৯ জন শিক্ষক পাঠদানে নিয়োজিত আছেন।
বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণির শিক্ষার্থী আইমান ও সালমা ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাহমিদা ও রায়হান বলেন, তাদের বিদ্যালয় ভবনের পিলারে ফাটল ধরেছে। ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণীকক্ষে পড়তে খুব ভয় লাগে। একটা নতুন ভবন নির্মাণ করা হলে আনন্দে-আনন্দে পড়ালেখা করতাম।
সহকারী শিক্ষক সুরজিৎ দেব বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয় ভবনের পিলারে ফাটল ধরেছে। জরাজীর্ণ ভবনে পাঠদান কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। এই ভবনটি ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণের দাবি করছি।
টিটু চৌধুরী নামে একজন অভিভাবক বলেন, ছেলে-মেয়েকে স্কুলে পাঠিয়ে আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়। বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণ অতীব জরুরি হয়ে পড়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নুরু”ছাফা বলেন, ২০১৪ সালে পিলারে ফাটল দেখা দেয় এবং ছাঁদ থেকে পানি পড়ে। তখন শিক্ষা অফিসে যোগাযোগ করি। পরবর্তী ২০১৮ সালে বিশ্ব ব্যাংক থেকে ৭ লাখ টাকার বরাদ্দে বিভিন্নভাবে সংস্কার করা হয়। কিন্তু দুই বছর আগে থেকে আবারও পিলারে ফাটল দেখা দেয়।
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি এব্যাপারে জেলা শিক্ষা অফিসকে জানিয়েছেন। কর্তৃপক্ষের নিকট দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হাসান মুরাদ চৌধুরী বলেন, ইতোমধ্যে নতুন ভবনের জন্য আবেদন করা হয়েছে। তবে একবছর মধ্যে কোনো নতুন ভবন হবে না। আগামী দুই দিনের মধ্যে অপসারণ করে অস্থায়ীভাবে পাঠদানের ব্যবস্থা করা হবে।
Comments