
বর্ষার আগমনে ফরিদপুরের সালথায় খাল-বিল, নদী ও যেন নতুন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। আর এই মৌসুমেই সবচেয়ে বেশি চাহিদা বেড়ে যায় ঐতিহ্যবাহী কাঠের নৌকার। এ সুযোগকে কেন্দ্র করে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার মোন্তার মোড়, সাড়ুকদিয়া, নকুলহাটিসহ বিভিন্ন এলাকায় পুরোদমে চলছে নৌকা তৈরির ব্যস্ততা।
নকুলহাটি বাজার এলাকার একটি নৌকা তৈরির কারখানায় গিয়ে দেখা গেছে, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন দক্ষ কারিগররা। সযত্নে কাঠ কেটে, রাঙিয়ে ও জোড়া লাগিয়ে একেকটি নৌকা তৈরি করছেন তারা। কারখানার পাশে সারি সারি নতুন নৌকা সাজানো, যেন এক শিল্পের প্রদর্শনী।
একজন অভিজ্ঞ কারিগর বলেন, বর্ষা আসলে আমাদের সময় কাটে নৌকা বানিয়ে। কৃষক, জেলে, এমনকি যাত্রী পরিবহনের জন্য প্রচুর অর্ডার পাই। বছরের এই সময়টা আমাদের জন্য রোজগারের প্রধান সুযোগ।
নৌকার দাম নির্ধারণ করা হয় তার আকার ও কাঠের মান অনুযায়ী। সাধারণত ৬০০০টাকা থেকে শুরু করে ১৫,০০০ টাকায় পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে নানা আকৃতির ও কাজের কাঠের নৌকা।
স্থানীয়দের মতে, আধুনিক যুগে প্লাস্টিক বা টিনের নৌকা থাকলেও কাঠের নৌকা এখনও অপ্রতিদ্বন্দ্বী। জলাবদ্ধ বা বিলাঞ্চলে চলাচলের জন্য কাঠের নৌকা বেশি টেকসই ও ভারসাম্যপূর্ণ হওয়ায় এর ওপর মানুষের আস্থা এখনও অটুট।
এই শিল্প শুধু একটি পণ্য নয়, বরং এটি বহু পরিবারে জীবিকা নির্বাহের প্রধান অবলম্বন। বর্ষা মৌসুমে কাঠের নৌকা বিক্রি করে অনেক কারিগরই বছরের বড় অংশের আয় নিশ্চিত করে থাকেন।
Comments