Image description

বোরো ধান বীজের দাম কম নির্ধারণ হওয়ায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) চুক্তিবদ্ধ কৃষকরা বীজ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে মুখ থুবড়ে পড়েছে বীজ সংগ্রহ কার্যক্রম এবং দেশের বিভিন্ন জেলার কৃষকদের ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। গত ১০ দিন ধরে চুয়াডাঙ্গায় বিএডিসির তিনটি অফিস এলাকায় শুনশান নিরবতা বিরাজ করছে এবং অফিসগুলো তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। প্রায় শতাধিক শ্রমিক বেকার বসে আছেন।

বীজ সরবরাহকারী কৃষকদের অভিযোগ, বীজ সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ কমিটি বোরো ধান বীজের দাম জাতভেদে প্রতি কেজি ৪৮-৪৯ টাকা নির্ধারণ করেছে, যা তাদের উৎপাদন খরচের (প্রতি কেজি ৫৩ টাকা) চেয়ে ৫-৬ টাকা কম। ফলে প্রতি কেজিতে তাদের লোকসান গুনতে হবে। কৃষক আলগীর জানান, ব্যাংক লোন নিয়ে চাষাবাদ করে এই দামে বীজ সরবরাহ করলে তাদের উৎপাদন খরচও উঠবে না। তিনি দাবি করেন, প্রতি কেজিতে দাম ৩-৪ টাকা বৃদ্ধি না পেলে তারা বীজ সরবরাহ করবেন না।

চলতি মৌসুমে চুয়াডাঙ্গায় বিএডিসি মোট ৭৬৮০ মেট্রিক টন বোরো ধান বীজ সংগ্রহ করবে। এর মধ্যে কন্ট্রাক্ট গ্রোয়ার্স ৩৬০৫ মেট্রিক টন, অধিক বীজ ২৪৯৫ মেট্রিক টন এবং বীজের আপদকালীন মজুদ ১৫৮০ মেট্রিক টন সংগ্রহ করবে। দাম নির্ধারণের আগে কিছু বীজ সরবরাহ হলেও, মূল্য জানার পর কৃষকরা সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছেন। ন্যায্যমূল্য না পাওয়া পর্যন্ত তারা বীজ সরবরাহ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে অটল।

বীজ সরবরাহ বন্ধ থাকায় তিনটি অফিসে কর্মরত শতাধিক শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। শ্রমিক আলতাফ, সুমন, মিলন ও রবিউল জানান, কাজ বন্ধ থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে তারা অসহায় অবস্থায় রয়েছেন এবং সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। তারা দ্রুত সমস্যার সমাধান দাবি করেছেন।

চুয়াডাঙ্গা বীজ প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রের যুগ্ম পরিচালক এ এফ এম শফিকুল ইসলাম জানান, দাম নির্ধারণের পর থেকে কৃষকরা ধান সরবরাহ বন্ধ রেখেছেন। তিনি বলেন, এ বিষয়ে তাদের কোনো হাত নেই, তবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে এবং পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। 

কৃষকদের দাবি, কর্তৃপক্ষ লিখিতভাবে জানালে তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন এবং বীজ সরবরাহ কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।